ঘরের
টিনের চালে মরিচা ধরে অনেক জায়গায় ছিদ্র হয়ে গেছে। বেড়ার টিন, কাঠ, টিনের
দরজা ও জানালাও জরাজীর্ণ। ভেঙে পড়তে পারে যেকোনো সময়। খসে পড়েছে ঘরের
সিমেন্টের খুঁটিগুলো। শৌচাগার নেই, প্রতিটি ঘরে স্যাঁতস্যাঁতে দুর্গন্ধ
পরিবেশ এমনই করুণ অবস্থা কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর এলাকার বারেরারচরের
গুচ্ছগ্রামের। নির্মাণের ২৭ বছর পার হলেও একবারও সংস্কার করা হয়নি
গুচ্ছগ্রামের ১০ কামরার বিশাল ঘরটি। এর মধ্যে ঝুঁকি নিয়ে ১০টি পরিবার
অমানবিক জীবনযাপন করছে।
বুধবার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, ঘরের দরজা ও
জানালা ভাঙাচোরা। স্যাঁতস্যাঁতে নোংরা পরিবেশে শিশুরা ঘরের মেঝেতে
খেলাধুলা করছে। উৎকট দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। একটি শৌচাগার ভাঙাচোরা
হওয়ায় ব্যবহারে অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দরা
জানিয়েছেন, আমরা এখানে আসার ২ বছরের মধ্যেই ঘরগুলো নষ্ট হয়ে যায়। ঘরের
পিলার, দরজা- জানালা ভেঙে যায়। একটি টিউবওয়েল তাও নষ্ট হয়ে গেছে অনেক আগে।
একটি মাত্র শৌচাগার ভেঙে নষ্ট হয়ে গেছে। দীঘ ২৭ বছর এ অবস্থায় বসবাস
করছি। বর্ষায় বৃষ্টির পানি ও শীতে কুয়াশা ঠেকাতে কেউ কেউ টিনের চালের
উপর-নিচে পলিথিন টাঙিয়েছেন। আলো-বাতাস থেকে বাঁচতে ভাঙা বেড়ায়ও দিয়ে
রেখেছেন পলিথিন। সরে যাচ্ছে ঘরের মেঝে ও বারান্দার মাটি। এসব ঘরে বসবাসে
কষ্টের শেষ নেই তাদের।
গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা শিউলি আক্তার, গোলাম
মোস্তফা, নূরজাহান, মমতাজ বেগম বলেন,পানি খাওয়ার নলকূপ নষ্ট। কয়েকদিন পর পর
নিজেদের অর্থে মেরামত করি, শৌচাগার নেই। নোংরা দুর্গন্ধময় পরিবেশে বসবাস
করায় রোগ-জীবানু ছড়িয়ে পড়ছে। আমরা কেউ ভিক্ষা করি, কেউ দিনমজুর, কেউ
রিক্সা-ভ্যান চালক। সবাই দিন এনে দিন খাই। আমরা টাকা দিয়ে ঘর মেরামত করতে
পারব না। ২৫ বছর মেরামতর অভাবে এসব ঘর জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছে। উপায় না পেয়ে
এসব ঘরেই বসবাস করছি।
দেবিদ্বার পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম শামীম
বলেন, আমি বারেরারচর গুচ্ছগ্রামটি পরিদর্শন করেছি। সেখানে লোকজন খুব কষ্টে
বসবাস করছে। ঘরগুলো সংস্কার করে বাসিন্দাদের জন্য নতুন শৌচাগার ও নলকূপ
স্থাপন করা হবে।