ভৈরবে ট্রলার ডুবিতে স্ত্রী ও ছেলে মেয়েসহ নিখোঁজ সোহেল রানার গ্রামের বাড়ি দেবিদ্বার
পরিবারে চলছে আহাজারি
শাহীন আলম,দেবিদ্বার
|
![]() শুক্রবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যা আনুমানিক ৬ টার দিকে মেঘনা নদীর রেলওয়ের দুই সেতুর সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিখোঁজ কনস্টেবল সোহেল রানা (৩২) বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার পূর্ব ফতেহাবাদ গ্রামের সাবেক সেনা সদস্য আবদুল আলিমের ছেলে। সোহেলা রানা ভৈরব হাইওয়ে থানায় পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি করতেন। তিনি ২০১১ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার (২৫) দুই সন্তান মাহমুদা সুলতানা ইভা (৪) ও রাইসুল ইসলাম (৩) ও নিখোঁজ রয়েছেন। শনিবার বেলা ১১ টার দিকে সোহেল রানার গ্রামের বাড়িতে গেলে দেখা যায় শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম। তার বাড়িতে শত শত লোকজন ভীর করছেন৷ তার বাবা মা সহ অন্যান্যরআত্মীয় স্বজন সবাই ভৈরবের ঘটনাস্থলে আছেন। সাবেক ইউপি সদস্য সাদেক মেম্বার বলেন, ঘটনার খবর শুনে আমিসহ সোহেলের বাবা মা ও আত্মীয় স্বজনরা ভৈরবের সেই ঘটনা স্থলে যাই, সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। ছেলে ও তার পরিবারের সদস্যদের না পেয়ে তার বাবা মা বার বার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, সকাল সাড়ে ১০ টা পর্যন্ত সোহেল রানার পরিবারের কারও মরদেহ পাওয়া যায়নি বলে জানতে পেরেছি। বাড়ির অন্য স্বজনরা শোকে শোকাহত। সোহেলের চাচাত ভাই ইমরান হোসেন বলেন, সোহেল রানার ভাগনি মারিয়াকে ভৈরবে বেড়াতে যান সোহেল নিজেই। ভাগনির অনুরোধে সোহেল তার স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে ট্রলার নিয়ে ঘুরতে বের হোন। এক পর্যায়ে ছবি তোলার জন্য ট্রলার মাঝিকে অনুরোধ করলে মাঝি তার হাতের বৈঠা ছেড়ে ছবি তুলে দিচ্ছিলেন। এ সময় ট্রলারটি কিছুটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। তখন বিপরীত দিক থেকে আসা বালুবাহী একটি বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে সেটি উল্টে যায়। জানা গেছে, ভৈরব সেতু এলাকা মেঘনা নদীর পাড় থেকে একটি নৌকা নিয়ে ১৬ জন যাত্রী আশুগঞ্জ সোনারামপুর চরে ঘুরতে যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ভৈরবে ফেরার পথে মাঝ নদীতে নৌকাটিকে একটি বাল্কহেড ধাক্কা দেয়। এত নৌকাটি ডুবে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজন ও নৌ পুলিশ ৯/১০ জনকে উদ্ধার করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় দুইজনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে এক নারীকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন এবং তোফাজ্জল হক (২২) নামের এক যুবককে আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। এসময় রুবা নামের এক ছাত্রী ও পুলিশ কনস্টেবলের ভাগিনা মারিয়াকে অন্য আরেকটি ট্রলার জীবিত উদ্ধার করেন। বাকিরা এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। ভৈরব নৌ-থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান জানান, নিখোঁজদের মধ্যে ভৈরব হাইওয়ে থানার পুলিশের কনস্টেবল সোহেল রানা (৩২)সহ তার পরিবারের সদস্যদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। নৌপুলিশ তাদের উদ্ধারে কাজ করছে। ভৈরব হাইওয়ে থানার ওসি সাজু মিয়া জানান, ঘটনার পর থেকে ফায়ার সার্ভিস ও নৌ পুলিশ নদীতে ট্রলারটি উদ্ধারের চেষ্টা করে। কিন্ত অন্ধকার থাকায় উদ্ধার কাজ ব্যহত হয়।
|