
গাজীপুরের
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগারে এক হাজতিকে নির্যাতনের অভিযোগে যুব
মহিলা লীগের বহিস্কৃত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়াকে কুমিল্লা কেন্দ্রীয়
কারাগারে আনা হয়েছে। সোমবার (৩ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টায় তাকে কুমিল্লায় নিয়ে
আসা হয়। কুমিল্লা কারাগারের একতলা ভবনের মহিলা ওয়ার্ডের গোলাপ কক্ষে আছেন
তিনি। কারাগারের নারী কারারক্ষীরা সার্বক্ষণিক তাকে নজরদারি রেখেছেন।
২৭
বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি পাপিয়াকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে
কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা
কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ- আল- মামুন।
তিনি
জানান, সোমবার রাতে তাকে কুমিল্লা কারাগারে আনা হয়েছে। আনার পর তাকে আমরা
অন্য কয়েদিদের সঙ্গেই রেখেছি। যেহেতু একটি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে
কুমিল্লায় আনা হয়েছে, তাই তাকে বিশেষ নজরে রাখা হবে-যেন আর কোন অভিযোগ না
ওঠে।
এর আগে কাশিমপুর কারাগারে ছিলেন পাপিয়া। সেখানে এক নারী বন্দীর ওপর
নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। এর পরপরই তাঁকে কুমিল্লা কারাগারে
পাঠানো হলো। কুমিল্লা কারাগারের যেই ওয়ার্ডে পাপিয়াকে রাখা হয়েছে ওই
ওয়ার্ডে ৪০ থেকে ৫০ জন নারী বন্দী আছেন। নারী কারারক্ষীরা তাঁর ওপর কঠোর
নজরদারি রেখেছেন। অন্য নারী বন্দীদের সঙ্গেই আছেন পাপিয়া।
আবদুল্লাহ আল
মামুন জানিয়েছেন, গতকাল সোমবার রাত সাড়ে নয়টায় শামীমা নূর পাপিয়াকে
গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় মহিলা কারাগার থেকে প্রিজন ভ্যানে করে
কুমিল্লায় আনা হয়। এরপর তাঁকে মহিলা ওয়ার্ডে গোলাপ কক্ষে অন্য নারী
কারাবন্দীদের সঙ্গে রাখা হয়। সেখানে তিনি অন্য বন্দীদের মতো স্বাভাবিক
আছেন। কারাগারের নারী কারারক্ষীরা সার্বক্ষণিক সেখানে নজরদারি রেখেছেন।
কারাগার
সূত্রে জানা গেছে, জেলবিধি অনুযায়ী পাপিয়াকে কারাগারে কাজ করতে হবে।
গাজীপুরে পাপিয়া রাইটারের কাজ করতেন। কুমিল্লায় তাঁকে কী ধরনের কাজ করতে
হবে, তা এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। জ্যেষ্ঠ জেল সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন
ছুটিতে আছেন। তিনি আগামী শনিবার কর্মস্থলে ফিরবেন। রোববার পাপিয়াকে কাজ
দেওয়া হবে।
কারা কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪০ মাস পাপিয়া
কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন। ২৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি
হিসেবে জেলবিধি অনুযায়ী তাঁকে ‘রাইটার’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। রুনা লায়লা
নামের এক হাজতিকে পাপিয়া সম্প্রতি নির্যাতন করেন। তাঁর কাছ থেকে টাকা
ছিনিয়ে নেন। এ নিয়ে কারাগারের ভেতরে সালিস বৈঠক বসে। বিষয়টি নিয়ে রুনার ছোট
ভাই আবদুল করিম গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে এ
ঘটনায় গঠন করা হয় দুটি তদন্ত কমিটি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি
স্বামী মফিজুর রহমানসহ পাপিয়া দম্পতিকে আটক করা হয়। অস্ত্র আইনের মামলায়
পাপিয়া ও তাঁর স্বামীকে ২৭ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
