মানুষের জীবনে যেমন
ভালো সময় আসে, অনেক খারাপ সময়ও আসে। অনেক আশাভঙ্গ ও অপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে
মানুষের জীবন এগিয়ে যায়। ইসলামের শিক্ষা হলো, ভালো ও খারাপ সব অবস্থায়
আল্লাহর ওপর ভরসা করা ও ধৈর্য ধারণ করা। আল্লাহ বলেছেন, তিনি তার বান্দাদের
ভয়, ক্ষুধা, জীবন ও সম্পদের ক্ষতির মাধ্যমে পরীক্ষা করবেন। এদের মধ্যে
ধৈর্যশীলরা সফল। আল্লাহ বলেন,
আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু
ভয়, ক্ষুধা, জীবন-সম্পদ ও ফল-ফলাদির স্বল্পতার মাধ্যমে। আর তুমি
ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। (সুরা বাকারা: ১৫৫)
১. ‘ইন্নালিল্লাহ’ পড়ুন
যে
কোনো বিপদ-আপদে ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ পড়ুন এবং এর
বক্তব্য মনে প্রাণে বিশ্বাস করুন যে আমরা আল্লাহর বান্দা এবং তার কাছেই
ফিরে যাবো। তাই আমাদের কর্তব্য তার সব সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নেওয়া। দুনিয়ার
জীবনের সব বিপদ-মসিবতের প্রতিদান তিনি এ জীবনে বা পরকালে অবশ্যই দেবেন।
আল্লাহ বলেন,
ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও; যারা কোনো বিপদে পড়লে বলে ওঠে
‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ অর্থাৎ আমরা সবাই আল্লাহরই এবং
আমাদেরকে তার কাছেই ফিরে যেতে হবে। (সুরা বাকারা: ১৫৫-১৫৬)
২. তকদিরে বিশ্বাস
তকদিরের
প্রতি ইমান দৃঢ় করুন। দুনিয়ার সব কিছুই আল্লাহর নির্ধারণ অনুযায়ী হয়। তিনি
সৃষ্টি করার সময়ই সব কিছুর ভাগ্যও নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ইবনে আব্বাস
(রা.) থেকে বর্ণিত, ‘যদি সবাই তোমার কোনো উপকারের উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হয়,
তাহলে ততটুকু উপকার করতে পারবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য লিখে
রেখেছেন। অন্যদিকে সবাই যদি তোমার কোনো ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে একতাবদ্ধ হয়,
তাহলে ততটুকু ক্ষতি করতে সক্ষম হবে, যতটুকু আল্লাহ তাআলা তকদিরে লিখে
রেখেছেন। কলম তুলে নেওয়া হয়েছে এবং লিখিত কাগজও শুকিয়ে গেছে। (সুনানে
তিরমিজি, হাদিস: ২৫১৬ )
৩. বিপদ অনেক সময় আশীর্বাদ হয়ে আসে
আমাদের
জীবনে এমন অনেক ঘটনা ঘটে, যা আপাতদৃষ্টিতে মসিবত মনে হলেও আল্লাহ তাতে অনেক
কল্যাণ রেখে দেন। ছোট বিপদ অনেক সময় বড় বিপদ ঠেকিয়ে দেয়। আল্লাহ চাইলে আরও
কত খারাপ কিছু হতে পারতো, তা চিন্তা করে এটা ভাবুন যে, হতে পারে এই ছোট
বিপদটি দিয়ে আল্লাহ আপনার জীবন থেকে অনেক বড় কোনো বিপদ দূর করে দিয়েছেন।
আল্লাহ বলেন,
হতে পারে কোন বিষয় তোমরা অপছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য
কল্যাণকর। আর হতে পারে কোন বিষয় তোমরা পছন্দ করছ অথচ তা তোমাদের জন্য
অকল্যাণকর। আর আল্লাহ জানেন এবং তোমরা জান না। (সুরা বাকারা: ২১৬)
৪. দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী নিবাস
এ
কথা চিন্তা করুন যে দুনিয়ার জীবন একেবারেই ক্ষণস্থায়ী। এ জীবনের লাভ বা
ক্ষতিও ক্ষণস্থায়ী। দুনিয়ার বিপদ-মসিবতে ধৈর্য ধারণ করতে পারলে পরকালে
আল্লাহর কাছে এর প্রতিদান পাওয়া যাবে এবং তা নিশ্চই দুনিয়ার সুখ-সমৃদ্ধির
চেয়ে অনেক উত্তম হবে। আল্লাহ বলেন,
সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দুনিয়ার
জীবনের শোভা। আর স্থায়ী সৎকাজ তোমার রবের নিকট প্রতিদানে উত্তম এবং
প্রত্যাশাতেও উত্তম। (সুরা ফুরকান: ৪২)