নিজস্ব
প্রতিবেদক: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার আসনের সাবেক
সংসদ সদস্য রাজী মোহাম্মদ ফখরুল ‘ভোটে হারেননি’ বলে মন্তব্য করেছেন
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী মাস্টার। তিনি
বলেছেন, ‘ভোটে কিন্তু আমরা হারি নাই, যে কোনো কারণে রেজাল্ট আনতে পারিনি।’
শনিবার
(৩০ মার্চ) বিকালে রোশন আলী মাস্টার তার দেবিদ্বার পৌর এলাকার নিজ বাসভবনে
একটি ইফতার মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় দেবিদ্বার আসনের সদ্য সাবেক
সংসদ সদস্য দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী রাজী মোহাম্মদ ফখরুল তার
পাশে বসা ছিলেন। রাজী ফখরুলের হেরে যাওয়াকে উদ্দেশ্য করে উত্তর জেলা আওয়ামী
লীগের শীর্ষ এ নেতার এমন মন্তব্য নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে বলে
মনে করছেন দলটির নেতা-কর্মীরা।
রাজী ফখরুল দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে
কুমিল্লা-৪ দেবিদ্বার আসনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে
প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য
নির্বাচিত হন কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল
কালাম আজাদ।
শনিবারের ইফতার অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি রাজী মোহাম্মদ ফখরুলকে
দেখিয়ে রোশন আলী মাষ্টার বলেন, ভোটে আমরা কিন্তু হারিনি, যেকোন কারণে আমরা
রেজাল্ট নিতে পারেনি। ৮২ হাজার ভোট কি কম ? এগুলোর অনেক ইতিহাস, এগুলো
আপনারা বুঝবেন না, আপনাদের ভাইঙা বুঝাইতে অইব। যাদেরকে আমি নেতা বানাইছি
তারা আমারে এখন *** দিয়াও গনে না। আমাদের দলে অনেক মীর জাফর আছে, এগুলো যুগ
যুগ ছিল থাকবে, তারা যদি ভালো হয়ে যায় আমরাও ভালো হইয়া যাইবো, আর হজ্ব
থেকে এসে যদি দেখি ভালো হয় নাই তাহলে মাঠে নাইম্যা পড়ব।
তাঁর এ
বক্তব্যের পর দেবিদ্বারে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তাৎক্ষনিক ক্ষুব্ধ
প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগের তৃণমূল
নেতা-কর্মীরা। প্রতিক্রিয়ায় তাঁরা বলেছেন, যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোট করে সারা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন
সেখানে তাঁর ওই বক্তব্য সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। তার ওই
বক্তব্যে বর্তমান সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ ভোট কারচুপির মাধ্যমে
নির্বাচিত হয়েছেন এটা তিনি প্রমাণ করতে চেয়েছেন।
কুমিল্লা উত্তর জেলা
আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শেখ আবদুল আউয়াল বলেন, জেলার একজন দায়িত্বশীল নেতা
নির্বাচন নিয়ে এমন মন্তব্য করতে পারেনা। সে আসলে পলিটিক্যাল লোক না। আমরা
তো তাকে জেলার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মেনে নিছি- সে কথাবার্তা ঠিক করে বলবে
না?
দেবিদ্বার উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি লুৎফুর রহমান বাবুল ও
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবীর বলেন, এর আগে দ্বাদশ জাতীয়
নির্বাচনের বিভিন্ন সভায় তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী ও তাঁর নেতাকর্মীদের
গালিগালাজ করেও বক্তব্য রেখে বিতর্কিত হয়েছেন, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে
সবাই দেখেছেন। আসলে তিনি মাইক হাতে পেলে কি বক্তব্যে দিবেন হিতাহিত জ্ঞান
হারাই ফেলেন! তার এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বক্তব্য
জানতে চাইলে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রোশন আলী
মাস্টার জানতে চাইলে রোশন আলী বলেন, আমি বক্তব্য রেখেছি। সেটা ভাইরাল হলো
কি না, জানি না। আমি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের বলেছি, গত নির্বাচনে নৌকা
৮২ হাজার ভোট পাইছে, এটা কম না।