নির্বাচন
কমিশনের (ইসি) চূড়ান্ত নিবন্ধন পেয়েছে ৬৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থা। এই
সংস্থাগুলো দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে পারবে বলে জানিয়েছে
সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। একইসঙ্গে পর্যবেক্ষক সংস্থা বাড়াতে নতুন করে
আবেদনও আহ্বান করেছে ইসি। বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে
বিষয়টি জানিয়েছে কমিশন।
ইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৬৬টি সংস্থাকে পরবর্তী
পাঁচ বছরের জন্য নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। অর্থাৎ তাদের মেয়াদকাল হচ্ছে ২০২৩
সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৮ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।
ইসি
কর্মকর্তারা জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ১৯৯টি ও পরে ১১টি, অর্থাৎ মোট
২১০টি সংস্থা পর্যবেক্ষক হওয়ার আবেদন জানায়। গত ৮ আগস্ট প্রাথমিক বাছাইয়ে
উত্তীর্ণ ৬৮টি সংস্থার তালিকা প্রকাশ করে আপত্তি আহ্বান করে সংস্থাটি।
জানা
গেছে, প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা ৬৮টি বেসরকারি সংস্থার মধ্য রূপনগর শিক্ষা
স্বাস্থ্য সহায়তা ফাউন্ডেশন রিহাফ ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কমিশনের চূড়ান্ত
নিবন্ধন পেতে বঞ্চিত হয়েছে। তাদের কিছু শর্ত দিয়েছে ইসি। সেটা পূরণ করলে
তাদেরও নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে ইসি সূত্রে জানা গেছে।
২০০৮
সাল থেকে ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক নিবন্ধন দিচ্ছে ইসি। সে সময়
১৩৮টি সংস্থা নিবন্ধন পেয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৮ সালে ১১৮টি সংস্থাকে নিবন্ধন
দিয়েছিল ইসি। ওই সংস্থাগুলোর পাঁচ বছরের মেয়াদ গত ১১ জুলাই শেষ হয়েছে।
ইসির
নিবন্ধন পাওয়া ৬৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থা হচ্ছে—মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন
সংস্থা (মওসুস), সেবা সোশ্যাল ফাউন্ডেশন, অগ্রদূত সংস্থা (এএস),
অ্যাক্টিভিটি ফর রিফরমেশন অব বেসিক নিডস (আরবান), হাইলাইট ফাউন্ডেশন, মুভ
ফাউন্ডেশন, ডেমোক্রেসি ওয়াচ, জানিপপ-জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদ,
ডিসঅ্যাবিলিটি ইনকুজিশন অ্যাক্টিভিটিস (দিয়া), আজমপুর শ্রমজীবী উন্নয়ন
সংস্থা (আসাস), আব্দুল মোমেন মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন, এসডাপ, বিবি আছিয়া
ফাউন্ডেশন, লুৎফর রহমান ভূঁইয়া ফাউন্ডেশন (এলআরবি), সমাজ উন্নয়ন প্রয়াস,
যুব উন্নয়ন সংস্থা, শিশু প্রতিভা বিকাশ কেন্দ্র (এসপিবিকে), বঞ্চিতা সমাজ
কল্যাণ সংস্থা, কেরানীগঞ্জ হিউম্যান রিসোর্সেস ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি, এস কে
কল্যাণী ফাউন্ডেশন, সোসাইটি ফর সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট অব রুর্যাল পিপল
(সার্প), সেতু রুর্যাল ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (এসআরডিএস), সোসাইটি ফর
ট্রেনিং অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন (স্টার), রুর্যাল অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল
অ্যাডভান্সমেন্ট (রাসা), ডেভেলপমেন্ট হেল্পিং কি (ডিএইচকে), তালতলা যুব
উন্ন্নয়ন সংগঠন (টাইডা), স্বাস্থ্য শিক্ষা সেবা ফাউন্ডেশন (সেফ), বাঁচতে
শেখা, ডপস ফাউন্ডেশন, অ্যাসোসিয়েশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অব বাংলাদেশ,
ইনস্টিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি), ভলান্টারি
অর্গানাইজেশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট (ভোসড), ক্রিয়েটিভ সোশ্যাল
ডেভেলপমেন্ট সেন্টার (সিএসডিসি), জেন্ডার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট
ম্যানেজমেন্ট সোসাইটি (জেমস)।
ডেপ (ডেভেলপমেন্ট এডুকেশন অ্যান্ড পিস),
বেসিক হিউম্যান রাইটস ভয়েস, সমাজ উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (এসপিকে),
রাজবাড়ী উন্নয়ন সংস্থা (রাস), ডেভেলপমেন্ট পার্টনার (ডিপি), গরীব উন্নয়ন
সংস্থা (জিইউকে), সমাহার-মাল্টি ডিসিপ্লিনারি রিচার্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট
ফাউন্ডেশন, সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা (সাস), হাফেজ্জী চ্যারিটেবল সোসাইটি ফর
বাংলাদেশ, ডেভেলপমেন্ট অব মহিলা সোসাইটি (ডিএমএস), সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট
অর্গানাইজেশন (এসডিও), সোশ্যাল ইকুয়ালিটি ফর ইফেক্টিভ ডেভেলপমেন্ট (সীড),
ইন্টিগ্রেটেড সোসাইটি ফর রেইজ অব হোপ (রিশ), সমন্বিত নারী উন্নয়ন সংস্থা
(এস.এস.ইউ.এস), পল্লী একতা উন্নয়ন সংস্থা (রুডো), শিল্ড-সোসাইটি ফর
হিউম্যান ইম্প্রুভমেন্ট অ্যান্ড লাস্টিং ডেভেলপমেন্ট, সেঁজুতি হেলথ অ্যান্ড
এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সিডফ), এসো জাতি গড়ি (এজাগ), ওয়াসভা,
সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট অ্যান্ড কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (সাকো), ফোরাম
ফোর ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (এফএফডিএ), প্রকাশ গণকেন্দ্র, রুর্যাল
অ্যান্ড আরবান ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (রাউডো), সার্ভিসেস ফর ইকুইটি
অ্যান্ড ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (সীড), তৃণমূল উন্নয়ন সংস্থা, হিউম্যান
ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি-হিডস, রুর্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট কমিটি ফর
বাংলাদেশ, গ্রাম উন্নয়ন কর্ম (গাক), ইকো-কনসার্ন অ্যাসোসিয়েশন, গণউন্নয়ন
কেন্দ্র এবং এসো বাঁচতে শিখি (এবাস)।
ইসি সূত্র জানায়, নবম জাতীয় সংসদ
নির্বাচনের আগে ২০০৮ সালে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধনের পদ্ধতি
চালু করা হয়। বিষয়টি জাতীয় নির্বাচন সংক্রান্ত আইন গণপ্রতিনিধিত্ব
অধ্যাদেশে সংযোজন করা হয় এবং ইসি একটি স্থানীয় পর্যবেক্ষক নীতিমালা তৈরি
করে। ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো ১৩৮টি সংস্থাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিবন্ধন
দিয়েছিল ইসি। এরমধ্যে ৭৫টি সংস্থার ১ লাখ ৫৯ হাজার ১১৩ জন পর্যবেক্ষক নবম
জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয়
সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ছিল ৮১টি দেশীয় পর্যবেক্ষক সংস্থা।
নতুন করে আবেদন চেয়েছে ইসি:
জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে আরও পর্যবেক্ষক নিতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ জন্য ২৪
সেপ্টেম্বরের মধ্যে আবেদন আহ্বান করেছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। এখন প্রথম
ধাপে নিবন্ধন না পাওয়া পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো চাইলেই ইসির নিবন্ধনের জন্য
আবেদন করতে পারবে।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে
নিবন্ধনে আগ্রহী বেসরকারি সংস্থাকে আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর বিকাল ৪টার মধ্যে
নির্ধারিত ফরমে সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়, আগারগাঁও, ঢাকা বরাবর আবেদন
দাখিল করতে হবে। আবেদন ফরম নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের জনসংযোগ শাখায় (কক্ষ
নং-১০৫) এবং নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট যঃঃঢ়://িি.িবপং.মড়া.নফ/তে পাওয়া
যাবে।