ছোটদের
উদ্দেশে বহুমাত্রিক লেখক হুমায়ুন আজাদ লিখেছিলেন— ‘বইয়ের পাতায় প্রদীপ
জ্বলে, বইয়ের পাতা স্বপ্ন বলে’। শিশুদের মনে সেই স্বপ্ন জাগিয়ে দিতে
সপ্তাহের দুই ছুটির দিনে সকালটা তাদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। শনিবার (৩
ফেব্রুয়ারি) মাসব্যাপী বইমেলার তৃতীয় দিনে ছিল দ্বিতীয় ছুটির দিন। এদিন
সকালে ক্ষুদে পাঠক-দর্শনার্থীদের কলকাকলিতে মুখরিত ছিল বইমেলা প্রাঙ্গণ।
আজ
সকাল ৯টায় বইমেলার মূল ফটক খুলে দেওয়া হয়। তবে ১০টার পর থেকে ধীরে ধীরে
বাড়তে শুরু করে পাঠক-দর্শনার্থী। বেশিরভাগ দর্শনার্থীরাই এসেছে বাড়ি ছোট্ট
সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে। সকাল ১১টা বাজার আগেই ‘শিশুপ্রহর’ উপভোগ করতে সবাই ভিড়
জমান শিশু চত্বরে।
শিশুপ্রহর শুরুর পরপরই জনপ্রিয় টেলিভিশন ধারাবাহিক
সিসিমপুরের হালুম, ইকরি, টুকটুকির ও শিকু চরিত্রের সঙ্গে উল্লাসে মেতে ওঠে
শিশুরা। বেলা ১২টায় শিশুপ্রহর শেষ হওয়ার পর বাবা, মা, ভাই ও অভিভাবকদের হাত
ধরে শিশু চত্বরের বই খুঁজতে শুরু করে তারা। উৎসুক চোখে ক্ষুদে পাঠকরা
স্টলে স্টলে ঘুরে খুঁজতে থাকে নিজেদের পছন্দের বই। তাদের কেউ খুঁজছে কমিকস,
কেউ বা রূপকথা, কেউ সায়েন্স ফিকশন। আবার কারও কারও পছন্দ ছড়া, ছবি আঁকার
বই। আবার কেউ কেউ শুধু ঘুরতেই এসেছে অভিভাবকদের সঙ্গে।
রাজধানীর মতিঝিল
থেকে বাবার সঙ্গে বইমেলা এসেছে লিটলস প্লাওয়ার স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির
শিক্ষার্থী ইসরাত মীম। বাবার সঙ্গে মেলায় ঘুরে ঘুরে তিনটি বই কিনেছে সে। এর
মধ্য দুটি ইংরেজি গল্পের বই, একটি বাংলা রূপকথার গল্প। আরও বই খুঁজছে সে।
ক্ষুদে এই পাঠক বলে, ‘আব্বুর সঙ্গে মেলায় এসেছি। সিসিমপুর দেখেছি, ভালো
লাগছে। এখন বই কিনছি, আমার গল্পের বই খুব ভালো লাগে।‘
চাচার সঙ্গে
বইমেলায় ঘুরতে এসেছে ওয়াইডব্লিউসিএ জুনিয়র গার্লস হাই স্কুলের দ্বিতীয়
শ্রেণির শিক্ষার্থী হুজাইফা ইবনাত রায়া। সে জানায়, তারা রাজধানীর পশ্চিম
রাজা বাজার থেকে এসেছে।
হুজাইফা বলছিল, এবারের মেলায় আজকেই প্রথম ঘুরতে
এসেছে সে। মেলায় এসে সিসিমপুর দেখে তার ভালো লাগছে। তার পছন্দের বই-রূপকথা
ও ভূতের গল্প। আজ শুধু ঘুরতেই এসেছে সে। আজ কোনও বই কিনবে না।
ঢাকা
কমিকসের বিক্রয়কর্মী শহীন বলেন, আজ তো মেলার তৃতীয় দিন, আবার ছুটির দিন।
মেলায় শিশুদের ভিড় সন্তোষজনক, ভালোই লাগছে। যদিও উপস্থিতির আলোকে বিক্রি
তেমনটা হচ্ছে না। বেশিরভাগই এসে বই খুলে দেখছে, চলে যাচ্ছে। তবে শিশুদের
উপস্থিত আসা জাগায়, তারা বইমুখী হচ্ছে।