
বাসস:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৭ মার্চ শিশু একাডেমি
করার পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। এরপর থেকে তাঁর প্রত্যেক জন্মদিনে
শিশু-কিশোররা তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতো।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু
শেখ মুজিবুর রহমানের একান্ত সচিব ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বাসসকে দেয়া এক
সাক্ষাতকারে বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ১৭
মার্চ শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন। যদিও নানা
বাস্তবতায় তাঁর জীবদ্দশায় শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করা হয়ে ওঠেনি, তবে ওইদিন
যারা উপস্থিত ছিলেন- তাদের সাথে বঙ্গবন্ধু শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠার
পরিকল্পনার কথা বলেছিলেন।” তিনি বলেন, “আমি শুনেছি, ঐদিন যারা এসেছিলেন-
তাদের মধ্যে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, রোকনুজ্জাামান দাদা ভাই, আবু জাফর
শামসুদ্দিন, আবুল কালাম শামসুদ্দিন, ড. নিলীমা ইব্রাহিম, অধ্যাপক মুনির
চৌধুরী ছিলেন। তাদের সাথে তিনি শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে আলাপ
করেছিলেন।”
ফরাসউদ্দিন বলেন, ঐবছরই বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ব্যাংক করেছেন।
ন্যাশনাল ব্যাংক করেছেন। এগুলো সব কিন্তু ১৭ই মার্চেই করেছেন। সেদিনই তিনি
শিশু একাডেমি স্থাপনের কথা চিন্তা করলেন এবং ছেলেমেয়েদের ডেকে পাঠালেন। ঐ
বছর থেকেই কিন্তু প্রতিবছর বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে শিশু-কিশোররা আসতো। তিনি
বলেন, জাতির পিতার জন্মদিনে কোন বিশেষ আয়োজন থাকতো না। কোন কেকও কাটা হতো
না। তবে বহু সংখ্যক শিশু কিশোর আসতো। তিনি শিশুদের সাথে অনেক সময় কাটাতেন।
শিশুদের উনি খুব পছন্দ করতেন। সবাইকে মিষ্টি খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করতেন। ১৭
মার্চে উনি শিশু একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেননি। কিন্তুএটা ওইদিনই তাঁর মাথায়
আসে।
শিক্ষাবিদ ড. নীলিমা ইব্রাহিমের জীবন ও কর্ম পাঠে জানা যায়, তিনিই
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনকে ‘জাতীয় শিশু দিবস’ হিসেবে পালনের প্রস্তাব করেন।
১৯৯৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর শিশু সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা’র জাতীয়
সম্মেলনে তিনি এই প্রস্তাব করেন। সেই সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত
ছিলেন সেসময়কার বিরোধী দলীয় নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা। তিনি
বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে জাতীয় শিশু দিবস পালনের জন্য ড. নীলিমা ইব্রাহিমের
প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানান।
বঙ্গবন্ধু শিশু-কিশোর মেলা পরের বছর
১৯৯৪ সালের ১৭ মার্চ প্রথম বেসরকারি ভাবে জাতীয় শিশু দিবস পালন করে। প্রথম
জাতীয় শিশু দিবস উদ্বোধন করেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও বাসস পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক
ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক আজ বাসসকে বলেন, ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
সভানেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণের পর, তার নেতৃত্বাধীন সরকার ১৭ মার্চকে
সরকারিভাবে জাতীয় শিশু দিবস' হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ১৯৯৭ সাল
থেকে সরকারিভাবে এ দিনটি জাতীয় শিশু দিবস হিসেবে পালন করা হয়।