নিজস্ব
প্রতিবেদক: সাবেক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের টাকা
লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ তুলে কুমিল্লা সদর আসনের এমপি ও মহানগর আওয়ামী
লীগের সভাপতি হাজী আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার বলেছেন, সাক্কুকে তার কৃতকর্মের
ফল ভোগ করতে হবে। হেতে বলেÑ তে চোর হলে বলে আমিও চোর! কয় কী?
তিনি
বলেন, আমি কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন করেছিলাম, সে (সাক্কু) আমার সিটি
কর্পোরেশন ধ্বংস করে দিয়েছে। মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্ল্যান পাশ
করেছে। দশ তলা, বিশতলা বিল্ডিং এখন মানুষের কাঁধের উপর তুলে দিয়েছে। উনি
আমার উন্নয়ন দেখে না, দেখে শুধু মাল (টাকা)। বৃহস্পতিবার আসলে উনি (সাক্কু)
বস্তা ভরে নিয়ে যেতো। প্রতি বৃহস্পতিবার যখন ঢাকা যেতো তখন সিটি
কর্পোরেশন থেকে একটা বস্তা নিয়ে যেতো।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে
কুমিল্লা নগরীর ১৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে
এমপি বাহার এসব কথা বলেন। সম্মেলনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন কুমিল্লা
সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক
রিফাত।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি বাহার বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিকল্প
বাংলাদেশে নাই। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গরিব মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে তিনি
কাজ করে যাচ্ছেন।’
কুমিল্লায় উন্নয়ন কর্মকা- নিয়ে বলতে গিয়ে এমপি বাহার
বলেন, ‘আকবর হোসেন তো মন্ত্রী ছিলেন- উনি তো সিটি কর্পোরেশন করেন নাই। আমি
সিটি কর্র্পোরেশন করে দিয়েছি। সিটি কর্পোরেশন হওয়ার কারণেই আপনারা এই
জায়গায় বসে মিটিং করেন, না হয় -এখানে গর্ত থাকতো। সাক্কু সাহেব মনে হয় দেখে
না কিছু। আমি তো সিটি কর্পোরেশন করে দিয়েছি- অন্যসব কাজ বাদ দাও। আমার
মনে হয় সুযোগ পেলে সাক্কু বলবে- শাসনগাছা ফ্লাইওভারটা আকবর ভাই করে দিয়েছে।
সে এখন বলে- আপনি তো কোন ব্রীজ করলেন না, পুল করলেন না, কিছু করলেন না।
আমি টিক্কারচর ব্রীজ করেছি, শাসনগাছা ব্রীজ করেছি- উনি দেখে এসব দেখে না।
উনি দেখে শুধু মাল(টাকা)। বৃহষ্পতিবার আসলে উনি বস্তা পুরে নিয়ে যেত, আজকেও
তো বৃহষ্পতিবার। বৃহষ্পতিবার আসলে ঢাকা যখন যেতো তখন সিটি কর্পোরেশন থেকে
একটা বস্তা নিয়ে যেতে। ’
‘আমার সিটি কর্পোরেশন ধ্বংস করে দিয়েছে। আমি
যে মানুষের জন্য সিটি কর্পোরেশন করেছিলাম- আমার কুমিল্লার সাধারণ মানুষ এর
সুফল ভোগ করবে। গরীব মানুষ এর ফসল ভোগ করবে - এর কোন সুযোগ নাই। ভোগ করেছে
বড় বড় মানুষেরা। যাদের কাছ থেকে উনি(সাক্কু) টাকা নিয়েছে- দশ তলা, বিশ তলা
বিল্ডিং এখন কাঁধের উপর তুলে দিয়েছে। এই জায়গায় এখন যত লোক আছে- তার চেয়ে
বেশি লোক হলে ধাক্কাধাক্কি হবে, তেমনি- কুমিল্লা শহরে যত লোক বসবাস করা
দরকার ছিলো- তার চেয়ে বেশি লোক দশ তালা, চৌদ্দ তালা করে ভাড়া দিছে।’
এমপি
বাহার বলেন, ‘সে টাকা নিয়ে নিয়ে প্ল্যান পাশ করেছে। এখন বলে- আমি যদি চোর
হই হজ্জ্ব করলেন কিভাবে? আরে কি বলে ! আমি আর সে কি এক টীমে গেছি? কে কোন
নিয়তে হজ্জ্ব করতে গেছে- আল্লাহই জানে। কে চুরি করে হজ্জ্ব করতে গেছে- আর
কোন নিয়তে গেছে? বলে- আমি যদি চুরি করি হজ্জ্ব করলেন কিভাবে? আরে উনি কি
আমার সাথে গিয়েছেন? মদিনায় উনার সাথে আমার দেখাও হয় নাই, মক্কায় আমি যেই
হোটেলে ছিলাম- উনিও এই হোটেলে আসছেন। এই হলো উনার সাথে আমার হজ্জ্বে দেখা।’
সাক্কুকে
উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, ‘দুর্নীতি করতে করতে এত পাকনা হয়েছেন উনি-
দুর্নীতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য হজ্জ্বটারেও বিক্রি করে ফেলেছে। আ ক ম
বাহাউদ্দিন বাহার ৫০ বছর রাজনীতি করে- ৫০ বছরে কেউ যদি বলতে পারেন কারো কাছ
থেকে এক টাকা নিয়েছি তাহলে রাজনীতির মাঠ থেকে চলে যাবো। সততা এবং নিষ্ঠার
সাথে রাজনীতি করি। মানুষের জন্য রাজনীতি করি। কল্যানের জন্য রাজনীতি করি।
এই সিটি কর্পোরেশনকে আমি করেছিলাম আমার সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন
আনার জন্য। কিছুই হয় নাই। লুটপাট হয়েছে- টাকা পকেটে নিয়ে বের হয়ে গেছে।’