রাস্তার উন্নয়নে প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি
টাকা ব্যয় হয়। রাস্তা তৈরিতে খরচও কম নয়। কিন্তু দেখা যায়, নতুন রাস্তা বা
মেরামত করা রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণে সেভাবে মনোনিবেশ করা হয় না। এ ছাড়া
প্রতিদিন সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন বাড়ছে।
অভিযোগ রয়েছে, বেশির ভাগ মালবাহী
ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত বা অনুমোদিত ওজনের চেয়ে অনেক
বেশি ওজন পরিবহন করে থাকে, যা যেকোনো রাস্তার জন্য ক্ষতিকর। সংকট থেকে
রক্ষা পেতে সড়ক-মহাসড়ক সংস্কার ও মেরামতে উদ্যোগ নিতে হয়। কিন্তু দেখা যায়
এই মেরামত কাজে দেওয়া হয় ফাঁকি। ফলে বেহাল রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে
খানাখন্দে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটে।
দেশের সড়ক দুর্ঘটনার একটি প্রধান কারণ
হচ্ছে বেহাল সড়ক। সড়ক মেরামতের পর বছর না ঘুরতেই দেখা যায় সেই আগের দৃশ্য।
আগের চেহারায় ফিরে যায় বেশির ভাগ সড়ক-মহাসড়ক। এমনই দুটি খবর প্রকাশিত হয়েছে
গত রবিবার পত্রিকান্তরে।
‘ছয় কোটি টাকার সড়কে ভাঙন আট মাসেই’ শিরোনামে
প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার
লম্বা একটি সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ছয় কোটি ৪৩ লাখ টাকা। কিন্তু সড়কটি
নির্মাণের আট মাস যেতে না যেতেই বিভিন্ন জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। সৃষ্টি
হয়েছে গর্ত। এ ছাড়া ভেঙে গেছে বেশ কয়েকটি ড্রেনও। বিভিন্ন জায়গায় ইট সরে
যাচ্ছে।
এতে চলাচলেও বিঘœ ঘটছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে ঠিকাদার খেয়ালখুশি মতো কাজ করায় এ অবস্থার সৃৃষ্টি হয়েছে।
একই
দিনে প্রকাশিত আরেকটি খবরে বলা হয়েছে, ঢাকার ধামরাই উপজেলার সূতিপাড়া
বাসস্ট্যান্ড-নান্নার সড়কে রাতে করা কার্পেটিং পরদিন হাত দিয়ে ধরলে বা পা
দিয়ে ঘষা দিলেই উঠে যাচ্ছে। স্থানীয়রা বলছে, গত মঙ্গলবার রাতে ঠিকাদারের
লোকজন তড়িঘড়ি করে নি¤œমানের কাজ করায় কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। সংশ্লিষ্ট
দপ্তরের গাফিলতি ও তদারকির অভাবে নি¤œমানের কাজ হয়েছে। পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া
উপজেলায় মঠবাড়িয়া-বড়মাছুয়া সড়কেও নি¤œমানের কার্পেটিং করার অভিযোগ উঠেছে
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে।
আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সীমিত সম্পদের
সর্বোত্তম ব্যবহার করার ওপরই নির্ভর করবে আমাদের উন্নয়ন। সরকারি
নির্মাণকাজের মান নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আছে। অতীতে সরকারি ভবন বা
সেতু-কালভার্ট নির্মাণে রডের পরিবর্তে বাঁশ ব্যবহারের মতো চাঞ্চল্যকর
অভিযোগও পাওয়া গেছে। সারা দেশেই সরকারি নির্মাণকাজ নিয়ে নানা ধরনের অনিয়মের
অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ আছে যাঁরা এসব কাজ তদারকি করেন তাঁদের বিরুদ্ধেও।
আমরা চাই, সব অভিযোগ সঠিকভাবে তদন্ত করে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত সবার বিরুদ্ধে
কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হোক।