বৃহস্পতিবার ৭ ডিসেম্বর ২০২৩
২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
বিয়ের পরদিন বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল পুলিশ কর্মকর্তার
প্রকাশ: বুধবার, ৪ অক্টোবর, ২০২৩, ১১:০৪ এএম |

বিয়ের পরদিন বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল পুলিশ কর্মকর্তারহাতে মেহেদির গাঢ় রং। নববধূর সঙ্গে কাটিয়েছেন মাত্র কয়েক ঘণ্টা। এরই মধ্যে একটি ঘাতক বাস শেষ করে দিল নবদম্পতির সংসার। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর সরকারি কলেজ সংলগ্ন তেল পাম্পের সামনে ঘোড়াঘাট-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে একটি যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় নিহত হন নববিবাহিত পুলিশ কর্মকর্তা জহুরুল ইসলাম (৩৮)।  


মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে নিহতের মরদেহ নিজ বাড়িতে এলে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশের পরিবেশ। বিয়ের কয়েক ঘণ্টার মাথায় স্বামীকে হারিয়ে নির্বাক নববধূ ও তার পরিবারের লোকজন।এদিন একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নিহত পুলিশ কর্মকর্তার বন্ধু মোনাইম হোসেন সুজন (৪০)।

নিহত জহুরুল ইসলাম ফুলবাড়ী উপজেলার লক্ষ্মীপুর জয়নগর গ্রামের আফার উদ্দিনের ছেলে। দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার বড়। তিনি নীলফামারীর ডিএসবির জলঢাকা জোনে উপ পরিদর্শক (এসআই) পদে কর্মরত ছিলেন। তার বন্ধু মোনাইম খয়েরবাড়ি মির্জাপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি ফুলবাড়িতে একটি ওষুধ কোম্পানির রিপেজেন্টিভ হিসেবে কর্মরত ছিলেন।


পরিবার ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিয়ে করতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর ৭ দিনের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন জহুরুল। সোমবার (২ অক্টোবর) রাতে ফুলবাড়ী উপজেলার এলুয়াড়ী ইউনিয়নের বানাহার গ্রামের রুমা আক্তারের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকালে বন্ধু সুজনকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে রাজশাহীর বিশেষ দায়রা জজ জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের একটি মামলার সাক্ষ্য দিতে যান তিনি। সাক্ষ্য শেষে বাড়ি ফিরছিলেন তারা। পথে বিরামপুর সরকারি কলেজ সংলগ্ন তেল পাম্পের সামনে ঘোড়াঘাট-দিনাজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে দিনাজপুর থেকে ছেড়ে আসা নওগাঁগামী ওমর ফারুক পরিবহন নামে একটি যাত্রীবাস তাদের মোটসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে জহিরুল ও সুজন ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তাদের দুইজনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ঘাতক বাসটিকে জব্দ করেছে পুলিশ।


জহুরুলের চাচাতো ভাই নওশাত আলম বলেন, ভাই গত পরশুদিন বিয়ে করতে বাড়িতে এসেছিলেন। গায়ে হলুদের দিন ভাইয়ের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। রাতে বিয়ে করে সকালে তিনি মামলার সাক্ষ্য দিতে রাজশাহী গিয়েছিলেন। ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। পরিবারের কারোই কথা বলার মতো অবস্থা নেই।

বিরামপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. সামসুজ্জামান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মাথা এবং শরীরের বিভিন্নস্থান থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে মৃত্যু হয়েছে।

বিরামপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুব্রত কুমার সরকার বলেন, ঘাতক বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

জলঢাকা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুক্তারুল আলম বলেন, তিনি খুব ভালো মনের একজন মানুষ ছিলেন। বিয়ে করতে ৭ দিনের ছুটিতে ছিলেন। এর মাঝে একটি মামলার সাক্ষী দিতে রাজশাহী গিয়ে ফেরার পথে নিহত হন। এভাবে অকালে একটি প্রাণ চলে গেল।

নীলফামারীর পুলিশ সুপার গোলাম সবুর বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক। তিনি সাত দিনের ছুটিতে থাকা অবস্থাও পেশাগত দায়িত্ববোধের কারণে আদালতে সাক্ষ্য দিতে যান। ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান। আমরা তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করছি এবং তার আত্মার শান্তি কামনা করছি। একই সঙ্গে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।












সর্বশেষ সংবাদ
কার সঙ্গে কার লড়াই
সবার জন্য হেলথ কার্ড
ভোটাররা চেনেন না তবুও তাঁরা প্রার্থী
লুটনকে হারিয়ে শীর্ষস্থান মজবুত করলো আর্সেনাল
আরও একবছর বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে কাবরেরা
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
দীর্ঘ ৩৪ বছর প্রবাস জীবন শেষে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন আবু হানিফ
প্রার্থীতা ফিরে পেতে কুমিল্লার তিন জনের আপিল
কাল থেকে কুমিল্লায় বিকাশ-এর আয়োজনে তিন দিনের পেমেন্ট মেলা
৩৩৮ থানার ওসিকে বদলির তালিকা ইসিতে
সোনার দাম ভরিতে কমলো ১৭৫০ টাকা
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft