ঢাকা-চট্টগ্রাম
মহাসড়কের কুমিল্লা অংশে প্রতিবছর ঈদে ঘরমুখো মানুষকে যানজটের কবলে পড়তে
হয়। সড়কে যানবাহনের চাপ, যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা ও গাড়ি পার্কিংয়ের ফলে এ
ভোগান্তি বাড়ে। তবে এবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে মহাসড়কের কুমিল্লার অংশ
থেকে চট্টগ্রাম পর্যন্ত যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে হাইওয়ে পুলিশের ব্যাপক
প্রস্তুতি রয়েছে। চিহ্নিত করা হয়েছে যানজটপ্রবণ ২৬টি স্থান।
সূত্র মতে,
মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজা, গৌরীপুর বাজার, বুড়িচংয়ে নিমসার
বাজার, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড, ক্যান্টনমেন্ট মোড় ও চৌদ্দগ্রাম বাজার
এলাকায় যানজট প্রায় লেগে থাকে। তাছাড়া এ সড়কে দুর্ঘটনায় শিকার গাড়ি সরাতে
দেরি হলে দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হতে থাকে যানজট। এতে নারী-শিশুসহ বিভিন্ন
পরিবহনের যাত্রী ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সকে পড়তে হয় বিপাকে।
এছাড়াও ঈদ
উপলক্ষে দাউদকান্দি টোলপ্লাজা থেকে কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার আলেখারচর
বিশ্বরোড পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে ডাকাতের কবলে পড়ে সর্বস্ব খোয়ান যাত্রীরা।
হাইওয়ে
পুলিশ সূত্র জানায়, এবার ঈদে বিড়ম্বনা কমাতে মহাসড়কের কুমিল্লা থেকে
চট্টগ্রাম পর্যন্ত কম এবং অধিক গুরুত্বপূর্ণ ২৬টি স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে।
এরমধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ১২টি স্থান হলো, মহাসড়কের বলদাখাল
বাসস্ট্যান্ড, গৌরীপুর বাসস্ট্যান্ড, চান্দিনা বাসস্ট্যান্ড, নিমসার বাজার ও
ইউটার্ন, ক্যান্টনমেন্ট মোড় (উভয়মুখী), আলেখারচর বিশ্বরোড, বিসিক মোড়,
চৌদ্দগ্রাম বাজার, লালপোল, ভাটিয়ারি পয়েন্ট, ফৌজদারহাট ইউটার্ন, সীতাকু-
বাসস্ট্যান্ড, বড় দারোগারহাট স্কেল। এসব স্থানে অতিরিক্ত টহল ও বাড়তি
নজরদারি রাখা হবে।
কম গুরুত্বপূর্ণ ১৪টি স্থানের মধ্যে রয়েছে, শহীদনগর
বাসস্ট্যান্ড, আমিরাবাদ বাসস্ট্যান্ড, ইলিয়টগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড, মাধাইয়া
বাসস্ট্যান্ড, কোটবাড়ি ইউটার্ন, জাগুরঝুলি কাটা, নুরজাহান হোটেলের সামনের
ইউটার্ন, সদর দক্ষিণ থানার সামনের ইউটার্ন, সুয়াগাজী বাজার (উভয়মুখী),
নাজিরা বাজার ইউটার্ন, বারবকুন্ড বাজার, ছোট কুমিরা, কেডিএস মোড়, ফুটলিং
এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে।
এছাড়াও মহাসড়কে দুর্ঘটনা ঘটলে দ্রুত যান চলাচল
স্বাভাবিক করতে অ্যাম্বুলেন্সের পাশাপাশি প্রস্তুত রয়েছে বিশেষ কুইক
রেসপন্স টিম গঠন করা হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সড়কে কাজ করবে
কমিউনিটি পুলিশ। কুমিল্লা রিজিয়নে হাইওয়ে সেক্টর থাকবে দুটি ও সাব সেক্টর
২১টি, মোবাইল ডিউটি থাকবে ৩৪টি, পিকেট ডিউটি ১৫টি, কুইক রেসপন্স টিম
মোটরসাইকেলযোগে থাকবে ১৫টি, পিকআপ যোগে ১৫টি, স্ট্রাইকিং রিজার্ভ একটি,
রেকার ডিউটি সরকারি পাঁচটি ও বেসরকারি ছয়টিসহ ১১টি, অ্যাম্বুলেন্স ডিউটি
দুটি, কন্ট্রোলরুম একটি, অস্থায়ী কন্ট্রোলরুম বা ওয়াচ টাওয়ার থাকবে ৩৫টি।
কুমিল্লা
রিজিয়ন হাইওয়ে পুলিশ সুপার মো. খাইরুল আলম বলেন, যাত্রীদের বিড়ম্বনা কমাতে
এবার হাইওয়ে পুলিশ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। ইতোমধ্যে পরিবহন মালিক ও
শ্রমিকদের সঙ্গে মিটিং হয়েছে। যেখানে সেখানে যাত্রী ওঠানামার বিষয়ে কঠোর
হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও সড়ক ও জনপদ বিভাগকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
মহাসড়কের যে সব এলাকায় বাজার ও বাসস্ট্যান্ড রয়েছে সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ
মোতায়েন করা হয়েছে। নিষিদ্ধ তিন চাকার গাড়ি আটক হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা
নেওয়া হবে। এতে কোনো সুপারিশ নেওয়া হবে না।
সড়ক ও জনপদ অধিদফতর
কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীতি চাকমা বলেন, ঈদ পর্যন্ত মহাসড়কে উন্নয়ন
বা সংস্কার কাজ হবে না। এছাড়াও সড়কের কোথাও হঠাৎ কোনো সমস্যার সৃষ্টি হলে
সেটি সমাধানে দুটি টিম প্রস্তুত রয়েছে।