মাত্র দুদিন না যেতে সুখের স্মৃতি রূপ নিল বিষাদে
|
![]() রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে সানজিদা যখন চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন, তখনো তার হাতের মেহেদি পুরনো হয়নি। দুদিন আগের সুখস্মৃতি এভাবে ভেঙে যাবে, কে জানত! ![]() রোববার সন্ধ্যা ছয়টার দিকে চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটের ডিসি পার্কের সামনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন সানজিদার স্বামী রায়হান নওশাদ। সন্ধ্যা সাতটার দিকে রায়হান উদ্দিনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ জানায়, সন্ধ্যা সাতটার দিকে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত রায়হান নওশাদকে মেডিক্যালে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করে। এদিন রাত ৮টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান–স্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারে গিয়ে দেখা যায়, শোকে কাতর সানজিদা বিলাপ করছিলেন। কেবল বলছিলেন, ‘আল্লাহ কেন এমন করল।’ তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন স্বজন ও বন্ধুরা। কান্নাজড়িত কণ্ঠে সানজিদা বলছিলেন, আমার নওশাদকে বলেছিলাম তুমি বাইক বিক্রি করে দাও। আমাকে বলেছে ‘বাইক বিক্রি করে দিলে আমাকে আলাদা থাকতে হবে। তুমি কি আমাকে ছাড়া থাকতে পারবা’? আমি বলেছি ‘না, আমি তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও থাকবো না। আমার নওশাদ আমাকে ছেড়ে চলে গেছে’। ![]() মেডিক্যালের ইমার্জেন্সির সামনে তখনো অর্ধশতাধিক মানুষের ভিড়। তারা সবাই নিহত রায়হানের স্বজন, শিক্ষক, বন্ধু-ভাই। তার বন্ধু পার্থ প্রতিম নন্দী বলেন, ওর ক্রীড়া সাংবাদিক হওয়ার অনেক বড় স্বপ্ন ছিল। প্রায়ই খেলা নিয়ে আমাদের মধ্যে কথা হত। সে আমাকে সব সময় বলত ‘একদিন আমি স্পোর্টস সাংবাদিক হব’। রায়হানের আরেক বন্ধু তাপস বড়ুয়া বলেন, শুক্রবার তার আকদে যেতে পারিনি। সেদিন রাতেও অনেক হাসিখুশি ছিল। কথা হলো তার সঙ্গে। আজ সে নেই। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, রায়হান নওশাদ নগরীর কাটগড় এলাকার এসএপিএল কনটেইনার ডিপোতে চাকরি করতেন। সহকর্মীকে সাথে নিয়ে কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে দুজনে দুর্ঘটনায় পড়েন। ঘটনাস্থলেই নওশাদ মারা যান। গুরুতর আহত হয়ে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন রয়েছে তার সহকর্মী। নওশাদ হাটহাজারী থানার পাটোয়া গ্রামের হাজি নাজির ফকির বাড়ির বাসিন্দা। তিনি নগরীর পোর্ট সিটি ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।
|