চলতি
সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম ১৫ দিনে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ৭৩
কোটি ৯৯ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। অর্থাৎ দৈনিক গড়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৪
কোটি ৯৩ লাখ ৩২ হাজার মার্কিন ডলার। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে
রেমিট্যান্সের পরিমাণ দাঁড়াবে ১৪৮ কোটি ডলার, যা আগের মাসের চেয়ে অন্তত ১১
কোটি ডলার কম। রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ
প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে
দেখা গেছে, গত তিন মাসের (১৫ জুন-১৫ সেপ্টেম্বর) ব্যবধানে রেমিট্যান্স
প্রায় অর্ধেকে নেমেছে। চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে প্রতিদিন রেমিট্যান্স
এসেছে গড়ে ৫ কোটি ২৭ লাখ ডলার করে। অর্থাৎ প্রবাসীরা চলতি মাসের প্রথম ৭
দিনে ৩৬ কোটি ৮৮ লাখ মার্কিন ডলার পাঠিয়েছেন। আর জুলাইয়ের প্রথম তিন
সপ্তাহে দৈনিক রেমিট্যান্স এসেছে গড়ে পৌনে ৭ কোটি ডলার করে। তার আগের মাস
জুনে প্রবাসীরা প্রতিদিন পাঠিয়েছিলেন গড়ে ৭ কোটি ৩৩ লাখ ডলার করে। ওই মাসে
প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। অবশ্য আগস্ট মাসে
প্রবাসীরা দেশে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স
পাঠিয়েছেন, যা গত ছয় মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ।
চলতি (সেপ্টেম্বর) মাসে
রেমিট্যান্সের প্রবাহ আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের
কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, হুন্ডিতে রেমিট্যান্স বেশি আসায় ওইসব ডলার চলে
গেছে কার্ব মার্কেট বা খোলা বাজারে। এতে কার্ব মার্কেটে ডলারের সরবরাহ
বেড়েছে। একইসঙ্গে চাহিদা ও দাম বেড়েছে।
উল্লেখ্য, কার্ব মার্কেটে প্রতি
ডলারের দাম এখন ১২০ টাকা। যদিও ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে পাঠানো
রেমিট্যান্সের প্রতি ডলারের বিপরীতে প্রবাসীরা প্রণোদনাসহ সর্বোচ্চ ১১২
টাকা ২৪ পয়সা পাচ্ছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে,
মাসের প্রথম ১৫ দিনে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৬
কোটি ৬৪ লাখ ডলার। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৫ কোটি ৭ লাখ ১০
হাজার ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে এক কোটি ৯৮ লাখ ৮০
হাজার মার্কিন ডলার। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ২৯ লাখ ৯০
হাজার মার্কিন ডলার।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে রেমিট্যান্স
এসেছে ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার এবং আগস্টে রেমিট্যান্স এসেছে
১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার। এক মাসের ব্যবধানে রেমিট্যান্স
কমেছে ৩৭ কোটি ৩৭ লাখ মার্কিন ডলার।
বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট
রেমিট্যান্স এসেছে ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। আগের ২০২১-২০২২
অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার।
২০২০-২১ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ হয়েছিল, যার পরিমাণ ছিল ২
হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার।
এদিকে গত ৫ সেপ্টেম্বর দেশের
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৩১৮ কোটি ডলার। এরপর এশিয়ান ক্লিয়ারিং
ইউনিয়নের (আকু) জুলাই ও আগস্ট মাসের আমদানি বিল ১৩১ কোটি ডলার পরিশোধ করে
বাংলাদেশ। ফলে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের
রিজার্ভ নেমে দাঁড়ায় ২ হাজার ১৭১ কোটি ডলারে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের
হিসাব পদ্ধতি অনুযায়ী, বর্তমানে রিজার্ভ ২ হাজার ৭৬৩ কোটি ডলার।