শুক্রবার ১ ডিসেম্বর ২০২৩
১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য
বদরুল হুদা জেনু
প্রকাশ: সোমবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০১ এএম |

 জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য
৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস। এবারের জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে “স্মার্ট গ্রন্থাগার স্মার্ট বাংলাদেশ”। প্রতিপাদ্য শ্লোগানের তাৎপর্য-পূর্ণ বিষয় হচ্ছে- বই পড়া দেশ গড়া এবং বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। পৃথিবীর অনেক দেশেই গ্রন্থাগার দিবস পালন করা হয়। যেমন- ২৪ অক্টোবর স্পেন, ৮ মে পোলান্ড, ১০ জুলাই  সাউথ আফ্রিকা, ১৬ অক্টোবর প্যারাগুয়ে, ১১ নভেম্বর ক্রোয়েশিয়া, ৮ ফেব্রুয়ারি ফিনল্যান্ড, ২০ নভেম্বর স্লোভেনিয়া, আবার মধ্য অক্টোবর বেলজিয়াম, নভেম্বরে আয়ারল্যান্ড, ৯-১২ অক্টোবর ইংল্যান্ডে গ্রন্থাগার সপ্তাহ পালন করা হয়।
বাংলাদেশে ২০১৭ সালের পূর্বে জাতীয় ভাবে স্বীকৃত গ্রন্থাগার ভিত্তিক কোন দিবস ছিলো না। ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ কর্তৃক অনুমোদনের পর প্রতিবছর ৫ ফেব্রুয়ারিকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা “জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস” ঘোষণা করেন। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে প্রধানমন্ত্রীর এই ঘোষণা বাংলাদেশের জন্য বিশেষ করে গ্রন্থাগার পেশার জন্য যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। গ্রন্থাগার হচ্ছে একটি গতিশীল ও সৃষ্টিশীল মাধ্যম।
গ্রন্থাগার এখন আর কোন সীমাবদ্ধ প্রতিষ্ঠান নয়, মেধা বিকাশ ও চর্চার জন্য এক অনবদ্য কেন্দ্র। এই গ্রন্থাগার হচ্ছে ইতিহাস ঐতিহ্য চর্চার স্থান যা অতীত বর্তমান ও ভবিষ্যত সমৃদ্ধ বুনিয়াদি প্রতিষ্ঠান। "পড়া" শব্দটির ব্যাপকতা যেমন রয়েছে, তেমনি "বই" কথাটি আমাদের আগ্রহ জোগায়। পড়া মানে জ্ঞান চর্চা। অন্যভাবে বলা যায় পড়া মানে জানা বোঝা অনুধাবন করা। এই তিন উপাদান যদি একত্রে হয় তখনি সেটা পড়া হয়। আর সেই পড়ার মাধ্যম হচ্ছে বই বা গ্রন্থ। বই মানে হচ্ছে যা থেকে আমরা জ্ঞান আহরণ করি।
বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে জ্ঞান আহরণ করার জন্য বইয়ের বিকল্প আর কিছু হতে পারে না। প্রতিপাদ্যের পরের শব্দগুলোতে দেশ গড়ার  কথা বলা হয়েছে এবং সেই দেশটি বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ। আমাদের এই দেশটা ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর নয়মাস ব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদ আর ৪লাখ মা বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে স্বাধীনতা লাভ করে। জাতি রাষ্ট্র হিসেবে আমরাই একমাত্র দেশ যেখান সংস্কৃতির চেতনায় একটা দেশ স্বাধীনতা লাভ করে। সে সংস্কৃতি আমাদের বাংলা ভাষা।
১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারী সালাম বরকত রফিক জব্বারসহ নাম না জানা ভাষা সৈনিকের রক্তের বিনিময়ে আমাদের বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা পায় এবং আমাদের স্বাধীনতার ভিত্তি এটিই। ১৯৪৭ সালের বৃটিশ শাসনের অবসানের পর পাকিস্তান নামের দ্বিজাতিতত্ত্বের দেশ পশ্চিম ও পূবর্ পাকিস্তান নিয়ে সৃষ্টি হয়।
পূর্ব পাকিস্তানের সাথে পশ্চিম পাকিস্তানের একমাত্র ধর্মীয় সম্পর্কের একটা সাদৃশ্য ছাড়া আর কোন মিল ছিলো না। অথচ পূর্ব পাকিস্তানের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ঐতিহ্যগত চেতনা, সংস্কৃতি ও বাংলাভাষার উপর পশ্চিম পাকিস্তানের সংখ্যা লঘিষ্ঠ  শাসক গোষ্ঠী প্রথম আঘাত হানে রাষ্ট্রভাষা উর্দু ঘোষণা দিয়ে। জেগে উঠে, প্রতিবাদ জানায় পূর্বপাকিস্তানের সমগ্র বাঙালি জাতি। আন্দোলন সংগ্রামে বাঙ্গালিরা বাংলা ভাষাকে প্রতিষ্ঠা করে। এখানেই আমাদের স্বাধীনতার বীজ রোপিত হয়। তার পরের ইতিহাস হলো ৫৪এর নির্বাচন, ৬২ এর শিক্ষা আন্দোলন, ৬৬এর ৬ দফা আন্দোলন, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ৭০এর নির্বাচন ও শেষে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ।
৫২ থেকে ৭১ যত কিছু আন্দোলন সবকিছুর অগ্রনায়ক ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ধারাবাহিক সব আন্দোলনের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে তিনি পরিণত হন বাঙালির মহানায়কে। ১৯৬৯ এর ২৩ ফেব্রুয়ারি বাঙালি ছাত্র জনতা তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন। চর্যাপদ থেকেও যদি আরম্ভ করি, বাঙালির এই যে হাজার বছরের ইতিহাস, এই লম্বা পথ পরিক্রমায় কোথাও কোনদিন বাঙালি স্বাধীন সত্ত্বায় চলতে পারেনি। এটি ঐতিহাসিক বাস্তবতা যে বাঙালিকে শাসন করেছে বাঙালিকে ছাড়া সবাই। যে সিরাজউদৌল্লাকে আমরা ছোট বেলা থেকে পাঠ্যপুস্তকে বাংলার শেষ স্বাধীন নবাব বলে চিনে এসেছি, তিনিও না বলতে পারতেন, না পড়তে পারতেন বাংলা। বঙ্গবন্ধুই ছিলেন বাঙালির প্রথম স্বাধীন রাষ্ট্রের প্রথম বাংলাদেশি বাঙালি শাসক।
আর বাংলাদেশকে অনুভবে নিতে হলে বঙ্গবন্ধুকে চর্চা করতেই হবে। তাই ২০২৩ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি জাতীয় গ্রন্থাগার দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয়টি আমাদের জাতিগত চেতনাকে সমৃদ্ধ করবে। গ্রন্থাগার চর্চা ও তার বিকাশকে ২০২১ সালের ভিশন তথা ২০৪১ সালের উন্নত জাতির ভিশন তা পূরণ করবে। মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে জাতীয় গ্রন্থাগার দিবস-২০২৩ খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আমাদের অহংকার আর গৌরবের সকল ঐতিহাসিক বিষয় নিয়ে চর্চার জায়গাটি গ্রন্থাগার ভিত্তিক হয়ে উঠুক। এমন সুদিন আমাদের জীবনে স্থায়ী লাভ করুক এই কামনা ।












সর্বশেষ সংবাদ
বিজয়ের মাস ডিসেম্বর
কুমিল্লার কোন আসনে প্রার্থী কারা
সরকারের চিন্তা-চেতনা দেশের উন্নয়ন করা
কুমিল্লার ১১ আসনে ১২১ প্রার্থীর মনোনয়ন জমা
৩০০ আসনে ২৭৪১ জনের মনোনয়ন ফরম দাখিল
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
নৌকার মনোনয়ন নেওয়ায় শাহজাহান ওমরকে বহিষ্কার করল বিএনপি
কুমিল্লার ১১ আসনে ১২১ প্রার্থী ।। সবচেয়ে বেশি বরুড়ায়, সবচেয়ে কম সদরে ৬ জন
কুমিল্লার কোন আসনে প্রার্থী কারা
৪৬তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন প্রতিমন্ত্রী ও তার ছেলে
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft