শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
অস্থির মিয়ানমার সীমান্ত
প্রকাশ: বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১:১৬ এএম |

অস্থির মিয়ানমার সীমান্ত
মিয়ানমারে জান্তা সরকারের সঙ্গে বিদ্রোহী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোর লড়াই ক্রমেই তীব্র রূপ ধারণ করেছে। একের পর এক শহর ও অঞ্চল বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাচ্ছে। প্রায় একই ধরনের ঘটনা ঘটছে বাংলাদেশ সীমান্তের কাছেও। এখানে যথেষ্ট পরাক্রমের সঙ্গে যুদ্ধ করছে আরাকান আর্মি (এএ)।
তারা বেশ কিছু এলাকা নিজেদের দখলে নিয়েছে। যুদ্ধে নিক্ষিপ্ত গোলাগুলি বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও চলে আসছে। নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু সীমান্তের কাছে গত রবিবার রাতে ব্যাপক গোলাগুলি হয়েছে। এ সময় সীমান্তবর্তী এলাকায় এক বাংলাদেশি নারী ও এক রোহিঙ্গা নিহত এবং অন্তত তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছে।
যুদ্ধে টিকতে না পেরে গত দুই দিনে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) অন্তত ৯৫ জন সদস্য অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করে। পরে তাদের নিরস্ত্রীকরণ করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বা বিজিবির হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদের মধ্যে থাকা ১৫ জন আহত সদস্যকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
মিয়ানমারের এই যুদ্ধ পরিস্থিতি দিন দিনই খারাপের দিকে যাচ্ছে।
জান্তা বাহিনী বিমান হামলাও চালাচ্ছে। বোমা বর্ষণ করা হচ্ছে। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে প্রচুর মানুষ অভ্যন্তরীণ উদ্বাস্তুতে পরিণত হচ্ছে। তাদের অনেকে বাংলাদেশেও প্রবেশের চেষ্টা করছে।
হামলা হচ্ছে মিয়ানমারে থাকা রোহিঙ্গাদের ওপরও। তাই রোহিঙ্গারাও নতুন করে বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করতে পারে। পরিস্থিতি যত খারাপ হবে, উদ্বাস্তু মানুষের অনুপ্রবেশ তত জোরালো হবে। আবার শুধু বিজিপি নয়, প্রকাশিত খবরাখবর থেকে জানা যায়, এর মধ্যে আরাকান আর্মির কিছু সদস্যও বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। কয়েকজনকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। মিয়ানমারের সামরিক, বিদ্রোহী ও বেসামরিক নাগরিকের অনুপ্রবেশ ক্রমেই বাড়তে পারে। এই পরিস্থিতি কিভাবে সামাল দেওয়া হবে, তা নিয়ে এখনই ভাবতে হবে।
অন্যদিকে মিয়ানমার সীমান্তে বিজিপির নিয়মিত টহল এখন খুবই দুর্বল। অনেক স্থানে কার্যত কোনো টহলই নেই। এই সুযোগটাকে কাজে লাগাবে উভয় দেশের চোরাচালানি, সন্ত্রাসী ও অন্যান্য অপরাধী। ধারণা করা হচ্ছে, মাদক চোরাচালানের পাশাপাশি অস্ত্রের চোরাচালানও অনেক বেড়ে যেতে পারে। তাই বাংলাদেশ সীমান্তে বিজিবিকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রাখতে হবে। প্রয়োজনে বিজিবিকে সহায়তা করার জন্য অন্যান্য বাহিনীকেও মোতায়েন করা যেতে পারে। জানা যায়, আরাকান আর্মির লক্ষ্য হচ্ছে সম্পূর্ণ রাখাইন রাজ্যটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়া। অনেকের মতে, যুদ্ধের গতি-প্রকৃতি সেদিকেই যাচ্ছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন গ্রামগুলোর মানুষ এখন এক বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। তুমব্রু সীমান্ত এলাকার সাতটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সীমান্তসংলগ্ন রাস্তায় যানবাহন চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। সীমান্তসংলগ্ন জমিজমায় কাজ করতেও যাওয়া যাচ্ছে না। এই অবস্থায় অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে অন্য এলাকায় গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। এলাকায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের, বিশেষ করে খাদ্যপণ্যের সরবরাহে সংকট তৈরি হয়েছে। তাই স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া জরুরি হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি ক্রমেই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে মিয়ানমারের জান্তা কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েও কোনো ফল হবে না। বাংলাদেশের সীমান্ত প্রতিরক্ষা, সীমান্তবর্তী লোকজনের সুরক্ষা, চোরাচালান ও অনাকাক্সিক্ষত অনুপ্রবেশ রোধ করাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।












সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft