ক্রীড়া প্রতিবেদক: শান্ত কেন অশান্ত! এমন কথা তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে আগেও। তবে সেগুলো বেশিরভাগই ছিল ঘরোয়া ক্রিকেট আর বয়সভিত্তিক দলের খবর। জাতীয় দলে শান্ত অনেকদিন ছিলেন কেবল নিজের ছায়া হয়ে!
একের পর এক ম্যাচে ব্যর্থ হয়েছেন। টিম ম্যানেজমেন্ট তাকে সুযোগ দিয়েই গেছে। একটা সময় টাইগার ক্রিকেটপ্রেমীদের বড় একটা অংশের চক্ষুশূলে পরিণত হন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শান্ত কেন দলে? এই প্রশ্ন যে কত জায়গা থেকে কতবার এসেছে, তার হিসাব নেই।
নির্বাচক, টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে লড়ার উপায় নেই। ক্ষুব্ধ ক্রিকেট সমর্থকরা তাই বেছে নেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। শান্তকে নিয়ে একের পর এক ট্রল, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ হতে থাকে। কখনও সেটা মাত্রা ছাড়িয়ে।
শান্তর চোখে সেগুলো যে একদম এড়িয়ে গেছে, তেমন নয়। তবে কখনই সমর্থকদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের জবাব দেননি তিনি। হয়তো আক্ষেপভরা কণ্ঠে বলেছেন, 'মাঝে মাঝে মনে হয় আমি যেন পুরো দেশের বিপক্ষে খেলি।'
শান্তর হাতে কিছু ছিল না, পারফরম্যান্স দিয়ে জবাব দেওয়া ছাড়া। সেই পথেই হাঁটলেন ২৪ বছরের তরুণ। দাঁতে দাঁত চেপে সব সমালোচনা সহ্য করলেন। অবশেষে ফিরে পেলেন নিজেকে, ব্যাটেই দিলেন জবাব।
এবারের বিপিএলটা একদম বদলে দিয়েছে শান্তকে। ভীষণ ধারাবাহিক ছিলেন। রানের পর রান করেছেন। সেই আত্মবিশ্বাসই যেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজেও টেনে এনেছেন এই ব্যাটার।
দেশের হয়ে সর্বশেষ ৫ ইনিংসে শান্তর তিনটি ফিফটি। আজ আবার দলের চাপের মুখে খেললেন ৪৬ রানের হার না মানা ইনিংস। মানে পাঁচ ইনিংসের চারটিতেই চল্লিশোর্ধ্ব ইনিংস খেলেছেন শান্ত।
এর মধ্যে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে হন ম্যাচসেরাও। যে ম্যাচটিতে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে জয় পায়, সেটা শান্তর হাত ধরে।
এ তো গেলো কেবল ব্যাটিং। কখনও কখনও বল ঘুরাতেও দেখা গেছে শান্তকে। মাঠে দেখা গেছে দুর্দান্ত সব ক্যাচ নিতে। সব জায়গায়ই যেন অন্য এক শান্ত।
কদিন আগেও কি কেউ ভাবতে পেরেছিলেন, শান্ত এভাবে নিজেকে বদলে ফেলবেন! মাঠে বড় দলের বিপক্ষে লড়া যত কঠিন, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ সামলে নিয়ে পারফরম্যান্স দেখানো নিশ্চয়ই এর চেয়েও অনেক বেশি কঠিন। শান্ত সেই কঠিন কাজটিই করে যাচ্ছেন সহজে। এই ধারা চলুক না!