![নারী পাচার চক্র সক্রিয়]( https://comillarkagoj.com:443/2024/02/12/CK_1707678951.jpg)
নারীপাচার নিয়ে যে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে,
তা এককথায় ভয়াবহ। পুলিশ ও র্যাবের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পত্রিকান্তরে
প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, গত দুই বছরে দেশ থেকে প্রায় দেড় হাজার নারী ও
শিশু পাচার হয়েছে। তাদের বেশির ভাগ এখনো উদ্ধার হয়নি। পাচার হওয়া বেশির
ভাগই কিশোরী ও তরুণী।
তাদের ভারত, শ্রীলঙ্কাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে
পাচার করা হচ্ছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর সূত্রসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের
মতে, দেশ থেকে নারীপাচারের সঙ্গে একটি রাঘব বোয়াল চক্র জড়িত। তারা যশোর ও
সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী এলাকায় বেশি তৎপর। এর বাইরে সারা দেশে চক্রের পাঁচ
শতাধিক সদস্য রয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা বলছে, তদন্তে
নেমে তারা একটি মানব পাচার চক্রের সন্ধান পায়, যারা ফেসবুকে সহজে টাকা-পয়সা
ছাড়াই চাকরি দেওয়ার নামে নারী ও শিশুদের পাচার করে আসছে। এই চক্রের ফাঁদে
পা দিয়ে খুলনা থেকে এক নারী তাঁর সন্তানকে নিয়ে সাতক্ষীরার কলারোয়ার
সীমান্ত এলাকায় চলে যান। চক্রের সদস্যরা তাদের পাচারের উদ্দেশ্যে নো-ম্যানস
ল্যান্ড এলাকায় নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।
তবে যে
মামলার তদন্তে নেমে এই চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে, সেই দুই মেয়েকে আগেই
পাচার করা হয়। ডিবি বলছে, কলারোয়ায় ভারতীয় সীমান্তের জিরো পয়েন্ট লাগোয়া
গ্রাম কেরাগাছি এলাকার দুই ভাইয়ের একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে কম বয়সী নারী ও
শিশুদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে সীমান্ত দিয়ে পাচার করে আসছিল। চক্রটি
শতাধিক নারীকে পাচার করেছে বলে দাবি ডিবির।
র্যাব ও পুলিশের ভাষ্য,
নারী ও শিশু পাচারের একাধিক মামলায় তদন্তে নেমে তারা জানতে পেরেছে, গত বছর
টিকটক চক্রের মাধ্যমে ভারতে পাচার হওয়া বাংলাদেশি এক তরুণীকে হত্যা করা হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত দুই বছরে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক হাজার নারী
নিখোঁজের অভিযোগে বিভিন্ন থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
এর মধ্যে দেড়
হাজারের বেশি নারী পাচার হয়েছেন বলে প্রাথমিক তথ্য পেয়ে তদন্ত চলছে। ভারতে
পাচার হওয়া চার তরুণী দেশে ফিরে তাঁদের ওপর নির্যাতনের তথ্য দিয়েছেন। দেশে
ফেরা তরুণীরা রাজধানীর হাতিরঝিল থানায় মানবপাচার ও পর্নোগ্রাফি আইনে
পাঁচটি মামলা করেন। এসব মামলায় ২০ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। নারী পাচার
চক্রের ২০ জনকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ জানতে পারে, এই পাচারচক্রে
দেশ-বিদেশের কয়েক শ সদস্য যুক্ত। তারা শুধু ভারতে নয়, মালয়েশিয়া ও আরব
আমিরাতেও নারী পাচার করেছে।
এই নারী পাচারকারী চক্র দেশের শত্রু। তাদের
বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে পাচার হয়ে যাওয়া
তরুণীদের ফিরিয়ে আনার জন্য আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে, এটাই আমাদের
প্রত্যাশা।