![মিয়ানমার থেকে আসা গুলিতে দুজন আহত, শিক্ষার্থীশূন্য স্কুল]( https://comillarkagoj.com:443/2024/02/05/CK_1707074223.jpg)
বান্দরবানের
নাইক্ষ্যংছড়িতে মিয়ানমার সীমান্তের ওপার থেকে আসা গুলিতে দুই বাংলাদেশি
আহত হয়েছেন; ভয়ে-আতঙ্কে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠাননি অভিভাবকরা।
মিয়ানমারে
সেনাবাহিনী ও বিদ্রোহীদের তুমুল লড়াইয়ের মধ্যে রোববার সকাল ১০টার দিকে তারা
গুলিবিদ্ধ হন বলে ঘুমধুম ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য খালেদা বেগম
জানান।
আহতরা হলেন- তুমব্রু ক্যাম্প পাড়ার বাসিন্দা প্রবীর চন্দ্র ও
রহিমা বেগম (৫০)। রহিমা ঘুমধুম ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য দীল মোহাম্মদের
স্ত্রী।
ইউপি সদস্য খালেদা বলেন, “আহত দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টার করে বান্দরবানের বাইরে নেওয়া হয়েছে।”
স্থানীয়রা
বলছেন, রোববার সকাল থেকে নাইক্ষ্যংছড়ি ও কক্সবাজার উখিয়ার পালংখালী
সীমান্তের ওপার থেকে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ আসছে। তাতে আতঙ্কে রয়েছেন
সীমান্তে বাংলাদেশ অংশের বাসিন্দারা। তুমব্রু এলাকার অনেকে ঘরবাড়ি ও
দোকানপাট বন্ধ করে নিরাপদে সরে গেছেন।
আতঙ্কে সীমান্ত সংলগ্ন পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রোববার কোনো শিক্ষার্থী আসেনি বলে শিক্ষকরা জানান।
স্কুলগুলো
হল- উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বাইশফাঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
ভাজাবনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক
বিদ্যালয়।
পশ্চিমকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হেলাল
উদ্দিন বলেন, “ভোর থেকে প্রচ- গোলাগুলির শব্দ আসছে। দুপুর পর্যন্ত থেমে
থেমে গোলাগুলি চলেছে। আতঙ্কে কোনো শিক্ষার্থী স্কুলে আসেনি। তবে শিক্ষকরা
সবাই উপস্থিত হয়েছেন।”
জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার ফরিদুল আলম
হোসাইনি বলেন, “গোলাগুলির ঘটনায় সীমান্ত এলাকার একটি দাখিল মাদ্রাসায়তেও
কোনো শিক্ষার্থী আসেনি।”
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন
সাংবাদিকদের বলেন, “সীমান্ত পরিস্থিতি বিজিবি দেখছে। স্কুলের বিষয়ে স্থানীয়
জনপ্রতিনিধিদের বলা আছে; পরিস্থিতি অনুযায়ী তারা যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে
পারবে।”
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, শনিবার
বিকালে ও রাতে সীমান্তের ওপারে রাখাইনের তুমব্রু রাইট পিলার ক্যাম্প এলাকা
থেকে এলোপাতাড়ি গোলাগুলির শব্দ পান তারা।
সকালে খবর আসে, রাতের যুদ্ধে
মিয়ানমারে বর্ডার গার্ড পুলিশের একটি ফাঁড়ি আরাকান আর্মির যোদ্ধারা দখল করে
নিয়েছে। সেই ফাঁড়ির কিছু সদস্য পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন।
বিষয়টি
নিয়ে বিজিবির কোনো কর্মকর্তা কথা না বললেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান
খান কামাল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওরা ১৪ জনের মত। ওদের
বিজেপি বা বর্ডার গার্ড পুলিশ বলে।
“আপনারা জানেন আরাকান আর্মির সাথে
ওদের ফাইট হচ্ছে। এক পর্যায়ে তারা এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছে। এ ব্যাপারে
মিয়ানমার সরকারের সাথে আমাদের কথা হচ্ছে।”
আগের দিন শনিবার বিকালে ওপার থেকে ছোড়া গুলি এসে লাগে তুমব্রু সীমান্ত সড়কের এক অটোরিকশায়। এতে অটোরিকশাটির সামনের গ্লাস ফেটে যায়।
স্থানীয়রা
বলছেন, মিয়ানমার অংশে মুহুর্মুহু গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দে সীমান্তে
বাংলাদেশ অংশের কয়েকটি গ্রামে আতঙ্ক ছড়ায়। রাতে মিয়ানমারের ছোড়া মর্টার
শেলের অংশ কোনারপাড়া গ্রামের ইলিয়াস হোসেনের ঘরের চালা ভেদ করে ভেতরে এসে
পড়ে।
কক্সবাজার উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গফুর উদ্দিন
বলেন, দুই দিন ধরেই সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় তীব্র গোলাগুলির শব্দ শোনা
যাচ্ছে।