নিজস্ব
প্রতিবেদক: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের উপ নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী মনিরুল
হক সাক্কুর উঠান বৈঠকে তার উপস্থিতিতে ককটেল বিস্ফোরণ ও বোরকা পড়ে হামলা
চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একই সাথে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়েছে
সাক্কুর মালিকানাধীন রেডরুফ-ইন হোটেল রেস্টুরেন্টে। হামলায় হোটেলটির
সুপাইভাজারসহ চারজন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে কাছাকাছি সময়ে এ দুটি ঘটনা ঘটে।
সাবেক
মেয়র মনিরুল হক সাক্কু অভিযোগ করেন, সোমবার বাদ আসর কুমিল্লা নগরীর ৯নং
ওয়ার্ড বাগিচাগাঁও এলাকায় ঘড়ি প্রতীকের পক্ষে উঠান বৈঠকের আয়োজন করা হয়।
বৈঠক শুরুর পূর্বে মানুষজন যখন এখানে জড়ো হন তখনই পার্শ্ববর্তী একটি ভবনের
ছাদ থেকে ককটেল নিক্ষেপ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। এছাড়াও একজন যুবক বোরকা
পড়ে বৈঠকে হামলার চেষ্টা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
সাক্কু
অভিযোগ করেন, বাগিচাগাঁওয়ে উঠান বৈঠকে হামলার কিছুক্ষণ পরে নগরীর রেইসকোর্স
এলাকায় অবস্থিত তার মালিকানাধীন হোটেল রেডরুফ-ইন-এ হামলা চালানো হয়। এসময়
হোটেলে ভাংচুরসহ হোটেলটির সুপারভাইজার কবির হোসেন, স্টাফ ফারুক, রুহুল আমিন
ও নাসিরকে আহত করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার দলীয় সমর্থক বাস প্রতীকের
প্রার্থীর লোকজন এ হামলা চালিয়েছে।
গত শুক্রবার থেকে প্রতিদিনই তার
উঠান বৈঠকে হামলা ও কর্মীদের মারধর করা হচ্ছে জানিয়ে সাক্কু বলেন, এর আগেও
আমার উঠান বৈঠকে হামলা চালিয়ে চেয়ার ও মঞ্চ ভাঙচুর করেছে বাস প্রতীকের
প্রার্থীর নেতাকর্মীরা। আমি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে গিয়েছি এ ঘটনার
বিষয়ে অভিযোগ জানাতে।
এছাড়াও সাক্কু বলেন, “বিভিন্ন স্থানে টেবিল ঘড়ির
কর্মীদের ওপর হামলার পাশাপাশি ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে ভয় দেখানো হচ্ছে।
সারা শহরে আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। পোস্টার লাগালে তা গায়েব করে
দেওয়া হচ্ছে। চারদিকে আমার গণজোয়ার দেখে তাদের মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য
সন্ত্রাস করে বিজয়ী হতে চাইছে। আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে এসব বিষয়ে কঠোর
হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।
এ সব বিষয়ে জানতে বাস প্রতীকের প্রার্থী মহানগর
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসিন বাহার সূচনার মোবাইল ফোনে কল করা হলে
তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে সূচনার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক ও
কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকন
এই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
সন্ধ্যায় আতিক উল্লাহ খোকন বলেন,
কারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে আমরা জানি না। নিশ্চয়ই প্রশাসন প্রতিটি ঘটনা তদন্ত
করে ব্যবস্থা নেবে। অযথা আমাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে।
তাদের কাজই সারাদিন মিথ্যা অভিযোগ করা।
হামলার ঘটনা তদন্ত করে দেখা
হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনের
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরহাদ
হোসেন।
আগামী ৯ মার্চ কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র পদে উপনির্বাচনে
ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে মোট ৪জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা
করছেন। তারা হচ্ছেন-সিটির দুইবারের মেয়র ও বিএনপির সাবেক নেতা মনিরুল হক
সাক্কু (টেবিল ঘড়ি প্রতীক), মহানগর আওয়ামী লীগ সমর্থিত নগর আওয়ামী লীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক তাহসীন বাহার সূচনা (বাস প্রতীক), মহানগর আওয়ামী লীগের
উপদেষ্টা কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি নুর-উর রহমান
মাহমুদ তানিম (হাতি প্রতীক) এবং মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি
নিজাম উদ্দিন কায়সার (ঘোড়া প্রতীক)।