ঈদুল
ফিতরের ছুটি একদিন বাড়ানোর সুপারিশ করবে সরকারের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত
মন্ত্রিসভা কমিটি। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে এই সুপারিশ পাঠানো হবে বলে
জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা
কমিটির সভাপতি আ ক ম মোজাম্মেল হক।
রবিবার (৩১ মার্চ) স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা
কমিটির সভা শেষে তিনি এসব কথা জানান। মন্ত্রী বলেন, আগামী ৯ এপ্রিল ছুটি
রাখার বিষয়ে সুপারিশ করা হবে।
এবার যদি রোজা ২৯টি হয় তাহলে ৯ তারিখ থেকে
শুরু হবে ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি। তবে কেউ যদি দুই দিন বাড়তি ছুটি নেন
তাহলে তার ঈদের ছুটি শুরু হবে ৫ এপ্রিল থেকে। কারণ সরকারি ক্যালেন্ডারের
হিসাব অনুসারে ৫ ও ৬ এপ্রিল শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। ৭ এপ্রিল
পবিত্র শবে কদরের সরকারি ছুটি। ৮ ও ৯ এপ্রিল সরকারি অফিস, আদালত, ব্যাংক,
বিমা খোলা থাকবে।
ক্যালেন্ডার মোতাবেক ১০, ১১ ও ১২ এপ্রিল বুধ, বৃহস্পতি
ও শুক্রবার পর্যন্ত পবিত্র ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি। আবার ১৩ এপ্রিল
শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি এবং ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখের ছুটি। তাই মাঝখানে
মাত্র দুই দিনের ছুটি নিলেই একসঙ্গে ১০ দিন ছুটি কাটাতে পারবেন কর্মচারীরা।
সচিবালয়ে
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মচারীদের সঙ্গে
কথা বলে জানা গেছে, এই সুযোগ কাজে লাগাতে অনেকেই দুই দিনের ছুটির আবেদনের
প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
ঈদের ছুটি ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় আরও বেশ কয়েকটি বিষয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
উপজেলা
নির্বাচন প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, এবারের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশে-বিদেশে সর্বত্র গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত
হয়েছে। নির্বাচন বর্জনকারীরা এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করলেও তারা
ব্যর্থ হয়েছে। আসন্ন উপজেলা নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু হয় এবং কোনও প্রকার
প্রভাব বিস্তার যাতে কেউ করতে না পারে সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে
নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে তারা কাজ করে যাবে।
মন্ত্রী
বলেন, সাইবার অপরাধ বা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব রটনাকারীদের বিরুদ্ধে
সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। এজন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম
কর্তৃপক্ষগুলোকে অনুরোধ জানানো হবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে। তারা যদি এ
ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ না নেয়, সরকার পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।
ধারাবাহিক
অগ্নিকা-ের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে মন্ত্রী মোজাম্মেল হক বলেন, ভবন
নির্মাণে যারা কোড মানছে না, তারা যাতে নির্মাণ কোড মেনে কাজ করেন সেজন্য
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলা হবে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দিন দিন অপরাধের
মাত্রা বেড়ে যাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা যাতে নিজ দেশে
শান্তিপূর্ণভাবে ফিরে যেতে পারেন সেজন্য কূটনৈতিক প্রচেষ্টা জোরদার করা
হবে।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলাচল বেড়ে যায় জানিয়ে মন্ত্রী
বলেন, সাধারণত এসব গাড়ি শ্রমিকরা ভাড়া করে দেশে যান। এতে পথে যানজট সৃষ্টি
হয়। তারা যাতে এসব ফিটনেসবিহীন বাস ভাড়া না করেন সেজন্য তাদের কর্তৃপক্ষকে
বলা হয়েছে। একই সঙ্গে শ্রমিকদের বেতন বোনাস যথাসময়ে পরিশোধের আহ্বান জানান
মন্ত্রী। তিনি বলেন, এসব নিয়ে যাতে কোনও অসন্তোষ সৃষ্টি না হয় সেজন্য
সরকার সতর্ক রয়েছে।