বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪
৭ কার্তিক ১৪৩১
স্ত্রীর কিডনিতে নতুন জীবন জহিরুলের
প্রকাশ: সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩, ১:১০ পিএম |

স্ত্রীর কিডনিতে নতুন জীবন জহিরুলেরছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোণার পূর্বধলা উপজেলার হিরণপুর বাজার এলাকায় বাসিন্দা জহিরুল হক ওরফে জুনাইদ। বয়স ৩৯। দীর্ঘদিন ধরে মাথা ঝিমঝিম ও উচ্চ রক্তচাপসহ নানা সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। একপর্যায়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন জহিরুল। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধরা পড়ে তার দুটি কিডনিই বিকল। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও মিলছিল না কিডনি। তখন এগিয়ে আসেন তার স্ত্রী সায়মা জাহান ওরফে পলি। স্ত্রীর দেওয়া কিডনিতে এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন জহিরুল হক। বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন এই দম্পতি। তাদের পাঁচ বছর বয়সী একটি কন্যাসন্তান আছে।
জহিরুল হক রাষ্ট্রবিজ্ঞানে পড়াশোনা শেষ করা একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। তার স্ত্রী সায়মা জাহান নেত্রকোণা সরকারি কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন। 

জানা গেছে, ছয় বছর আগে সায়মার সঙ্গে জহিরুল হকের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তারা ঢাকায় থাকতেন। গত বছরের ২৭ মে জহিরুল ছুটি নিয়ে গ্রামের বাড়িতে আসেন। ওই দিন উচ্চ রক্তচাপসহ নানা সমস্যায় অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তাকে নেত্রকোণা আধুনিক সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা করার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার কিডনির রোগ ধরা পড়ে। এরপর ময়মনসিংহ ও ঢাকার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমশ অবনতির দিকে যাচ্ছিল।

স্বজনরা জানান, মাসখানেক আগে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন জহিরুল। ঢাকায় চিকিৎসকের কাছে নেয়ার পর তিনি বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বলেন। পরীক্ষায় জানা যায়, তার দুটি কিডনি বিকল হয়ে গেছে। রোগীকে বাঁচাতে হলে অন্তত একটি কিডনির প্রয়োজন। এরপর বিভিন্ন কিডনি ব্যাংকে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কোথাও কিডনি মেলেনি। পরে পরীক্ষা করার পর জহিরুলের সঙ্গে স্ত্রী সায়মার কিডনি মিলে যায়। তিনি স্বামীর জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দেন। গত ৫ সেপ্টেম্বর বিএসএমএমইউ হাসপাতালে তার কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয়। ওই হাসপাতালের সপ্তম তলায় নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিসিইউ) চিকিৎসাধীন জহিরুল। সায়মা জাহানকে গত শনিবার ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

জহিরুলের ছোট ভাই আশিকুল হক পুলিশের এসআই। তিনি বলেন, ভাবি এখন কিছুটা সুস্থ। চিকিৎসকের পরামর্শে তিনি হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন। ভাইয়ের অবস্থাও ভালোর দিকে। 

ভাবির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা ভাই হয়ে যা পারিনি, ভাবি পেরেছেন। তাকে কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই। সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করি, উভয়েই যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। আপনারাও দোয়া করবেন।

জহিরুলের স্ত্রী সায়মা জাহান বলেন, স্বামীকে নিজের কিডনি দিতে পেরে আমি গর্বিত। তিনি (স্বামী) কখনো বলেননি, আমি নিজের ইচ্ছায় কিডনি দিয়েছি। তিনি সুস্থতার দিকে যাচ্ছেন, এটা দেখে খুবই ভালো লাগছে। এখন বাঁচলে দুজনে বাঁচব, মরলে দুজনে মরব।

পূর্বধলার নারানদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল কুদ্দুস ব্যাপারী বলেন, সায়মা নিজের কিডনি স্বামীকে দিয়ে এলাকায় প্রশংসায় ভাসছেন। এটি সত্যিই বিরল উদাহরণ। 












সর্বশেষ সংবাদ
নতুন বইয়ের বর্ণিল নতুন বছর
নৌকায় ভোট নিতে ভাতার কার্ড আটকে রাখার অভিযোগ
শান্তির নোবেলজয়ী থেকে দণ্ডিত আসামি
শ্রমিক ঠকানোর দায়ে নোবেলজয়ী ইউনূসের ৬ মাসের সাজা
ইস্টার্ন মেডিকেল কলেজ, কুমিল্লা অধ্যক্ষ পদে অধ্যাপক ডাঃ রুহিনী কুমার দাস এর দায়িত্ব গ্রহণ
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই বন্ধু নিহত
বরুড়ায় শ্রমিকদল নেতাকে ছুরিকাঘাত
অর্ধেক দামে ফ্রিজ বিক্রি করছেন ফ্রিজ প্রতীকের প্রার্থী
বাড়ির জন্য কেনা জমিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মারা যাওয়া একই পরিবারের ৪ জনের কবর
৫৫ কেজি সোনা চুরি, ফের রিমান্ডে দুই রাজস্ব কর্মকর্তা
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২