অল্প
পুঁজি নিয়েও শরিফুল ইসলামের দারুণ বোলিংয়ে আশা জাগাল দুর্দান্ত ঢাকা। তবে
চাপের মুখে ব্যর্থতা ঝেড়ে ছন্দে ফেরার আভাস দিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। পরে
বেনি হাওয়েল, রায়ান বার্লদের ব্যাটে কাঙ্ক্ষিত জয় পেল সিলেট স্ট্রাইকার্স।
মিরপুর
শের-ই বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বুধবার বিপিএলের তলানির দুই দলের
লড়াইয়ে ৫ উইকেটে জিতেছে সিলেট। ১২৫ রানের লক্ষ্য ৬ বল বাকি থাকতে ছুঁয়েছে
গত আসরের রানার্সআপরা।
আট ম্যাচে সিলেটের দ্বিতীয় জয় এটি। দুটিই ঢাকার
বিপক্ষে। উদ্বোধনী ম্যাচে জয় দিয়ে শুরু করা ঢাকা হারল টানা ছয় ম্যাচ।
টুর্নামেন্টের ইতিহাসে এর চেয়ে বেশি পরাজয়ের নজির আছে স্রেফ একটি। প্রথম
আসরে সিলেট রয়্যালস হেরেছিল ৭ ম্যাচ।
রান খরায় ভুগতে থাকা শান্ত করেন ২৫
বলে ৩৩ রান। এর আগে ঢাকাকে অল্পে আটকে রাখার কারিগর রেজাউর রহমান। ২০ রানে
৩ উইকেট নেন তিনি। তবে বল হাতে ১ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাটিংয়ে অপরাজিত ৩০
রানের ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন হাওয়েল।
মোসাদ্দেক হোসেনের চোটে এদিন ঢাকার অধিনায়কত্ব করেন তাসকিন আহমেদ। তার নেতৃত্বে ছোট রানের ম্যাচেও কিছুটা উত্তেজনা ছড়ায় ঢাকা।
রান
তাড়ায় প্রথম ওভারেই সামিত প্যাটেলের উইকেট হারায় সিলেট। শরিফুল ইসলামের
ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন সামিত। তিনি রিভিউ নিলে দেখা যায়, বল
অল্প ছুঁয়ে যেত স্টাম্প। অর্থাৎ আম্পায়ার আউট না দিলে বেঁচে যেতেন তিনি।
ক্রিজে
গিয়ে প্রথম বলেই বাউন্ডারি মারেন শান্ত। পাওয়ার প্লেতে তিনি মারেন আরও ৪টি
চার। কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে পাননি সমর্থন। পরের ওভারে হ্যারি টেক্টরকে
ফেরান শরিফুল। ষষ্ঠ ওভারে তরুণ বাঁহাতি পেসারের শিকার জাকির হাসান।
সাফল্যের
আশায় শরিফুলকে টানা চার ওভার করান তাসকিন। তবে নিজের শেষ ওভারে আর উইকেট
নিতে পারেননি শরিফুল। উল্টো তার ওই ওভারে দুটি চার মারেন মোহাম্মদ মিঠুন।
তবে বেশি দূর যেতে পারেননি সিলেট অধিনায়ক। উসমান কাদিরের ঝুলিয়ে দেওয়া ডেলিভারি ড্রাইভ করতে গিয়ে স্লিপে ধরা পড়েন ১৭ রান করা মিঠুন।
উসমানের
পরের ওভারে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন শান্তও। টানা পাঁচ ম্যাচে দুই অঙ্ক
ছুঁতে না পারা বাঁহাতি ব্যাটসম্যান এদিন খেলেন ৬ চারে ৩৩ রানের ইনিংস।
শান্তর বিদায়ে কিছুটা চাপে পড়ে সিলেট। সেখান থেকে দায়িত্ব নিয়ে ম্যাচ শেষ
করেন বেনি হাওয়েল ও রায়ান বার্ল।
অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দুজনে মিলে যোগ করেন ৫৫ রান। হাওয়েল ২৬ বলে ৩০ ও বার্ল ৩১ বলে ২৯ রানে অপরাজিত থেকে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
এর
আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ঢাকার ইনিংসকে ভাগ করা যায় দুই অংশে। প্রথম ১০
ওভারে তারা করে ৮২ রান। সেখান থেকে পরের ১০ ওভারে আসে স্রেফ ৪২ রান।
প্রথম ওভারে সাব্বির হোসেন বিদায় নেওয়ার পর দারুণ জুটি গড়েন নাঈম শেখ ও সাইফ হাসান। দুজন মিলে ৫৭ বলে যোগ করেন ৭৮ রান।
তৃতীয়
ওভারে নাঈম হাসানের শেষ চার বলে তিন চারের সঙ্গে একটি ছক্কা মারেন সাইফ।
পরের ওভারে তানজিম হাসানকে দুটি চার মারেন আরেক ওপেনার নাঈম।
পাওয়ার
প্লেতে পঞ্চাশ পেরিয়ে যায় ঢাকা। দশম ওভারে আরিফুল হককে জোড়া ছক্কায় ওড়ান
বাঁহাতি ওপেনার। এরপরই ম্যাচের গতিপথ পাল্টাতে শুরু করে। একাদশ ওভারে
হাওয়েলের বলে জায়গা বানিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান সাইফ। ৬ চার ও ১
ছক্কায় ৩২ বলে ৪১ রান করেন তিনি। পরের ওভারে ড্রেসিং রুমে ফেরেন ২৯ বলে ৩৬
রান করা নাইম। আর কেউ উইকেটে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ১০ রান করতে ১২ বল
খেলেন সাইম আইয়ুব। লাসিথ ক্রসপুল ১৭ বলে করেন ১২ রান। ৪ ওভারে ২০ রান খরচায়
৩ উইকেট নেন রেজাউর রহমান রাজা।