শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
জীবনবোধ ও জীবনদর্শন
জুলফিকার নিউটন
প্রকাশ: বুধবার, ৩ এপ্রিল, ২০২৪, ১:১৯ এএম |


 জীবনবোধ ও জীবনদর্শন
৯১
মহাকবি হতে গেলে মহাকাব্য রচনা করতে হবে এমন কোন নিয়ম নেই। মধুসূদন (২৫ জানুয়ারি ১৮২৪ - ২৯ জুন ১৮৭৩) যদি মেঘনাদবধ রচনা না করে শুধু সনেট ক’টি লিখে যেতেন তাহলেও তিনি আমাদের প্রথম শ্রেণীর কবি বলে গণ্য হতেন। মহাকাব্যের চল এ যুগে উঠে গিয়েছে। এ যুগের কোন মহাকবিই মহাকাব্য রচনা করেননি শেকসপীয়ার না, গ্যোয়টে না, রবীন্দ্রনাথ না। মধুসুদনের ক্বতিত্ব এই যে তিনি মহাকাব্য রচনা করেও মহাকবি বলে পরিচিত হতে পেরেছেন। কাজেই মধুসূদনকে জানতে হলে, বুঝতে হলে মহাকাব্যের রচয়িতা হিসেবেই তাঁকে জানতে হবে।
অভিধানমতে কোন পৌরাণিক বা ঐতিহাসিক কাহিনী অবলম্বনে রচিত সুবৃহৎ কাব্যকেই বলে মহাকাব্য। সাধারণত মহাকাব্য বলতেই আমরা মনে করি সেটি একটি মহাকার কাব্য। আসলে কিন্তু কায়া দিয়ে এর বিচার নয়। মহাকাব্য কেবলমাত্র বৃহৎ কাব্য নয়, মহৎ কাব্য। আবার সে কাব্যই মহৎ যার জগত্টা বৃহৎ। অবশ্য কালে কালে সব জিনিসেরই আক্বতি প্রকৃতি বদলে যায়। মহাকাব্য সম্বন্ধেও প্রচলিত ধারণা ক্রমে বদলে যাচ্ছে। প্রাচীন কালের সব অতিকার জীব যেমন ধরাপৃষ্ঠ থেকে বিলুপ্ত হয়েছে সাহিত্যসংসার থেকেও বৃহদাকার মহাকাব্য তেমনি অন্তর্ধান করছে। তাছাড়া সব সময়েই যে পুরাণবর্ণিত কিংবা ইতিহাস ঘটিত কোন কাহিনীকে আশ্রয় করেই মহাকাব্য রচনা করতে হবে এমনও নয়। এই ধরুণ, টি.এস. এলিয়ট যে ডধংঃব খধহফ নামক কাব্য রচনা করেছেন সেটি অতিশয় সংক্ষিপ্তÍসব মিলিয়ে পাচশো লাইনও নয় তাহলেও তাকে এ যুগের মহাকাব্য বলা যেতে পারে। পৌরাণিক এবং ঐতিহাসিক বহু ঘটনার ইঙ্গিত থাকলেও কোন বিশেষ ঘটনাকে অবলম্বন করে এ কাব্য রচিত নয়। তথাপি একে মহাকাব্য বলছি এই কারণে যে, এর মধ্যে মহাকাব্যের ব্যাপকতা আছে, এ যুগের সমগ্র জীবনের পরিপ্রেক্ষিতে এ কাব্য রচিত। মহাকব্যের অন্যান্যগুণ ভাবগাম্ভীর্য, ভাববিন্যাসের সৌকর্য এবং অনন্যসাধারণ কলাকৌশল- এ সমস্ত গুণই তাতে বিদ্যমান। সর্বোপরি একটি সুবিন্যস্ত জীবন দর্শনেরও ইঙ্গিত আছে। রবীন্দ্রনাথও আভিধানিক অর্থে মহাকাব্য রচনা করেননি। কিন্তু তিনি যে অসংখ্য গীতিধর্মী কবিতা রচনা করেছেন তাদের সম্মিলিত মূর্তি ব্যাপকতায় গভীরতায় ব্যঞ্জনায় সুষমায় যে কোন মহাকাব্যের সঙ্গে তুলনীয়। মধুসূদনের দৃষ্টান্তে অনুপ্রাণিত হয়ে তাঁর পরবর্তী বাঙালি কবিরা অনেকেই মহাকাব্যে হাত মক্স করেছিলেন। কবি-জীবনের প্রারম্ভে রবীন্দ্রনাথের মনেও বোধকরি মহাকাব্য রচনার একটা অস্ফুট আকাঙ্ক্ষা লুক্কায়িত ছিল। ঐ যে পরিহাসের সুরে বলেছিলেন “আমি নামব মহাকাব্য সংরচনে ছিল মনে” সেটা একেবারে উড়িয়ে দেবার কথা নয়। বিশেষ করে শেষটায় যে কথাটি বলেছেন তাতে আমার পূর্বোক্ত বক্তব্যটির সমর্থন আছে। গীতিকাব্যের অধিষ্ঠাত্রী দেবী তাঁকে এমনভাবে সম্মোহিত করেছিলেন যে মহাকাব্যের কল্পনাটি “গেল ফাটি হাজার গীতে”। বলেছেন, “মহাকাব্য যে অভাব্য দুর্ঘটনায় পায়ের কাছে ছড়িয়ে আছে কণায় কণায়”। অর্থাৎ বলতে চেয়েছেন যে, নেই কণাগুলোকে একত্রে মিলিয়ে দেখতে পারলে তার মধ্যেই কল্পিত মহাকাব্যটিকে খুঁজে পাওয়া যাবে। কারণ জীবনের একটি সমগ্র চিত্র “এর মধ্যে ধরা পড়েছে। এসব কথা বলার উদ্দেশ্য এই যে, আধুনিক পাঠকের কাছে মহাকাব্য তার পূর্বতন সংজ্ঞা এবং অঙ্গসজ্জা ঘুচিয়ে দিয়ে ক্রমে ভিন্ন মূর্তি ধারণ করেছে।
মধুসূদন অবশ্য পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বন করে প্রচলিত রীতি অনুসরণ করেই তাঁর মহাকাব্য রচনা করেছেন। হোমার, ভার্জিল, দান্তে, মিলটন তার গুরু। তাঁদের প্রদর্শিত পথেই তিনি চলেছেন। কিন্তু প্রকৃত কবি এবং শিল্পীর “এই বিশেষত্ব যে, তাঁরা প্রচলিত রীতি অনুসরণ করলেও কখনোও গতানুগতিক পথে চলেন না। তাঁদের সৃষ্টি আপন বৈশিষ্ট্যের গুণে বিশিষ্ট, আপন প্রতিভার ছাপ তাতে পড়বেই। মধুসূদন তাঁর কাহিনীটি কবিগুরু বাল্মীকির কাছ থেকে ধার করেছেন। কিন্তু সে জিনিসকে তিনি যেভাবে উপস্থাপিত করলেন তাতে শুধু যে তার রূপান্তর ঘটেছে এমন নয়, গোত্রান্তর ঘটেছে বলতে হবে; কারণ সে কাহিনীর মূল আবেদনটিকেই তিনি বদলে দিয়েছিলেন। প্রতিভার স্পর্শে পুরাতনও নতুন হয়ে যায়। শেকসপীয়ারের বেলায়ও এই জিনিসটি দেখা গিয়েছে। তাঁর নাটকের মাল-মসলা তিনি সেকালের বহুল প্রচলিত কতকগুলো কাহিনী থেকেই সংগ্রহ করেছিলেন; কিন্তু তাঁর হাতে পড়ে যে সব ভূতপূর্ব কাহিনী এমন অভূতপূর্ব রূপ ধারণ করল যে, তাদের আর চেনাই যায় না। মধুসূদনও তাই করেছেন। পুরাতন কাহিনীটিকে ঘষে মেজে শুধু যে তার রূপ পরিবর্তন করেছেন এমন নয়, আগেই বলেছি, তিনি তার স্বরূপও বদলে দিয়েছিলেন। বাল্মীকির রাম-রাবণ আর মধুসূদনের রাম-রাবণ এক নয়। রঘুপতি রাজা রাম মধুসূদনের চোখে ভিখারী রাঘব। রাবণই তাঁর কাছে ‘হিরো’র আসন লাভ করেছেন। বাল্মীকি রচনা করেছেন রামায়ণ, মধুসূদন রচনা করেছেন রাবণায়ণ।
ভারতীয় ঐতিহ্যের বিরোধী বলে সে যুগে কিছু বাদানুবাদের সৃষ্টি হয়েছিল, এখন লোকে তা ভুলেই গিয়েছে। কারণ কাব্যবিচারে লৌকিক ভক্তি বিশ্বাসের ঐতিহ্যটা বড় কথা নয়, কাব্যের নিজস্ব একটা ঐতিহ্য আছে, সেটা শিল্পবোধের ঐতিহ্য। কবি যে আবেদনের সৃষ্টি করেন পাঠকের মন যদি তা স্পর্শ করে তাহলেই তার সৃষ্টি সার্থক। রঘুকুলপতির চাইতে তিনি যে রক্ষকুলপতির অধিকতর সহানুভূতি প্রকাশ করেছেন, যে অনুভূতি পাঠকের মনে সঞ্চারিত হয়ে থাকলে বোঝা যাবে যে, শিল্পের আবেদন ঐতিহ্যের আবেদনের চাইতে বড়। মিলটনও তাঁর ঝধঃধহ-কে যথেষ্ট তেজবীর্যের অধিকারী হিসেবে দেখিয়েছেন, নানা গুণে গুণান্বিত করে দেখিয়েছেন। তাই যদি না হত তাহলে সর্বশক্তিমান বিধাতা-পুরুষের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তিনি অযোগ্য বিবেচিত হতেন। সেদিক থেকে বাইবেলের ঝধঃধহ আর মিলটনের ঝধঃধহ এক নয়। কবি মানুষেরা নীতিবাগীশ নন, তাঁদের কাছে নীতির চাইতে শিল্পের দাবী বড়।
প্রতিভা জিনিসটা কখনই নিয়মতান্ত্রিক নয়। সে নিয়মমতে চলে না, সমান পথেও চলে না। বেড়া ভেঙে, আল ভেঙে, দুর্গম পথে আপন খুশি মতো এগিয়ে চলে। মধুসূদনের প্রতিভা সেই বাঁধভাঙা বাঁধন-ছেঁড়া দুঃসাধ্য সাধনের প্রতিভা। বিষয়বস্তুর বেলায় যেমন পুরাতনকে নতুন আকার দিয়েছেন, প্রকাশভঙ্গিতেও তেমনি অভিনবত্ব দেখিয়েছেন। এ যাবৎ বাংলা পথের গতি ছিল আড়ষ্ট, পয়ারের ছন্দে চলি চলি পা করে চলত ; প্রতি দু'পা এগিয়ে দম নিতে হত। পাখি যদি তার পাখার ব্যবহার না করে শুধু দু'পায়ের সাহায্যে চলে তখন তার গতি যেমনটা হয় তেমনি। যেটা তার স্বাভাবিক গতি নয়। প্রতি পদে যদি বিরতি ঘটে তাহলে গতির ধর্ম ব্যাহত হতে বাধ্য। মধুসূদন বাংলা কাব্যের পায়ের বাঁধন খুলে দিয়ে তাকে অবিরাম গতির স্বাচ্ছন্দ্য দিলেন। আমাদের ভাষায় ছন্দোবদ্ধ বাক্যকে বলে পদ। এজন্য কবিতাকে আমরা সাধারণ কথায় বলেছি পদ্য, আর যিনি সে পদ রচনা করেন তাঁকে বলেছি পদকর্তা। ফলে কবি এবং কাব্য উভয়কেই আমরা একটু ছোট করে দেখেছি। মিল দেওয়া পদ্য হলেই কাব্য হয় না, আর পদ্য রচয়িতা হলেই কবি হয় না। কারণ কবি শুধু অক্ষরের মিল খোঁজেন না। ভাষার একটা নিজস্ব সবষড়ফু আছে, তিনি সেই সবষড়ফু-কে আবিষ্কার করেন। প্রতি দুই পঙক্তিতে মিল না রেখে ভাষার সুর তাল বা মেলডি রক্ষা করে যথাযোগ্য স্থানে যতির ব্যবহার করেন। আমাদের কাব্যে মধুসূদনই সর্বপ্রথম এই কাজ করলেন। তিনি যাকে অমিত্রাক্ষর ছন্দ বলেছেন, সেটি প্রকৃতপক্ষে অক্ষরের মিত্রতা বা মিল বর্জন করে ভাষার মিত্রতা অর্জন। ভাষার অন্তর্নিহিত সুর এবং ছন্দকে জাগ্রত করে দিয়ে তিনি বাংলা ভাষার যথার্থ কাব্যিক চরিত্রটিকে উদ্ঘাটিত করে দিয়েছেন।
“সম্মুখ-সমরে পড়ি, বীর চূড়ামণি
বীরবাহু, চলি যবে গেলা যমপুরে
অকালে,
রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছেন মেঘনাদবধ-এর সেই হঠাৎ থমকে যাওয়া লাইনটা। শুধু লাইনটাই তো থমকে যাওয়া নয়, সমস্ত বাংলা দেশই বিস্ময়ে থমকে দাঁড়িয়েছিল এই ভেবে যে আমাদের এতকালের পরিচিত ভাষার মধ্যে এমন সুর তাল মাত্রা লুক্কায়িত ছিল! এ ছাড়া সাধারণত দেখা যায় মহাকাব্যের বিষয়বস্তুটি একটু গুরুগম্ভীর রকমের। তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ভাষার মধ্যেও সেই গাম্ভীর্যটি আনতে হয়। ভাবলে খুব অবাক লাগে যে আমাদের ভাষার অপেক্ষাক্বত অপরিণত অবস্থায়ও মধুসূদন ঐ সামঞ্জস্যটি রক্ষা করতে পেরেছিলেন। আমি যাকে সাধারণ কথায় ভাষার গাম্ভীর্য্য বলছি কাব্যা- লোচনায় একে বলা উচিত ভাষার সমারোহ, ইংরেজীতে যাকে বলে মৎধহফবঁৎ। এতখানি মৎধহফবঁৎ যে আমাদের ভাষার সাধ্যায়ত্ত ছিল মধুসূদনই সর্বপ্রথম সে বিষয় আমাদিগকে অবহিত করলেন।
সাধারণ পাঠকের কাছে মধুসূদন মহাকাব্য রচয়িতা হিসেবে পরিচিত, যদিও খাঁটি মহাকাব্য বলতে তিনি একখানাই রচনা করেছেন সেটি মেঘনাদ বধ কাব্য। তাঁর প্রথম কাব্য তিলোত্তমা সম্ভব-কে তিনি নিজে মহাকাব্য আখ্যা দেননি, বলেছেন ‘মহাকাব্য জাতীয় কাব্য'। এর কারণ কাব্যশাস্ত্র মতে মহাকাব্যে কমপক্ষে আটটি সর্গ থাকা প্রয়োজন। তিলোত্তমাসম্ভব কাব্যটি চার সর্গে সমাপ্ত অর্থাৎ আকারে-প্রকারে এটিকে পুরোপুরি মহাকাব্য বলা চলে না।
এটি সুন্দ-উপসুন্দর কাহিনী অবলম্বনে রচিত। এই দুই অসুর ভ্রাতার বলে- বীর্যে দেবতারা ভীত, সন্ত্রস্ত। অনন্যোপায় হয়ে প্রজাপতি ব্রহ্মার দ্বারস্থ হলেন। ব্রহ্মা বিশ্বের সর্ববিধ সৌন্দর্য তিল তিল করে তুলে নিয়ে তিলোত্তমা নামে এক অপরূপা অপ্সরার সৃষ্টি করে অসুরদের রাজ্যে প্রেরণ করলেন। তিলোত্তমার রূপে মুগ্ধ হয়ে সুন্দ-উপসুন্দ উভয়ে তাঁকে পাবার জন্য লালায়িত হল। ফলে দুই ভ্রাতায় বিবাদ বিসম্বাদ যুদ্ধ। দ্বন্দ্বযুদ্ধে উভয়ের মৃত্যু। দেবতারা বিপদমুক্ত হলেন, তিলোত্তমা নক্ষত্রের রূপ ধারণ করে নভোম-লে স্থান গ্রহণ করলেন। মেঘনাদ বধ কাব্যের বিষয়বস্তু সকলেরই জানা আছে। নয় সর্গে সমাপ্ত এই এই কাব্য আকারে প্রকারে সৌষ্ঠবে বিষয়গৌরবে মহাকাব্যের সকল দাবীই পূরণ করেছে। বর্ণন চিত্রণে বাচনভঙ্গিতে বহু স্থানে হোমার ভার্জিলের অনুকরণ সুস্পষ্ট ; কিন্তু প্রতিভাগুণে সমস্তই নিজস্ব করে নিয়েছেন। কোথাও অসঙ্গতি নেই।
এখানে একটা কথা বিশেষভাবে বলা প্রয়োজন। রেনেসাঁসের প্রবল উদ্দীপনা ইংল্যা-ের জীবনে যে নাটকীয় সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছিল তার থেকে এলিজাবেথীয় নাটকের সৃষ্টি হয়েছিল। মধুসূদনের যুগে পাশ্চাত্যশিক্ষার সংঘাতেও বাংলাদেশেও এক নবজীবনের জোয়ার এসেছিল। তাকেও আমরা রেনেসাঁস আখ্যা দিয়েছি। নানা দিক থেকে বাঙালি জীবনেও এক নাটকীয় সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিল। সেদিনের সেই উদ্দীপনায় নতুন এক নাট্যসাহিত্য সৃষ্টিই স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ইংল্যা-ের শতাধিক বৎসর পূর্ব থেকেই নাটকের একটি ঃৎধফরঃরড়হ ধীরে ধীরে গড়ে উঠেছিল। আমাদের সে ঃৎধফরঃরড়হ ছিল না। মাতৃকোষে বিবিধ রতনের মধ্যে নাটক ছিল না। তথাপি লক্ষ্য করবার বিষয় যে, মাতৃভাষার সেবায় মধুসূদন সর্বপ্রথম নাটকেই হাত দিয়েছিলেন। কিন্তু বুঝতে পেরেছিলেন যে, আমাদের সদ্যোজাত নাটকের ক্ষেত্রে কোনো মহৎ কীর্তি রেখে যাওয়া খুব সহজসাধ্য হবে না। কাব্যের ক্ষেত্রে আমরা কতকটা পথ তবু এগিয়ে ছিলাম। সেখানে শক্তি পরীক্ষার এক নতুন পথে নতুনতর অভিযানের অবকাশ বেশি। প্রতিভাবানের প্রতিভাই তাকে বাঞ্ছিত পথে নিয়ে যায়। আরেকটি কথা মহাকাব্য যিনি রচনা করবেন তাঁর জীবনের মধ্যেই মহাকাব্যের উপকরণ সঞ্চিত থাকে। দান্তে মিলটনের জীবনে যেমন মধুসূদনের বেলায়ও তেমনি মহাকাব্যের উপকরণ তাঁর জীবনের মধ্যে নিহিত ছিল। মানুষের জীবনে যা কাম্য-কুলশীল, ধনমান, বিদ্যাবুদ্ধি, প্রতিভা কোন কিছুরই তার অভাব ছিল না। তথাপি জীবনের বহু আশা আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণ থেকেছে- দুঃখ দৈন্য নিরাশায় জীবন বিধ্বস্ত হয়েছে। রক্ষকুলপতির স্বর্ণলঙ্কা যেমন ধ্বংস হয়েছে এও তেমনি। প্রতিভার উন্মাদনায়, ঐশ্বর্যের স্বপ্নে লঙ্কাধিপতির মতোই তিনিও গর্বিত উদ্ধত দৃপ্তস্বভাব। দুই-এর মননে বচনে স্বভাবে আশ্চর্য মিল। পরিণতিও এক। কাব্যের উপসংহারে রাবণের বিলাপ- কি পাপে লিখিলা এ পীড়া দারুণ বিধি রাবণের ভালে ? আর জীবনের অন্তপর্বে মধুসূদনের নিজ বিলাপ-‘আশার ছলনে ভুলি কি ফল লভিনু হায় ! ' একই ভগ্ন হৃদয়ের হতাশ্বাস। এইজন্মই বলতে চেয়েছি যে মহাকবির জীবনই একটি মহাকাব্য। ঝধসংড়হ অমড়হরংঃবং যেমন মিলটনের জীবননাট্য, মেঘনাদ বধ তেমনি মধুসূদনের জীবনকাব্য।














সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
অফিসে হামলার সময় চেয়ে চেয়ে দেখলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আন্দালিভ রহমান পার্থ ৫ দিনের রিমান্ডে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft