লালমাই পাহাড়, শালবন বিহার, খাদি, ময়নামতি জাদুঘর, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, মাতৃভাণ্ডারের রসমালাই- কুমিল্লার গর্বের বিষয় নেহায়েত কম নয়।
সেই তালিকায় যুক্ত হতে পারে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের নাম। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে কুমিল্লাই একমাত্র দল, যারা বিভাগ না হয়েই একটি অঞ্চলকে প্রতিনিধিত্ব করছে। সেই দলটাই কিনা বিপিএলের ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ দল। গোছানো আয়োজন আর ব্যবস্থাপনায় বারবার চমকের পর চমক দেখানো শিরোপা ইতোমধ্যে জিতেছে বিপিএলের চারটি শিরোপা। এই ৪টি শিরোপা নিয়ে এবার বসছে ‘ভিক্টোরিয়ান্স মেলা’।
সমর্থকদের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রতিবারই শিরোপা জয়ের পর ট্রফি নিয়ে চলে দলের মালিকপক্ষ, খেলোয়াড় ও সমর্থকদের মিলিত উদযাপন। এবার সেই উদযাপনটা আগের চেয়ে একটু স্পেশাল। টেট্রা জয়ের পর তো আর চিরায়ত উদযাপনে দায় সারা যায় না। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স তাই আয়োজন করেছে ভিক্টোরিয়ান্স মেলার।
চারটি শিরোপা নিয়ে নিজেদের মাটিতে উদযাপনের অংশ হিসেবেই এই ভিক্টোরিয়ান্স মেলা। আগামী ২০ মার্চ এই আয়োজন কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাগমারা ইউনিয়নের জামতলীতে। নাফিসা কামালের ফ্র্যাঞ্চাইজি নামীদামী খেলোয়াড়দের দলে ভিড়িয়ে প্রতিবারই চমকের জন্ম দেয়।
দুই জোড়া শিরোপা উদযাপনের অনুষ্ঠানে চমক থাকছে ক্রিকেটের বাইরের তারকাদের এনে। সঙ্গীতশিল্পী কনার সাথে আসছেন প্রীতম হাসান। রূপালি পর্দার জনপ্রিয় নায়িকা নুসরাত ফারিয়াও আসছেন। আর দলবল নিয়ে হাজির হবে সুমির ব্যান্ড লালন।
২০১৫ সালে প্রথমবার বিপিএলে অংশ নেয় লোটাস গ্রুপের মালিকানাধীন ফ্র্যাঞ্চাইজি কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। নিজেদের অভিষেক আসরেই দলটি জেতে শিরোপা। সেবার দলের নেতৃত্বে ছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ২০১৬ সালে দলটিতে যোগ দেন রশিদ খানের মতো তারকা, যার বড় ক্রিকেটার হয়ে ওঠার পেছনে অবদান ছিল কুমিল্লার।
সেবার শিরোপা ধরা না দিলেও ২০১৯ সালে ক্যাবিনেটে আরও একটি ট্রফি বাড়ে কুমিল্লার। তামিম ইকবালের বিধ্বংসী ব্যাটিং সেবার কুমিল্লাকে এনে দেয় দ্বিতীয় শিরোপা। সেই আসরে মাঠ মাতিয়েছেন শহীদ আফ্রিদি, স্টিভ স্মিথের মতো সুপারস্টার।
২০২২ সালে মঈন আলী, মুস্তাফিজুর রহমান, সুনীল নারাইন লিটন কুমার দাসদের নিয়ে নিজেদের তৃতীয় শিরোপা জেতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন হিসেবে চতুর্থ ও নিজেদের অংশগ্রহণের বিচারে হ্যাটট্রিক শিরোপা ধরা দেয় ২০২৩ সালে। এবারের দলে নারাইন, মঈন, লিটন, মুস্তাফিজ ছাড়াও ছিলেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, আন্দ্রে রাসেলের মতো তারকা।
কুমিল্লার এই সাফল্যে বড় অবদান আছে মোহাম্মদ সালাউদ্দিন ও ইমরুল কায়েসের। ইমরুল কুমিল্লার সদস্য শুরু থেকেই, সর্বশেষ তিনটি শিরোপা এসেছে তারই অধিনায়কত্বে। আর সালাউদ্দিন শুরু থেকেই কুমিল্লার মাস্টারমাইন্ড, যার কোচিংয়ে একটি নয়, দুটি নয়, চার চারটি শিরোপা জিতেছে কুমিল্লা।
ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে চারটি শিরোপা জয়ের নজির হাতেগোনা। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের দল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, চেন্নাই সুপার কিংস এবং বিগ ব্যাশ লিগের দল পার্থ স্কচার্সের আছে চার বা তার বেশি শিরোপা। এর মধ্যে মুম্বাই ও পার্থের শিরোপা পাঁচটি করে, চেন্নাই কুমিল্লার মতোই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ৪ বার।