শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
‘ভারত ম্যাচ নিয়ে কাজ করতে হবে’, নেপালকে হারিয়ে বললেন টিটু
প্রকাশ: রোববার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪, ১২:১৭ এএম |



 ‘ভারত ম্যাচ নিয়ে কাজ করতে হবে’, নেপালকে হারিয়ে বললেন টিটু
 

গোল করা নিয়ে কোচ কী বলেছিলেন আপনাদের? জোড়া গোলদাতা সাগরিকাকে এই প্রশ্ন করতেই পাশ থেকে কোচ সাইফুল বারী টিটু কৌতুকপূর্ণ হাসিতে বলতে শুরু করলেন, “বলো, বলো, কোচ বলেছেন, হাতুড়ি রেডি আছেৃ’। টিটু কথা শেষ করতে পারলেন না। সাগরিকা হাসিমাখা মুখে বলে উঠলেন, “যদি গোল না হয়, হাতুড়ি দিয়ে মারা হবে।” সংবাদ সম্মেলনে কোচ-খেলোয়াড়ের কথা শুনে পড়ে গেল হাসির রোল।
এমন হাসি প্রত্যাশিতই ছিল। যে নেপালকে হারিয়ে গত বছর সাফ অনূর্ধ্ব-২০ উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছিল বাংলাদেশ; কমলাপুরের বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহী মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামে শুক্রবার তাদেরকে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ অনূর্ধ্ব-১৯ উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপে শুভসূচনা করল বাংলাদেশ।
জয়ের ব্যবধান বড় হতে পারত আরও। কখনও পোস্টের বাধায়, কখনওবা তাড়াহুড়ো করে সাগরিকা, পুজা দাসদের নেওয়া শট খুঁজে পায়নি ঠিকানা। তবে, শেষ পর্যন্ত জয়ে শুরু পাওয়ার স্বস্তি টিটুর কণ্ঠে।
“জেতাটা আসলেই জরুরি ছিল। প্রথম ম্যাচ জেতা মানে ফাইনালের পথে বড় একটা পদক্ষেপ। তবে, প্রত্যাশা অনুযায়ী কখনই খেলা হয় না। মেয়েরা অনেক চেষ্টা করেছে, আমার মনে হয় ওদের যা কিছু ছিল, তার সবটুকু দিয়েই চেষ্টা করেছে। শুরুতে যদি আমরা ওই গোলগুলো করতে পারতামৃওই গোলগুলো না হওয়া; বারে লাগা, সুযোগগুলো যদি আমরা কাজে লাগাতে পারতাম, তাহলে বিষয়গুলো অন্যরকম হতো।”
“(প্রথমার্ধে) এর পরের ২৫ মিনিট নেপাল ভালো খেলেছে, ওরা ধরে খেলার চেষ্টা করেছে। আমাদের ওই গোল না পাওয়ার কারণে ওরা থিতু হওয়ার সুযোগ পেয়েছে। তাই মাঝেমধ্যে ভালো খেললে হবে না, লম্বা সময় ধরে আধিপত্য করতে হবে। যেটা আমরা প্রথমার্ধের শেষ দিকে পেরেছিলাম। প্রথম গোলের সাথে সাথে আমরা আরেকটা গোল পেলাম, কিন্তু এরপর পেনাল্টি মিস হলো। ২-০, ৩-০ কিন্তু এক নয় এবং এরপর স্কোরলাইন ২-১ গোলে, যেটা ফুটবলে খুবই কঠিন পরিস্থিতি। সব মিলিয়ে আমি বলব, সবকিছু প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি, আরও আধিপত্য করা দরকার ছিল।”
উদ্বোধনী দিনে প্রথম ম্যাচে ভুটানকে ১০-০ গোলে উড়িয়ে যাত্রা শুরু করেছে ভারত। নেপাল ম্যাচের ব্যস্ততা থাকায় ওই ম্যাচ পুরোপুরি দেখা হয়নি টিটুর। তবে তারও মনে হচ্ছে, ভারতের শক্তিশালী আক্রমণভাগ নিয়ে কাজ করতে হবে তাকে।
“এখন গিয়ে আমি ওদের ম্যাচটি দেখব। তবে যতটুকু শুনেছি, স্কোরলাইন ১০-০, এটা অবশ্যই অনেক বড় বিষয়, নিশ্চয় ওদের ফিনিশিং ভালো। ওদের নাম্বার ৭ (পুজা) এবং ১১ (নেহা) শুনেছি দুইটা উইঙ্গার বেশ ভালো। নাম্বার ১০ (নিতু লিন্ড) ভালো। কাজ করতে হবে আমাদের।”
হারের পর নেপাল কোচ বাল গোপাল সাহু ঘুরেফিরে বাংলাদেশের প্রশংসায় হলেন পঞ্চমুখ। শারীরিক শক্তি, সামর্থ্যে ও কৌশলগত দিক থেকে স্বপ্না-সাগরিকাদের এগিয়ে রাখছেন তিনি। প্রতিপক্ষ কোচের প্রশংসা বাড়তি প্রাপ্তি হিসেবে দেখছেন বাংলাদেশ কোচ টিটু।
“মূল হচ্ছে যে, আমি যতদূর জানি, নেপালের খেলোয়াড়রা শারীরিকভাবে শক্তিশালী, কেননা ওরা পাহাড়ি। তো তারা যখন শারীরিকভাবে আমাদের শক্তিশালী বলেৃযে গতিতে আসলে আমাদের মেয়েরা খেলেছে, এফোর্টটা কখনও থামেনি, কখনও মনে হয়নি মেয়েরা দাঁড়িয়ে গেছে, দুই গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর কখনও এমন মনে হয় না যে, খেলাটা এখন একটু স্লো করি। ওদের কখনও এরকম মনে হয়নি। বরং ওরা জানে যে, আবারও ওদের আক্রমণে উঠতে হবে এবং এটাই মেয়েদের মানসিক শক্তির জায়গা।”
পোস্টের বাধায় শুরুতে হতাশ হওয়ার পর সাগরিকা ৪০তম মিনিটে খোলেন ম্যাচের ডেডলক। দুই মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মুনকি আক্তার। দ্বিতীয়ার্ধে সুকরিয়া মিয়া নেপালকে ম্যাচে ফেরালেও সাগরিকার দ্বিতীয় গোলে সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
ঠাকুরগাঁ রাণীশৈংকল থেকে উঠে আসা এই উঠতি ফরোয়ার্ড জানালেন শুরুর জড়তা কিভাবে কাটিয়ে উঠেছিলেন তারা। নানা বাধা পেরিয়ে নিজের উঠে আসার গল্পও শোনালেন এক ফাঁকে।
“প্রথমে ভয় লাগছিল, ওরা (নেপাল) কিভাবে খেলে, আমরা তো ওদের খেলা দেখিনি। পরে খেলতে খেলতে বুঝতে পেরেছি-আমরাও পারব। কেন পারব না? তারপর আমাদের খেলা ভালো হয়েছে। অনেক ভালো লেগেছে যে, আমি দুইটা গোল করেছি। পরের ম্যাচে আরও বেশি গোল করার চেষ্টা করব।”
“আমার বাড়ি ঠাকুরগাঁ, রানীশৈংকলে। আমি সেখান থেকে এসেছি। প্রথমে বাবা-মা আমাকে খেলতে দিতে চায়নি, কিন্তু আমার এক খালা ছিলেন। তিনি বলেছিলেন, তোরা যদি মেয়েকে খেলতে দিতে না চাস, তাহলে আমাকে দিয়ে দে। আমি নিজের মেয়ে বলে ওকে ফুটবলে দিয়ে দিব। আমিও বলছিলাম, আমি ফুটবলে যাব, কিন্তু বাবা-মা নিষেধ করছিলেন। গ্রামের মানুষও বলছে, মেয়েকে ফুটবলে দিবে! কিন্তু আমি জেদ নিয়ে খেলছিলাম, একদিন না একদিন আমি স্বপ্ন পূরণ করবই। বাবা-মার যে ভুল ধারনা, তা আমি বড় ফুটবলার হয়ে দেখাবোই। এখন জাতীয় দলের হয়ে (বয়সভিত্তিক দলে) খেলছি, আমি খুব খুশি।














সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
অফিসে হামলার সময় চেয়ে চেয়ে দেখলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft