শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪
১২ শ্রাবণ ১৪৩১
খেলার নাম ‘হা-ডু-ডু’
শান্তিরঞ্জন ভৌমিক
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৩, ১২:৪৪ এএম |

 খেলার নাম ‘হা-ডু-ডু’
[হা-ডু-ডু খেলায় শারীরিক শক্তি ও সংঘ শক্তির প্রয়োজন। কৌশলও আয়ত্ত করতে হয়। তবে খেলাটি নান্দনিক নয়।]
আমার জ্যেষ্ঠ (সিনিয়র) বন্ধু ছিলেন মরহুম আবদুর রশীদ ইনজিনীয়ার। আমরা একই থানার (উপজেলার) অধিবাসী। ১৯৭০ খ্রি: আগে তাঁকে নামে চিনতাম, পরিচয় ছিল না। তিনি মেধাবী ছাত্র ছিলেন। দাউদকান্দি হাই স্কুল থেকে বৃত্তি নিয়ে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেছিলেন। উচ্চ মাধ্যমিকেও তাঁর ফল খুবই উল্লেখযোগ্য। পরে ঢাকা আসানউল্লাহ ইনজিনীয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করেন। তখন ইনজিনীয়ারিং কলেজটি বিশ্ববিদ্যালয় হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ছিল। ১৯৭০ খ্রি: পরিচয়ের পর তিনি কীভাবে যেন সহজেই রশীদ ভাই হয়ে গেলেন। তাঁর শেষ কর্মস্থল কুমিল্লা জেলা পরিষদ। তিনি ডিস্ট্রিক ইনজিনীয়ার পদে কর্মরত ছিলেন।
বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশক ছিল রাজনৈতিক আন্দোলনের উত্তাল সময়। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের জয়যাত্রা শুরু হয়ে গেছে। পাকিস্তানি সরকারও নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং সর্বশেষ ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধুকে প্রধান আসামী করে ৩৫ জনসহ আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা রজু করে। কিন্তু ১৯৬৯ খ্রি: প্রচ- গণঅভ্যুত্থানে মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয় তৎকালীন আইয়ুব সরকার। আইয়ুবের পতনের পর জেনারেল ইয়াহিয়া প্রেসিডেন্ট হন। তিনি ১৯৭০ খ্রি: নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেন এবং ডিসেম্বরে পাকিস্তানের শেষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তা সবই জানা কথা। আমার আলোচ্য বিষয় ভিন্নতর।
রশীদ ভাই পরবর্তীতে রাজনৈতিক হিসেবে সমাধিক পরিচিতি লাভ করেছিলেন। শুধু নামের সঙ্গে ‘ইনজিনীয়ার’ শব্দটি আঠার মতো স্থায়িত্ব পেয়েছে মাত্র। আমার বিবেচনায় তিনি রাজনীতিক ছিলেন না। তাঁকে রাজনীতিক বানানো হয়েছে। এ নিয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারেন। আমি শুধু আমার দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যায়নের কথাই বলতে চাইব।
বিংশ শতাব্দীর ষাটের দশক যখন পূর্ব পাকিস্তানে আওয়ামী লীগের একচ্ছত্র জোয়ার বইছিল, দাউদকান্দিতে তখন খন্দকার মোস্তাক আওয়ামী লীগের নেতা, তাকে অন্যতম কেন্দ্রীয় নেতাও বলা হতো। কাজেই ১৯৭০ খ্রি: তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করবেন, তা নিশ্চিত। তার বিপক্ষে নির্বাচন করবেন জনাব আবদুস সামাদ কন্ট্রাক্টর। তিনি মুসলিম লীগের প্রার্থী। অর্থ-বিত্তে ধনবান। জনসেবায়ও এলাকায় অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। হাসানপুর কলেজ স্থাপন করেছেন। এদিকে খন্দকার মোস্তাকের কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তাই পুঁজি। অর্থবিত্ত তেমন নেই। থানার আওয়ামী লীগের সভাপতি রায়পুর কে,সি হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সিরাজ বি,টি (মরহুম সিরাজুল ইসলাম বি,এ বি টি), হযরত আলী খান, লতিফ চৌধুরী, নারায়ণ সাহা প্রমুখ খন্দকার মোস্তাকের সঙ্গে আছে। অর্থকড়ি দিয়ে সহযোগিতা করার সামর্থ নেই। অন্যদিকে আব্দুস সামাদ সাহেবকে টপকিয়ে গৌরিপুর কলেজ স্থাপন করা হয়েছে। টাকা দিলেন ইলিয়টগঞ্জের লক্ষ ব্যবসায়ী মরহুম ফজলুর রহমান মুন্সী, তার নামে কলেজের নামকরণ করা হয় গৌরিপুর ফজলুর রহমান মুন্সী কলেজ, চতুর মোস্তাক নিজেকে প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে ঘোষণা দেন। কিন্তু নির্বাচনের জন্য টাকা কোথায়?
তখনই খন্দকার মোস্তাক রশীদ ভাইকে ডেকে পাঠান এবং প্রস্তাব দেন যে, ‘চাকরি করে কতটাকা রোজগার করবে, রাজনীতি কর। চাকরি ছেড়ে দাও আওয়ামী লীগে যোগদান কর, প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তোমাকে মনোনয়নের ব্যবস্থা করে দিব। বিনিময়ে আমার নির্বাচনী খরচ চালিয়ে সহযোগিতা কর।’ খন্দকার মোস্তাকের চেলাচামুন্ডরা তাঁকে জেঁকে ধরল, তিনিও চোখে রঙিন চশমা পরে স্বপ্ন দেখতে শুরু করলেন এবং চাকরি ছেড়ে দিয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করলেন।
আমি তখন চট্টগ্রামে রাঙ্গুনীয়া কলেজের বাংলার অধ্যাপক। ১৯৭০ খ্রি: ৭ মে বিয়ে করি। স্ত্রী বাড়ি থাকেন। এদিকে কলেজ পূজা-রোজা-নির্বাচন ইত্যাদি একনাগারে ৭২ দিন ছুটি। রাঙ্গুনীয়া থানার সি,ও (উন্নয়ন) এর বাড়ি কুমিল্লা, তাঁকে অনুরোধ করি- নির্বাচনের সময় থাকব না, আমাকে যেন কোনো দায়িত্ব দেয়া না হয়। তিনি আমার অনুরোধ রক্ষা করেছিলেন। বাড়িতে আছি, নির্বাচনী হাওয়া সারা থানায় বিকেল হলেই স্কুলে ও বাজারে চলে যাই। সে সময়ে প্রথম পরিচয় হয় রশীদ ভাই-এর সঙ্গে। নতুন নেতা হয়েছেন। স্বাস্থ্যহীন শরীরে পাঞ্জাবী ও মুজিব কোট, অত্যন্ত বেমানান। সংগতকারণে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে এবং আসন্ন প্রাদেশিক পরিষদের প্রার্থী বিবেচনায় বন্ধুত্ব ও ঘনিষ্ঠতা বাড়তে থাকে।
বলে রাখি- এ সম্পর্ক তাঁর মৃত্যু পর্যন্ত অটুট ছিল। আমি তাঁকে নানা কারণেই শ্রদ্ধা করতাম। অত্যন্ত সরল প্রকৃতির সহজ মানুষ ছিলেন। জনসেবা করার সকল গুণ তাঁর মধ্যে ছিল। তিনি মানুষের দু:খ কষ্ট বুঝতেন, পাশে গিয়ে দাঁড়াতেন। কিন্তু তেমনভাবে প্রতিবাদী ছিলেন না। আপসকামী মনোভাব নিয়ে সারাজীবন লোভ-লালসাকে দূরে ঠেলে রাখতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। একসময় কুমিল্লায় তাঁর দৃষ্টিনন্দন বাড়িটিও বেচে দিতে বাধ্য হন। সে অনেক কাহিনি।
আমরা সকলেই জানি, ১৯৭০খ্রি: নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়, ক্ষমতা হস্তান্তরের টালবাহানা এবং একসময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়ে যায়। সে সময়ে খন্দকার মোস্তাকের ভূমিকা আজ কলঙ্কের গুদাম ঘরে রক্ষিত আছে। রশীদ ভাই মুক্তিযোদ্ধা। দেশ স্বাধীন হলো, বঙ্গবন্ধু ১০ জানুয়ারি ১৯৭২খ্রি: মহানায়কের বেশে মহামানব মর্যাদায় দেশে ফিরে এলেন। খন্দকার মোস্তাক বরাবরই বঙ্গবন্ধুর কাছাকাছি থাকতেন। বঙ্গবন্ধু কেন জানি, সব জেনেশুনেও তাকে উপেক্ষা করতে পারেননি। খন্দকার মোস্তাক কেন্দ্রিয় নেতা, মন্ত্রী। কাজেই দাউদকান্দি থানার দেখভাল করার কথা রশীদ ভাই-র উপর  বর্তায়। দেখা গেল কুখ্যাত মোস্তাক তার দ্বিতীয় স্ত্রী, যিনি একজন নার্স ছিলেন, ইছাপুর গ্রামের চৌধুরী বাড়ির মেয়ে তার ছোট ভাই ফরাদ চৌধুরী বোনের সহযোগিতায় দাউদকান্দির সকল প্রশাসনিক কর্মকা-ের দ-মু-ের অধিকারী হয়ে বসে আছেন। রশীদ ভাই-এর কোনো পাত্তা নেই। খন্দকার মোস্তাকও আর তাঁকে চিনতে চায় না। বেইমান কারে কয় ? অবস্থাটা এমন যে রশীদ ভাই-এর দাউদকান্দিতে যাওয়াটাই হুমকি হয়ে দাঁড়াল। দু’একবার অপমাণিতও হতে হয়েছে। তখন জাসদের উত্থান ঘটতে শুরু করেছে, ফরাদ চৌধুরীর কর্মকা-ে ও খন্দকার মোস্তাকের প্রশ্রয়-আশ্রয়ে দাউদকান্দিতে আওয়ামী লীগের তখন বারোটা বেজে গেছে। রশীদ ভাই প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে কোনো আগ-পাছ বিবেচনা না করেই জাসদে যোগদান করলেন এবং জেলা কমিটির সভাপতি হলেন। এটা ছিল তাঁর প্রাণে বাঁচার জন্য রাজনৈতিক আশ্রয়। আমি তা শুনে কষ্ট পেলাম এবং ক্ষিপ্ত হয়ে বাদুরতলা বাসায় গিয়ে রীতিমত ঝগড়া শুরু করে দিলাম। সেদিন আমি তাঁকে ভুল বুঝেছিলাম। তিনি রাগান্বিত হলেন না। ছোট ভাই বিবেচনায় সান্ত¦না দিতে চেষ্টা করলেন, নিজের অবস্থা বা অস্তিত্বের বিষয়টি বুঝাতে চাইলেন। নিজের অসহায় বা নিরুপায় বিষয়টিও বর্ণনা দিলেন। অচিরেই আমার সকল অভিমান দূর হয়ে যায় এবং পরবর্তীতে আমরা সকলেই জানি ও দেখেছি যে রশীদ ভাই ছিলেন দাউদকান্দি থানার অবিসংবাদিত জনপ্রিয় নেতা এবং প্রতিটি নির্বাচনে তিনি অকুন্ঠ জনসমর্থন লাভ করেছিলেন।
তিনি তো রাজনীতিবিদ ছিলেন না, তাই নীতি আদর্শের বিষয়টি তাঁর কাছে তেমন উল্লেখযোগ্য ছিল না। তিনি ছিলেন জনদরদী আপনজন। তাই একসময় জাসদ ছেড়ে এরশাদের জাতীয় পার্টিতে যোগদান করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন, ছয়মাসের জন্য শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীও হয়েছিলেন। কোনোটাই ধারাবাহিকভাবে শৃঙ্খলাবদ্ধ ছিল না। পারিবারিক জীবনও স্বাভাবিক ছিল না। একজন নির্ভেজাল নিখাদ ভদ্রলোক। সকল শুভ যোগ্যতা থাকা সত্বেও আমাদের সমাজে অপাংক্তেয় হয়ে পড়েন, রশীদ ভাই হলেন প্রত্যক্ষ উদাহরণ। কারণ, আমি অতি কাছ থেকে তাঁকে দেখেছি। তিনি যখন মন্ত্রী হলেন, কুমিল্লায় বাদুরতলার বাসায় এলেন, খবর পেয়ে গেলাম, আমি তখন ভিক্টোরিয়া কলেজের শিক্ষক। আমাকে দেখেই বললেন, ‘ভাই, তুমি আমায় ভুল বুঝো না।’ আমি কিছু বলব বলে প্রস্তুতি নিয়ে গিয়েছিলাম, চুপ থাকলাম। মন্ত্রীত্ব যখন চলে গেলো, তিনি কুমিল্লায় এসে আমাকে খবর পাঠালেন। প্রথম ভাবলাম- যাব না। পরে গেলাম। গিয়ে দেখলাম- একজন বিধ্বস্ত দিশেহারা অপরিচিত রশীদভাই। জিয়া হত্যায় তাঁর মেয়ের জামাতার ফাঁসি হয়ে গেছে। দু’জন প্রায় আধঘন্টা চুপচাপ সামনাসামনি বসেছিলাম। পরে আমার হাতটি ধরলেন, আমি জড়িয়ে ধরে কেঁদে উঠলাম। এ দেখাই শেষ দেখা।
যেহেতু রাজনীতি করি না, তার প্রতি বিশ্বাসও রাখি না। তবে অভিজ্ঞতায় বুঝতে পারি- একবার এ পথে পা বাড়ালে আদর্শ বড় কথা নয়, নিজের জীবন বাঁচানোর জন্য কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের আশ্রয়ে থাকতে হবেই। একা চলার সুযোগ নেই।
এমনটি দেখেছি বন্ধু আফজল খানের বেলায়। ছাত্রজীবন থেকে আমৃত্যু একজন আওয়ামী লীগার হলেন তিনি। একবার, শুধুমাত্র একবার আদর্শচ্যুত হতে হয়েছিলেন প্রাণ বাঁচানোর জন্য। এরশাদ আমলে হত্যা মামলার আসামী করে ফাঁসিতে ঝুলানোর ভয় দেখিয়েছিল এরশাদ। তাই প্রাণরক্ষার্থে জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেছিলেন, এরশাদ তাঁকে উপজেলা চেয়ারম্যান বানিয়েছিল। যেদিন আফজল খান জাতীয় পার্টিতে যোগদান করেন সেদিন কুমিল্লা শহরে তা-ব লেগে যায়, আফজল খানের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়, চারদিক থেকে ঘৃণা জানানো হয়। এরশাদের পতনের পর তিনি আবার নিজের ঘরে ফিরে আসেন, কিন্তু সুবিধাবাদীরা তাঁকে পূর্বাবস্থায় বহাল হতে সুযোগ দেয়নি। বার বার ক্ষত স্থানে আঘাত দিয়েছে। আফজল খানের বহু দোষ, বহু অপূর্ণতা, বহু অসংগতি- তা মেনে নিয়েও আওয়ামী লীগার হিসেবে তাঁর যে অবদান, তাঁর মৃত্যুর পর কুমিল্লার জনগণ তা যথামর্যাদায় সম্মান জানিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে।
যারা আফজল খানকে প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করেছে, তারা তাঁকে বা তাঁর রাজনৈতিক জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে ঠিকই। কিন্তু তারা যে প্রকারান্তে আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে, তা কিছুতেই বুঝতে চাইবে না। সময় হয়ত এর উত্তর দিবে।
আফজল খান উপজেলার চেয়ারম্যান হলেন। এদিকে গোবিন্দপুরের মরহুম কাজী আবদুল হক একসময় কুমিল্লা পৌরসভার প্রশাসক হয়েছিলেন। তিনি যখন অবসরে গেলেন সামনে পৌরসভা নির্বাচন। কাজী আবদুল হক সাহেব চেয়ারম্যান প্রার্থী হিতে ইচ্ছুক। সেজন্য একদিন তিনি ঘরোয়াভাবে কয়েকজন নেতাকে দাওয়াত করলেন। হক সাহেবের ছোট ছেলে কাজী মনসুরুল হক আমার ছাত্র। বড় ছেলে কাজী শহীদুল হক সহপাঠী ও বন্ধু। তাদের পরিবারে ছোটখাট অনুষ্ঠানেও আমি নিমন্ত্রিত হই। আমি এই দাওয়াতে গিয়ে দেখি-  রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে মরহুম আবদুল আওয়াল, আবুল কালাম মজুমদার, আফজল খান..... প্রমুখ উপস্থিত। তাঁদের আলোচ্য বিষয় পৌরসভার নির্বাচন ও আফজল খানের তৎকালীন অবস্থান সম্পর্কে ব্যাখ্যা। তাঁদের একত্রে দেখে এবং আলোচ্য বিষয়ের ধারাপাতের অংকের হিসাব মিলানো দেখে প্রথম মনে মনে দ্বন্দ্ব-সংঘাত অনুভব করলেও পরে বুঝে গেলাম- ‘রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কোনো কথা নেই। রাজনীতিতে শত্রু-মিত্রের কোনো সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞাও নেই।’ শুধু হা-ডু-ডু খেলা। দম নিয়ে ছুঁয়ে স্থানে ফিরতে পারলেই নায়ক, ধরা খেলে আত্মসমর্পণ। একমাত্র কৌশলই বাঁচিয়ে রাখতে পারে। নান্দনিকতা বলে কিছু নেই। সেই আলোচনায় আমি শুধুমাত্র শ্রোতা এবং পর্যবেক্ষক ছিলাম।
এই ধারাবাহিকতায় কিছু কথা। ২০২২ খ্রি: কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হয়ে গেলো। হার জিতের খেলাটা অনেকটাই হা-ডু-ডু খেলার মতো হলো। ব্যক্তিশক্তি-সংঘশক্তি-কৌশলী কারিশমা এবং অনান্দনিক সিদ্ধান্ত সবই উপভোগ করা গেল। এ নিয়ে আমাদের কোনো কথা নেই, আমরা মেনে নিলাম। সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করেনি। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচন করতে গিয়ে প্রাক্তন মেয়র মনিরুল হক সাক্কু দল থেকে আজীবনের জন্য বহিস্কৃত হলেন, নিজাম উদ্দিন কায়সার সাময়িকভাবে বরখাস্ত, তা হয়ত মিটমাট হয়ে যাবে।
মনিরুল হক সাক্কু এখন দল ছাড়া, দল হারা স্বাধীন নিরপেক্ষ নাগরিক। পারিবারিকভাবে ও ব্যক্তিগতভাবে সাক্কু একজন আঞ্চলিক রাজনৈতিক নেতা। ঠিকানাহীন, অনুগতদের বিশ্বাসভাজন হিসেবে তাঁর একটি অবস্থান অবশ্যই আছে। কিন্তু পেছনে তো কোনো খুঁটি নেই। এখন তিনি কী করবেন। সময়ই বলে দিবে।
প্রশ্ন- জাতীয় পার্টির দরজাটা কুমিল্লার জন্য কত বড় তা জানি না। শুনতে পাই-তিনি নাকি একলা চলা নীতি গ্রহণ করতে চাচ্ছেন। কারণ, খেলাটা যে ‘হা-ডু-ডু’।












সর্বশেষ সংবাদ
শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি
অপরাধীদের খুঁজে বের করে বিচারের মুখোমুখি করুন : প্রধানমন্ত্রী
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
চিরচেনা রূপে অর্থনীতির লাইফলাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক
আহতদের চিকিৎসা ও রোজগারের ব্যবস্থা করবে সরকার
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
শিক্ষার্থীদের আমি রাজাকার বলিনি, বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী
কুমিল্লায় আট মামলায় গ্রেপ্তার দেড় শতাধিক
আবু সাঈদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন
গ্রেপ্তার বাড়ছে কুমিল্লায়
অফিসে হামলার সময় চেয়ে চেয়ে দেখলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft