তানভীর দিপু: প্রচার-প্রচারণায়
প্রতিশ্রুতি আর অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে নির্বাচনি আমেজ বাড়ছে দিনের পর দিন।
নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে ভোটারদের কাছে টানতে প্রার্থীদের ব্যস্ততা
যেন বাড়ছেই। লিফলেট বিতরণ করে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে কুশল বিনিময়,
উঠান বৈঠক ও পথসভায় প্রার্থীদের শ^াস ফেলার জোঁ নেই। নাগরিকদের মন জয় করতে
শুধু প্রতিশ্রুতিই নয়, নানান অভিযোগ আর ক্ষোভ প্রকাশ করে লড়াইয়ের উত্তাপ
ছড়াচ্ছেন । পোষ্টার- ব্যানার ছিড়ে ফেলা এবং সমর্থকদের হুমকি ধমকি নিয়ে
অভিযোগ করছেন প্রার্থীরা।
এদিকে রিটার্নিং কর্মকর্তা মোঃ ফরহাদ হোসেন
বলেন, কেউ কোন লিখিত অভিযোগ করেন নি। তারপরও আমরা খোঁজ-খবর রাখছি। ইতোমধ্যে
একজন প্রার্থীকে শোকজ করা হয়েছে। আচরণবিধি পর্যবেক্ষণ করছেন নির্বাহী
ম্যাঝিষ্ট্রেটগণ। কোথাও কোন আইন অমান্য করলে কিংবা আচরণবিধি লঙ্ঘন করলে
ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গতকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি নগরীর কালিয়াজুড়ি এলাকায়
প্রচারণা করেন আওয়ামী লীগ নেতা হাতি প্রতীকের নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম।
এসময় সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, একটি অশুভ শক্তি তাদের নিশ্চিত
পরাজয় জেনে আমার পোস্টার ছেড়ার চেষ্টা করছে। আমার কিছু নেতাকর্মীকে তারা
হেনস্তা করেছে। তারা কিছুটা ভয়-ভীতিও দেখিয়েছে। আমি এ বিষয়টি নির্বাচন
কমিশনে জানিয়েছি। আমি উত্তরের অপেক্ষায় আছি। অভিযোগে আমি অভিযুক্তদের নাম,
বাড়ির ঠিকানা, পিতার নাম এবং ঘটনাস্থল এবং সময়সহ দিয়েছি। আমি দেখতে চাই
নির্বাচনী আইন ভঙ্গের দায়ে কমিশন তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়।
এদিকে
নগরীর সদর দক্ষিণ এলাকার চৌয়ারায় গণ সংযোগ ও প্রচারণা চালিয়েছেন বিএনপি
নেতা ঘোড়া প্রতীকের নিজাম উদ্দিন কায়সার। এসয় তিনি নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টি
আকর্ষণ করে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ তোলেন, প্রচার-প্রচারণায় বাঁধা দেয়া
তো হচ্ছেই। যেমন- আমার পোষ্টার ব্যানার কেটে ফেলা হচ্ছে। রাতের আঁধারে কারা
যেন এগুলো ছিড়ে ফেলা হচ্ছে। বিভিন্ন শহরের লোকেরা কুমিল্লা শহরের সম্মানিত
নাগরিকদের হুমকি ধমকি দিচ্ছে। কাউকে বলছে- তোমরা বিদেশ চলে যাও, কাউকে
বলছে তোমরা কাজ করো না। আমি তাদেরকে এধরনের কাজ থেকে বিরত থাকার অনুরোধ
করবো। আমি সপ্তাহ শেষে সব অভিযোগ লিখিত আকারে নির্বাচন কমিশনে জানাবো।
এদিকে
নগরীর বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ এবং প্রচারণা চালিয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের
সাংগঠনিক সম্পাদক বাস প্রতীকের তাহসীন বাহার সূচনা। এসময় তিনি ভোটারদের
কাছে ৯ মার্চ কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দানের জন্য উৎসাহীত করেন। তার বিরুদ্ধে
‘নির্বাচনি মাঠে প্রভাব বিস্তার করা’র অভিযোগের প্রশ্নে তিনি বলেন, দ্বাদশ
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমরা দেখেছি নির্বাচন খুবই সুষ্ঠু হয়েছে। কেউ যদি
প্রভাব ফেলার প্রশ্ন তোলে -তাহলে প্রভাবিত বলতে কি বোঝানো হচ্ছে সেটিও
পরিষ্কার করতে হবে। কোন সেক্টরে (জায়গায়) প্রভাব ফেলা হচ্ছে -সেটিও বলতে
হবে। সোস্যাল মিডিয়া কোন অভিযোগ করার জায়গা না। নির্বাচন কমিশন আছে, উনার
যদি সমস্যা হয়- তাহলে নির্বাচন কমিশনের কাছে চিঠি লিখবেন।
টমছম ব্রীজ
এলাকা থেকে গণসংযোগ শুরু করেন সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা মনিরুল হক সাক্কু।
তিনি এসময় টমছমব্রীজ কাঁচাবাজার এলাকায় দোকানি ও ক্রেতাদের সাথে কুশল
বিনিময় করে ভোট প্রার্থনা করেন। এসময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, গত নির্বাচনের
ফলাফল নিয়ে আমার অসন্তোষ রয়েছে। এবারও ইভিএমে ভোট হবে। তাই নির্বাচন
কমিশনে আমার ক্ষোভ জানিয়েছে। তারা বলেছে- দু’একদিনের মধ্যে ঢাকা থেকে
নির্বাচন কমিশনের লোকজন আসবেন, তাদের সকল বিষয়ে আমি জানাবো।
এদিকে এখনো
পর্যন্ত কুমিল্লা সিটি নির্বাচন নিয়ে কোথাও কোন সহিংসতা কিংবা মারামারির
ঘটনা ঘটেনি। ভোটাররা বলছেন, নির্বিঘœ প্রচার-প্রচারণায় ভোটের পরিবেশ
স্বাভাবিক ও সুন্দর থাকলে কেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি বাড়বে।