বর্তমান অর্থবছরের
সংশোধিত বাজেটে যেখানে নির্বাচন কমিশনের বরাদ্দ ১ হাজার ৪২৩ কোটি টাকা,
সেখানে আসছে অর্থ বছরে তা দাঁড়াচ্ছে ২ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা।
আসছে অর্থ
বছরে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, আর সেই কারণে খরচ বাড়বে বলেই
বরাদ্দ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।
অর্থমন্ত্রী আ
হ ম মুস্তফা কামাল বৃহস্পতিবার সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের জন্য ৭ লাখ ৬১
হাজার কোটি টাকার যে বাজেট প্রস্তাব করেছেন, তাতে ইসির জন্য বরাদ্দ রাখা
হয়েছে ২ হাজার ৪০৬ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ বরাদ্দ ৭০ শতাংশের মতো বাড়ছে।
ইসির
এ বাজেটের বড় অংশ ব্যয় হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন, সিটি করপোরেশন ও সাড়ে
চার শতাধিক উপজেলা পরিষদের সাধারণ নির্বাচনে। এছাড়া অন্য কিছু নির্বাচনও
রয়েছে।
নতুন অর্থ বছরের জন্য ইসির বরাদ্দের মধ্যে পরিচালন খাতে ২ হাজার
১২৪ কোটি ৪ লাখ টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ২৮২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা রাখা হয়েছে।
বরাদ্দের প্রধান প্রধান খাতের মধ্যে রয়েছে
# দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ অন্যান্য নির্বাচন
# ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদকরণে
# পেপার লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র প্রস্তুত, মুদ্রণ ও বিতরণ এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান
# প্রবাসে থাকা বাংলাদেশি নাগরিকগণদের প্রবাসেই নিবন্ধনকরণ এবং স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান
দ্বাদশ
সংসদ নির্বাচনে দেড়শ শতাধিক আসনে ইভিএমে ভোট করার পাশাপাশি বাকি দেড়শ’
আসনে সনাতন পদ্ধতির ব্যালট পেপারে ভোটের পরিকল্পনা করেছিল কাজী হাবিবুল
আউয়াল কমিশন। কিন্তু ইভিএম কেনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বরাদ্দ চেয়েও আর্থিক
সংকটের মধ্যে তাতে সরকারের সায় মেলেনি। ফলে ৩০০ আসনেই ব্যালট পেপারে ভোটের
সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে ইসিকে।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে
২০২৪ সালের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন করার
পরিকল্পনা ধরে এগোচ্ছে বর্তমান ইসি।
সাংবিধানিক সংস্থা ইসি সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে জাতীয় বাজেটে নিজেদের জন্য বরাদ্দের প্রস্তাব পাঠায় সরকারের কাছে।
এ
বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ
সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনের
জন্য প্রায় ২৬০০ কোটি টাকা প্রস্তাব দেয় কমিশন। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের
সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা করে খাতভিত্তিক সুনির্দিষ্ট করা হয়।
সুনির্দিষ্টভাবে
কত টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে তা না জানালেও ইসি কর্মকর্তারা জানান,
প্রয়োজনীয় নির্বাচন সামগ্রীর ব্যয়, সরঞ্জামের খরচ ও পারিশ্রমিক বেড়ে যাওয়ায়
প্রতিবারই সে অনুযায়ী নির্বাচনী ব্যয় বাড়ছে। ভোটগ্রহণে যতজন নির্বাচনী
কর্মকর্তা লাগে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যও লাগে বেশ। পুরো
নির্বাচন পরিচালনার ব্যয়ের একটি বড় অংশ চলে যায় আইন শৃঙ্খলা খাতে।
সবশেষ
একাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৮ সালে নির্বাচন কমিশন ভোটের জন্য ১২০০ কোটি
টাকা চেয়েছিল। এর মধ্যে সংসদ নির্বাচনের জন্য ৭০০ কোটি টাকা এবং উপজেলা
নির্বাচনের জন্য ৫০০ কোটি টাকা।