দেবিদ্বারে দুই মামলায় গ্রেফতার ১১ থমথমে মাশিকারা
আতঙ্কে শিক্ষার্থীশূন্য স্কুল ও গ্রাম
শাহীন আলম, দেবিদ্বার
|
এদিকে,
বৃহস্পতিবার দুপুরে দেবিদ্বার উপজেলার মাশিকাড়া গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা
গেছে, গ্রেফতার আতঙ্কে জনশূন্য হয়ে পড়েছে মাশিকাড়াসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রাম।
বিদ্যালয়ে আসেনি কোন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের ভিতরে ও দরজা-জানালা
ভাঙচুরসহ সংঘর্ষের আলামত হিসেবে ইটপাটকেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে। মাশিকাড়া
বাজারের অধিকাংশ দোকান পাঠ বন্ধ। থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে পুরো এলাকায়।
রাতে হারিয়ে যাওয়া পুলিশের একটি শর্টগান একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায়
নিয়ে আসায় হয়। ![]() গত বুধবার সকালে প্রধান শিক্ষক মো.মোক্তল হোসেন তাঁর কক্ষে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে যৌন নির্যাতন ও শ্লীলতাহানির চেষ্টার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনাটি জানাজানি হলে দুপুরের দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে তাকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। এসময় বিক্ষোভকারীরা অভিযুক্ত ওই প্রধান শিক্ষকের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এর কিছুক্ষণ পর তাঁর মেয়ের জামাই মোটরসাইকেল নিয়ে স্কুলে আসলে তাঁর মোটরসাইকেলও পুড়িয়ে দেয়। এতে পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জসহ একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়। পরে সন্ধ্যায় সাড়ে ৭টার দিকে বিক্ষোভকারীরা বিদ্যালয়ের দরজা-জানালা ভাঙচুর ও ইটপাটকেল ছুঁড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এতে অন্তত পুলিশ সদস্যসহ ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়। এর মধ্যে আহত পুলিশ সদস্যরা হলো, দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি কমল কৃষ্ণ ধর, পুলিশ পরিদর্শক খাদেমুল বাহার, কনস্টেবল গোলাম সারোয়ার, রবিউল ইসলাম, বাঙ্গরা বাজার থানার কনস্টেবল জহিরুল ইসলাম। এছাড়াও গুলিবিদ্ধ আহতরা হলেন, সিয়াম (১৫), মিনহাজ (১৭), অলি (১৬), আকাশ (১৬) আরিফুল ইসলাম (২৬), সাব্বির (১৮) ও হৃদয় (১৭)। তাদের প্রথমে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রাত সাড়ে ৯টায় কুমিল্লা পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান বিপিএম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশারফ হোসেন, দেবিদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডেজী চক্রবর্তী বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে স্কুলের দোতলায় প্রধান শিক্ষকসহ অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করেন। ওই সময় রাত ১০ পর্যন্ত এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কমল কৃষ্ণ ধর বলেন, বুধবারের সংঘর্ষের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এতে প্রায় ২০০ জনকে আসামী করা হয়েছে। এর একটির বাদি পুলিশ ও অন্যটির ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা। ওই দুই মামলায় প্রধান শিক্ষকসহ ১১জনকে কুমিল্লা জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। |