ফারজানা নামে
এক সহপাঠী মোহনাকে সঙ্গে নিয়ে প্রায় সময় স্কুলে যায়। তাই মঙ্গলবার (১৪
নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্কুলে যেতে মোহনার বাড়িতে যায় ফারজানা। ঘরের
দরজা খোলা দেখে সে ঘরে ঢুকে মোহনা ও তার মা-বোনকে আলাদা খাটে শুয়ে থাকতে
দেখে।
ডাকাডাকির পর সাড়া না পেয়ে ফারজানাকে ঘুম থেকে জাগাতে হাত ধরে
টানাটানি করে সে। কিন্তু এরপরও কোনো সাড়া মেলেনি। মোহনার মা-বোনের সাড়াশব্দ
না থাকায় ভয় পেয়ে যায় ফারজানা। সে ঘর থেকে বেরিয়ে প্রতিবেশীদের জানালে
তারা এসে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
পুলিশ এসে তাদের মরদেহ উদ্ধার
করে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একই এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে ছোটন
মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ এসব
তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনজন হলেন- হোসেনপুর উপজেলার শাহেদল ইউনিয়নের
বাসুরচর গ্রামের সৌদিপ্রবাসী মঞ্জিল মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা আক্তার (৩৫) এবং
তার দুই মেয়ে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মোহনা আক্তার (১১) ও প্রথম শ্রেণির
ছাত্রী বন্যা আক্তার (৭)।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের দিকে মঞ্জিল মিয়া
সংসারের অনটন ঘোচাতে কাজের সন্ধানে সৌদি আরবে পাড়ি জমান। তাদের পরিবারের
সঙ্গে কারও কোনো বিরোধের দৃশ্যমান কোনো ঘটনা নেই। এমন নিষ্ঠুর-নৃশংস ঘটনায়
এলাকাবাসী হতবাক ও স্তম্ভিত।
পুলিশ সুপার বলেন, নিহতের স্বামী মঞ্জিল
মিয়া সৌদি প্রবাসী বলে জানতে পেরেছি। প্রতিবেশীদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি,
এর মধ্যে তিনি দেশেও আসেননি। নিহতের স্ত্রী তাসলিমা একাই বাড়িতে বাচ্চাদের
নিয়ে বসবাস করতেন। তাই সবদিক বিবেচনা করে কীভাবে এ ঘটনা ঘটেছে তা জানার
চেষ্টা করা হবে। সিআইডি, পিবিআই ও গোয়েন্দা পুলিশ এ বিষয়ে কাজ করছে।
ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহের কাজ চলছে।
রাসেল শেখ আরও বলেন, ঘরের ভেতরে
আসবাবপত্র এলোমেলো বা জবরদস্তি করার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। দরজা ভেতর
থেকে বন্ধ ছিল না, খোলা ছিল। নিহতের বড় মেয়ে মোহনার বান্ধবী তাকে খুঁজতে
এসে দরজা ধাক্কা দিলে ঘটনাটি সামনে আসে। তবে তাদের মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের
কাছে স্বাভাবিক মনে হয়নি। আবার এটি হত্যাকাণ্ড না সুইসাইড এটি বলার মতো
আলামত এখনো পাওয়া যায়নি।