শুক্রবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
৭ আশ্বিন ১৪৩০
উকিল সাত্তার-হিরো আলম: কার জয়, কার পরাজয়!
প্রভাষ আমিন
প্রকাশ: শনিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩, ১২:০১ এএম |

 উকিল সাত্তার-হিরো আলম: কার জয়, কার পরাজয়!

বিএনপির এমপিদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ৬টি আসনের উপনির্বাচন যে নিরুত্তাপ, ভোটারবিহীন, একতরফা হবে তা অনুমিতই ছিল। একে তো প্রধান বিরোধী দল নেই, বিরোধী দল থাকা না থাকার চেয়ে বড় কথা হলো মাত্র এক বছরের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ থাকার কোনও কারণ নেই। তারপরও যে ২৫ শতাংশ মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়েছেন; নির্বাচনি ব্যবস্থার ওপর তাদের আস্থা দেখে, গণতন্ত্রের জন্য তাদের দরদ দেখে আমি মুগ্ধ, অভিভূত। অর্থহীন এ উপনির্বাচনে যারা কেন্দ্রে গিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত তাদের সবার বাসায় ফুলের তোড়া পাঠানো। তবে এই প্রার্থীহীন, ভোটারবিহীন নির্বাচনেও এজেন্ট নিয়োগে বাধা, ভোটকেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়া, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া, ভোটকেন্দ্র দখল, গোপন কক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিদের উপস্থিতি, সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটেছে।
যতই একতরফা হোক, এসব অনিয়ম বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থার অংশ হয়ে গেছে যেন। বিরোধী দল না থাকায় সরকারি দল নিজেরা নিজেরাই এসব অনিয়ম করেছে।
অর্থহীন হলেও এ উপনির্বাচন অনুষ্ঠানে কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। বিএনপি না থাকলেও এই উপনির্বাচনের দায় কিন্তু তাদের নিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করলো বিএনপি। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিলেও ভরাডুবি ঘটলো বিএনপির। প্রশ্নবিদ্ধ সেই নির্বাচনে বিএনপি পেলো সাকুল্যে ৬টি আসন।
দিনের ভোট রাতে হয়েছে, কারচুপি হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি অভিযোগ করে শেষ দিনে সুরসুর করে সংসদে যোগ দিলো। কেন বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে এলো, নির্বাচনের পর ফলাফল বর্জন করলো, কেন আবার সংসদে যোগ দিলো, কোনও পরিষ্কার ব্যাখ্যা নেই। সরাসরি ভোটে ৬টি, সংরক্ষিত একটিসহ ৭ এমপি নিয়ে সংসদে যোগ দিয়ে অবশ্য বিএনপি ভালোই করেছিল। সংখ্যায় ৭ হলেও রুমিন ফারহানা আর হারুনুর রশিদ- এই দুই জনই সংসদ গরম করে রাখতেন। বাইরের মাঠের আন্দোলন যেমন তেমন সংসদে বেশ সরব ছিল বিএনপি। আর সংসদের বক্তব্যের একটা আলাদা গুরুত্ব আছে, মিডিয়া থেকে শুরু করে সবার নজর থাকে সংসদে। সংসদের বাইরে রুমিন ফারহানা আর হারুনুর রশীদ এখন যত কথাই বলেন, কারও নজর কাড়বে না। বিএনপি কীসের আশায় এমন চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে দিলো, বোঝা মুশকিল। এমন যদি হতো, বিএনপির এই ৭ এমপির পদত্যাগে সংসদ অচল হয়ে গেছে, সরকারের ভিত নড়ে গেছে, আন্দোলনে জোয়ার এসেছে; তাহলেও না হয় কথা ছিল। কিছুই হয়নি। শুধু বিএনপির ৭ এমপি সাবেক হয়ে গেছেন, প্রতিবাদ করার সবচেয়ে ভালো প্ল্যাটফর্মটি খুইয়েছে বিএনপি আর দেশ পেয়েছে বহু অর্থ ব্যয়ে ৬ আসনে অর্থহীন উপনির্বাচন।
তবে এই উপনির্বাচনে কিছুটা চাঞ্চল্য আনতে পেরেছিলেন দুজন প্রার্থী– উকিল আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া আর হিরো আলম। উকিল সাত্তারও পদত্যাগী ৭ এমপির একজন ছিলেন। কিন্তু পদত্যাগ করেই তিনি ‘পল্টি’ মারেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। তবে উকিল সাত্তারের ‘পল্টি’র পেছনে সরকারি দলের বড়সড় ইন্ধন আছে। আর আছেন রুমিন ফারহানা। উকিল সাত্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে পাঁচবার এমপি হয়েছেন। তুমুল জনপ্রিয়তা থাকলেও আগামীতে আর তিনি বিএনপির মনোনয়ন পাবেন না, এটা প্রায় নিশ্চিত। এলাকায় জনপ্রিয়তা থাকলেও ৮৬ বছর বয়সী উকিল আবদুস সাত্তার সংসদে বড্ড ম্লান। সংসদে তার ভয়েস শোনাই যায় না। বিপরীতে রুমিন ফারহানা এখন বিএনপির মুখপাত্র হয়ে উঠছেন। দেশে-বিদেশে কূটনীতিতে, টকশো’তে রুমিন এখন বিএনপির বড় ভরসা। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আগামীতে রুমিন ফারহানার মনোনয়ন নিশ্চিত। এটা বুঝতে পেরেই উকিল সাহেব ‘পল্টি’টা মেরেছেন।
সরাসরি নৌকায় না উঠলেও আওয়ামী লীগ বিএনপির এই সাবেক এমপিকে জিতিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছিল। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মিসভায় যোগ দিতে ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একজন সাংগঠনিক সম্পাদক ছুটে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সেখানে প্রার্থী তো দেয়ইনি, বরং দলের তিন বিদ্রোহী প্রার্থীকে চাপ দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়। নির্বাচনের চারদিন আগে থেকে নিখোঁজ বা আত্মগোপনে চলে যান বিএনপির আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী। সব মিলিয়ে সরকার, সরকারি দল উকিল সাত্তারের জন্য মাঠ একদম ফাঁকা করে রাখে, যাতে তিনি নিশ্চিন্তে গোল দিতে পারেন। সেটা পেরেছেন উকিল সাহেব। তবে আগের পাঁচবার ভরা মাঠে খেলে গোল দেওয়ার যে আনন্দ, ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়াতে যে সে আনন্দ নেই; সেটা নিশ্চয়ই রাজনীতির ঝানু খেলোয়াড় উকিল সাত্তার বুঝেছেন। ষষ্ঠবার এমপি হওয়াটা নিশ্চয়ই তার জন্য গ্লানির। কোনও কোনও জয় আছে, পরাজয়ের চেয়েও বেশি গ্লানি বয়ে আনে। উকিল আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া নিশ্চয়ই এখন মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজছেন।
উকিল সাত্তারের মতোই আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমকে নিয়েও ব্যাপক আলোচনা ছিল। শুরুতে নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিলেও হাইকোর্টে আদেশে তিনি ফিরে পান। নিজেকে সিংহের সঙ্গে তুলনা করা হিরো আলম সিংহ মার্কা নিয়েই লড়তে চেয়েছিলেন। পরে অবশ্য সেটা পাননি। হিরো আলম বগুড়া-৪ ও ৬ আসনে লড়াইয়ে নামেন। দুপুরের মধ্যেই বগুড়া-৬ আসনের হাল ছেড়ে দিয়ে বলেন, বগুড়া-৪ আসন থেকে তিনিই এমপি হচ্ছেন। সবাই তার এই কথাবার্তাকে বাগাড়ম্বর বলেই ভাবছিলেন। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেলো ক্ষমতাসীন মহাজোটের প্রার্থী জাসদ নেতা এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। ব্যবধান মাত্র ৮৩৪ ভোট! হিরো আলম অবশ্য পরাজয় মেনে নেননি। তার দাবি, তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি সংবাদ সম্মেলনে ফলাফল চ্যালেঞ্জ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
৮৩৪ ভোটে হিরো আলমের পরাজয়টা অবশ্য জয়ের চেয়েও বেশি। সারাক্ষণ সাংবাদিক আর ইউটিউবাররা তাকে ঘিরে থাকছে। হেরেও সত্যিকারের হিরোই যেন। আর ষষ্ঠবার জিতেও মন ভালো নেই উকিল সাত্তারের। আসলে জীবনটাই এমন। কোনটা জয়, কোনটা পরাজয় বোঝা মুশকিল। কোনও কোনও পরাজয় হয় আনন্দের। কোনও কোনও জয় হয় গ্লানির।
লেখক: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ











ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা ও ভয়
চিররঞ্জন সরকার
নির্বাচন আসছে, বাড়ছে আতঙ্ক ও ভয়। সুষ্ঠু নির্বাচন কি হবে? বিএনপি কি নির্বাচনে অংশ নেবে? শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নেয়, সমমনা দলগুলোকে নিয়ে নির্বাচন বর্জন করে- তা হলে কী হবে? আবার কি ফিরে আসবে সেই সহিংসতা, অসহযোগ, পেট্রোলবোমা, হত্যা-খুন নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি? আগামী নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট যদি অংশগ্রহণ করে, বিজয়ী হয়, আওয়ামী লীগ বা তাদের জোট ক্ষমতা হারায়Ñ তা হলেই বা কী হবে? ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট জয়লাভ করার পর সারাদেশে সংখ্যালঘু ও আওয়ামী সমর্থকদের ওপর যে পৈশাচিক হামলা-নির্যাতন চালিয়েছিল, ফিরে আসবে কি সেই দুঃসহ স্মৃতি?
মূল্যবৃদ্ধির জাঁতাকলে পিষ্ট দেশবাসীর কাছে বর্তমানে বেঁচে থাকাটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যারা দেশ, সমাজ, দেশের রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবেন- তারাও কোনো আশা-ভরসা দেখছেন না। সবখানে হতাশা, ভবিষ্যৎ নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ও ভয়। আমাদের রাজনীতিতে একই চিত্র যুগের পর যুগ ধরে চলছে। প্রায় এক দশক আগে ‘রাজনৈতিক দল ও বাংলাদেশের গণতন্ত্র’ শীর্ষক একটি সেমিনারে স্বনামধন্য রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক রওনক জাহান বলেছিলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো ক্ষমতা দখলের জন্য পাগল। দলগুলোর অভ্যন্তরে কোনো গণতন্ত্র নেই। তারা ব্যক্তি ও পরিবারতন্ত্রে আকণ্ঠ নিমজ্জিত। তারা নীতি-আদর্শের ধার ধারে না। তারা সন্ত্রাস ও পেশিশক্তি ব্যবহার এবং দলীয়করণে সিদ্ধহস্ত।
অধ্যাপক রওনক জাহান বর্ণিত চরিত্র থেকে আমাদের রাজনীতি বের হচ্ছে না। রাজনীতিবিদরা ক্ষমতার রাজনীতিতে বিভোর। তারা যে কোনো মূল্যে ক্ষমতায় যেতে ও ক্ষমতায় থাকতে বদ্ধপরিকর। দলে গণতন্ত্রচর্চার মতো যেসব গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ রাষ্ট্রে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য অপরিহার্য, সেগুলো থেকে তারা বহু দূরে। দুর্নীতিই আমাদের বিরাজমান ক্ষমতার রাজনীতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। জনকল্যাণের পরিবর্তে ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর কল্যাণই ক্ষমতায় যাওয়ার প্রধান আকর্ষণ। ক্ষমতায় গিয়ে লুটপাট করা যায় এবং সেই লুটপাটের ফসল প্রায় নির্বিঘ্নে ভোগ করা যায়। আনুগত্য ‘ক্রয়’ বা অব্যাহত রাখার জন্য ফায়দা হিসেবে তা ব্যবহারও করা যায়। এ কারণেই ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ও ক্ষমতার আশপাশে থাকা ব্যক্তিরাÑ সামান্য কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, বৈধ আয়ের উৎস ছাড়াই অঢেল অর্থবিত্তের মালিক হচ্ছেন। ফায়দা বিতরণের মাধ্যমে আনুগত্য ক্রয়ের কারণে সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি হয়। এ জন্যই আমাদের দেশে আজ শিক্ষকরা বিভক্ত, সাংবাদিকরা বিভক্ত, আইনজীবীরা বিভক্ত, সাংস্কৃতিক কর্মীরা বিভক্তÑ এক কথায় পুরো সমাজ বিভক্ত। একাত্তরের ঐক্যবদ্ধ জাতি আজ পরস্পরের সঙ্গে প্রায় ‘যুদ্ধে লিপ্ত’। দুটি শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে এ প্রক্রিয়াতেই। লুটপাট করা ও অন্যায় ফায়দা বিতরণের জন্য শাসক শ্রেণির কাউকে সাধারণত জেলে যেতে হয় না। অর্থ ও তদবিরের বিনিময়ে তারা পার পেয়ে যান কিংবা তাদের বিরুদ্ধের মামলা ‘রাজনৈতিক বিবেচনা’য় প্রত্যাহার করা হয়। রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রেও এসব দুর্বৃত্তের তেমন কোনো মাশুল গুনতে হয় না। তাই লুটপাটতন্ত্র কায়েম ও আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা ভোগই ক্ষমতায় যাওয়ার উম্মত্ত প্রতিযোগিতা অব্যাহত থাকে।
আমাদের দেশের অর্ধশতকের রাজনীতির ইতিহাসে কেবল সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ছাড়া আর কোনো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতাধর ব্যক্তিকেই দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেল খাটতে হয়নি। তবে দুর্নীতির অভিযোগে জেল খাটলেও এরশাদ রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে নির্বাসিত হননি, বরং আমাদের রাজনীতিতে ‘কিংমেকার’-এ পরিণত হয়েছিলেন। আমাদের রাজনীতিবিদদের মন-মানসিকতা বদলাচ্ছে না। তাই রাজনীতিও পালটাচ্ছে না। এ জন্য ভবিষ্যৎ নিয়ে ভয় ও শঙ্কাও কাটছে না। এই উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, ভয়ের আবহে বসবাস করে মনে জাগছে নানা দার্শনিক প্রশ্নÑ আমাদের বেঁচে থাকা কি কেবলই ভয় আর আশঙ্কার সমষ্টি?
হয়তো সেটিই। মানুষ এক সময় ভয় পেত প্রকৃতির ভয়ঙ্কর রূপকে। সেই ভয়ঙ্কর রূপ থেকে বাঁচার তাগিদে আশ্রয় নিয়েছিল গুহায়। মানুষ ভয় পেত অন্ধকারকে। সেই অন্ধকারের হাত থেকে বাঁচার তাগিদে আবিষ্কার করল আগুন। মানুষ ভয় পেত অন্য গোষ্ঠীর মানুষকে। তাই বাঁচার তাগিদে সংঘবদ্ধ হয়ে থাকতে শিখল। মানুষ সব থেকে বেশি ভয় পেত মৃত্যুকে। মৃত্যু তার কাছে ছিল রহস্যময়। সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে চাইত না, মৃত্যুতেই জীবনের শেষ।
তার সবকিছুতেই ভয়। ভূমিকম্পের ভয়, বন্যার ভয়, ঝড়-বৃষ্টির ভয়, অসুখের ভয়, জীবনহানির ভয়। ভয়ের দ্বারাই মানুষ চিরকাল তাড়িত। আমরা চাই আশ্রয়, আমরা চাই এমন একজনকে- যে আমাদের রক্ষা করবে, সব ভয় থেকে মুক্তি দেবে। তাই আমাদের মধ্যে ভয় যেমন আছে, তেমনি ভয়কে অতিক্রম করার চেষ্টাও আছে। আর তা আছে বলেই মানবসভ্যতা আজ এখানে এসে পৌঁছেছে। নইলে আমরা ভীতু হয়ে আদিযুগে পড়ে থাকতাম। আজ যে পৃথিবীজুড়ে এত ঘরবাড়ি, এত রাস্তাঘাট, এত যানবাহন, এত যন্ত্রপাতি, এত অস্ত্রশস্ত্রÑ এসব কিসের জন্য?
সবই হয়েছে ভয় থেকে বাঁচার তাগিদে। মানুষের সবচেয়ে বড় শত্রু মানুষ। মানুষ আজ সব থেকে ভয় পায় মানুষকে। শুনেছি সাপ খুব ভীতু। সাপ ভয় পেয়েই মানুষকে দংশন করে। আমরা অনেকটা সাপের মতো। অমুক দেশ আমাকে আক্রমণ করতে পারে। তাই অমুক দেশকে শায়েস্তা করো। কীভাবে করব? আমাদের গায়ে শক্তি নেই, আমরা দুর্বল। এ কারণেই তৈরি হলো অস্ত্র। এখন আর আদিযুগের অস্ত্র নেই। ছুরি, তরবারির যুগ পেরিয়ে অ্যাটম বোমার যুগে এসেছি। এখন তৈরি হয়েছে আবার নানা ভয়ঙ্কর সব অস্ত্র। তা নাকি মুহূর্তের মধ্যে নিঃশব্দে বিশাল জনগোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। এর উদ্দেশ্য কী? উদ্দেশ্য একটাইÑ শত্রুকে নিশ্চিহ্ন করো। কেননা শত্রুকে নিশ্চিহ্ন না করতে পারলে আমি নির্ভয়ে শান্তিতে থাকতে পারব না।
ভয় থেকে জন্মায় ক্রোধ। আর ক্রোধ থেকে জন্মায় যুদ্ধের স্পৃহা। অথচ আমরা ভেবে দেখি না, যুদ্ধ আমাদের দুই পক্ষকেই ধ্বংস করে। কারণ যুদ্ধে যে জয়ী হয়Ñ সে যুদ্ধের পর এমনই বিপর্যস্ত হয় যে, তা এক রকম পরাজয়। এই যে দুই-দুটো বিশ্বযুদ্ধ হলো- এতে লাভ হলো কার, কে হলো সমৃদ্ধ? কেউ হয়নি। তবে এই যুদ্ধের বদৌলতে যানবাহনের উন্নতি হয়েছে, অস্ত্রশস্ত্রের উন্নতি হয়েছে, মানুষ ধ্বংস করার কাজ অনেক সহজ হয়েছে। এখন ঘরে বসেই অন্য দেশের বুকে বোমা ফেলে আসতে পারি, যুদ্ধক্ষেত্রে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। এর মূলে বিজ্ঞানের উন্নতি, নাকি ভয়? অবশ্যই ভয়। ভয় থেকেই আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে গিয়ে মরতে চাই না। তাই ঘরে বসে আমরা শত্রুদের ধ্বংস করতে চাই। আগে যুদ্ধ ছিল, বীরত্বও ছিল। এখন যুদ্ধ আছে, বীরত্ব নেই।
বর্তমানে আমরা বিজ্ঞানকে ভয় পাই, ভক্তি করি। বিজ্ঞানকে অস্বীকার করতে পারি না। আজ যে আমরা সুখে জীবনযাপন করছি, সে তো বিজ্ঞানের কল্যাণেই। তবে কখন যে বিজ্ঞানের মারমুখী চেহারা দেখব, তা বলতে পারছি না।
বিজ্ঞান ছাড়া আরেকটি বস্তুকে আমরা ইদানীং খুব ভয় পাচ্ছি। এ বস্তুটি হলো রাজনীতি। আমাদের দেশে কোটি কোটি মানুষ। সব মানুষই চায় ক্ষমতা। কেন চায় ক্ষমতা? ক্ষমতা চায় সেই ভয় থেকে। কারণ হাতে ক্ষমতা থাকলে আমার ভয় কমবে; আমার পাশে থাকবে দল, থাকবে প্রশাসন, থাকবে পুলিশ। আমি শান্তিতে বাঁচতে পারব। কিন্তু শান্তিতে বাঁচা রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষে সহজ নয়। কারণ দল ও পক্ষ তো একটি নয়, একাধিক। সব দলই ক্ষমতায় বসতে চায়। ফলে এক দল আরেক দলকে উৎখাত করার আপ্রাণ চেষ্টা করে। এ জন্য হয় মারামারি, কাটাকাটি। তাই নেতারাও অশান্তিতে ভয়ে ভয়ে দিন কাটান। ক্ষমতায় বসে সব সময় উৎখাতের ভয়ে কাঁটা হয়ে থাকে। আর আমাদের অবস্থা হয় করুণ। কথায় বলেÑ রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয়, উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। আমরা হচ্ছি উলুখাগড়া। দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে যখন মারামারি হয়, তখন আমরা ভয়ে ভয়ে থাকি। কেননা মারামারি তো হাত দিয়ে হয় নাÑ হয় বোমায়, পিস্তলে, অগ্নিসংযোগে। আমরা ভয়ের চোটে গ্রাম ছেড়ে পালাই। কিন্তু কোথায় পালাব? কে আমাদের আশ্রয় দেবে? ঈশ্বর? বিজ্ঞান? না, এরা কেউই আশ্রয় দিতে পারবে না। আমাদের আশ্রয় দেবেন নেতারা। মহামানবদের মতো তাদেরও একটাই কথা। তারা বলবেনÑ তোমরা আমাকে ভজনা করো। যদি নিষ্ঠাভরে ভজনা করো- তা হলে তোমাদের অর্থ হবে, বাড়ি হবে, গাড়ি হবে। আর যদি না করো, তা হলে তোমাদের ধ্বংস অনিবার্য। আমরা দুর্বল, অসহায় মানুষ। তাই আমরা যুগ যুগ ধরে ভয়ে ভয়ে থাকি। ভয় থেকে আমাদের কি মুক্তি নেই?
চিররঞ্জন সরকার : কলাম লেখক


উকিল সাত্তার-হিরো আলম: কার জয়, কার পরাজয়!
প্রভাষ আমিন
বিএনপির এমপিদের পদত্যাগে শূন্য হওয়া ৬টি আসনের উপনির্বাচন যে নিরুত্তাপ, ভোটারবিহীন, একতরফা হবে তা অনুমিতই ছিল। একে তো প্রধান বিরোধী দল নেই, বিরোধী দল থাকা না থাকার চেয়ে বড় কথা হলো মাত্র এক বছরের জন্য জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ থাকার কোনও কারণ নেই। তারপরও যে ২৫ শতাংশ মানুষ ভোটকেন্দ্রে গিয়েছেন; নির্বাচনি ব্যবস্থার ওপর তাদের আস্থা দেখে, গণতন্ত্রের জন্য তাদের দরদ দেখে আমি মুগ্ধ, অভিভূত। অর্থহীন এ উপনির্বাচনে যারা কেন্দ্রে গিয়েছেন, নির্বাচন কমিশনের উচিত তাদের সবার বাসায় ফুলের তোড়া পাঠানো। তবে এই প্রার্থীহীন, ভোটারবিহীন নির্বাচনেও এজেন্ট নিয়োগে বাধা, ভোটকেন্দ্র থেকে পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়া, ভোটারদের কেন্দ্রে যেতে বাধা দেওয়া, ভোটকেন্দ্র দখল, গোপন কক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত ব্যক্তিদের উপস্থিতি, সংঘর্ষ ও ককটেল বিস্ফোরণের মতো ঘটনা ঘটেছে।
যতই একতরফা হোক, এসব অনিয়ম বাংলাদেশের নির্বাচনি ব্যবস্থার অংশ হয়ে গেছে যেন। বিরোধী দল না থাকায় সরকারি দল নিজেরা নিজেরাই এসব অনিয়ম করেছে।
অর্থহীন হলেও এ উপনির্বাচন অনুষ্ঠানে কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। বিএনপি না থাকলেও এই উপনির্বাচনের দায় কিন্তু তাদের নিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করলো বিএনপি। পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলেও ২০১৮ সালের নির্বাচনে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নির্বাচনে অংশ নিলেও ভরাডুবি ঘটলো বিএনপির। প্রশ্নবিদ্ধ সেই নির্বাচনে বিএনপি পেলো সাকুল্যে ৬টি আসন।
দিনের ভোট রাতে হয়েছে, কারচুপি হয়েছে ইত্যাদি ইত্যাদি অভিযোগ করে শেষ দিনে সুরসুর করে সংসদে যোগ দিলো। কেন বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে এলো, নির্বাচনের পর ফলাফল বর্জন করলো, কেন আবার সংসদে যোগ দিলো, কোনও পরিষ্কার ব্যাখ্যা নেই। সরাসরি ভোটে ৬টি, সংরক্ষিত একটিসহ ৭ এমপি নিয়ে সংসদে যোগ দিয়ে অবশ্য বিএনপি ভালোই করেছিল। সংখ্যায় ৭ হলেও রুমিন ফারহানা আর হারুনুর রশিদ- এই দুই জনই সংসদ গরম করে রাখতেন। বাইরের মাঠের আন্দোলন যেমন তেমন সংসদে বেশ সরব ছিল বিএনপি। আর সংসদের বক্তব্যের একটা আলাদা গুরুত্ব আছে, মিডিয়া থেকে শুরু করে সবার নজর থাকে সংসদে। সংসদের বাইরে রুমিন ফারহানা আর হারুনুর রশীদ এখন যত কথাই বলেন, কারও নজর কাড়বে না। বিএনপি কীসের আশায় এমন চমৎকার একটি প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে দিলো, বোঝা মুশকিল। এমন যদি হতো, বিএনপির এই ৭ এমপির পদত্যাগে সংসদ অচল হয়ে গেছে, সরকারের ভিত নড়ে গেছে, আন্দোলনে জোয়ার এসেছে; তাহলেও না হয় কথা ছিল। কিছুই হয়নি। শুধু বিএনপির ৭ এমপি সাবেক হয়ে গেছেন, প্রতিবাদ করার সবচেয়ে ভালো প্ল্যাটফর্মটি খুইয়েছে বিএনপি আর দেশ পেয়েছে বহু অর্থ ব্যয়ে ৬ আসনে অর্থহীন উপনির্বাচন।
তবে এই উপনির্বাচনে কিছুটা চাঞ্চল্য আনতে পেরেছিলেন দুজন প্রার্থী– উকিল আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া আর হিরো আলম। উকিল সাত্তারও পদত্যাগী ৭ এমপির একজন ছিলেন। কিন্তু পদত্যাগ করেই তিনি ‘পল্টি’ মারেন। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে স্বতন্ত্র হিসেবে উপনির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত হন তিনি। তবে উকিল সাত্তারের ‘পল্টি’র পেছনে সরকারি দলের বড়সড় ইন্ধন আছে। আর আছেন রুমিন ফারহানা। উকিল সাত্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে পাঁচবার এমপি হয়েছেন। তুমুল জনপ্রিয়তা থাকলেও আগামীতে আর তিনি বিএনপির মনোনয়ন পাবেন না, এটা প্রায় নিশ্চিত। এলাকায় জনপ্রিয়তা থাকলেও ৮৬ বছর বয়সী উকিল আবদুস সাত্তার সংসদে বড্ড ম্লান। সংসদে তার ভয়েস শোনাই যায় না। বিপরীতে রুমিন ফারহানা এখন বিএনপির মুখপাত্র হয়ে উঠছেন। দেশে-বিদেশে কূটনীতিতে, টকশো’তে রুমিন এখন বিএনপির বড় ভরসা। তাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আগামীতে রুমিন ফারহানার মনোনয়ন নিশ্চিত। এটা বুঝতে পেরেই উকিল সাহেব ‘পল্টি’টা মেরেছেন।
সরাসরি নৌকায় না উঠলেও আওয়ামী লীগ বিএনপির এই সাবেক এমপিকে জিতিয়ে আনতে মরিয়া হয়ে মাঠে নেমেছিল। একজন স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মিসভায় যোগ দিতে ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় একজন সাংগঠনিক সম্পাদক ছুটে গিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ সেখানে প্রার্থী তো দেয়ইনি, বরং দলের তিন বিদ্রোহী প্রার্থীকে চাপ দিয়ে বসিয়ে দেওয়া হয়। নির্বাচনের চারদিন আগে থেকে নিখোঁজ বা আত্মগোপনে চলে যান বিএনপির আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী। সব মিলিয়ে সরকার, সরকারি দল উকিল সাত্তারের জন্য মাঠ একদম ফাঁকা করে রাখে, যাতে তিনি নিশ্চিন্তে গোল দিতে পারেন। সেটা পেরেছেন উকিল সাহেব। তবে আগের পাঁচবার ভরা মাঠে খেলে গোল দেওয়ার যে আনন্দ, ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়াতে যে সে আনন্দ নেই; সেটা নিশ্চয়ই রাজনীতির ঝানু খেলোয়াড় উকিল সাত্তার বুঝেছেন। ষষ্ঠবার এমপি হওয়াটা নিশ্চয়ই তার জন্য গ্লানির। কোনও কোনও জয় আছে, পরাজয়ের চেয়েও বেশি গ্লানি বয়ে আনে। উকিল আবদুস সাত্তার ভুঁইয়া নিশ্চয়ই এখন মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজছেন।
উকিল সাত্তারের মতোই আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী হিরো আলমকে নিয়েও ব্যাপক আলোচনা ছিল। শুরুতে নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দিলেও হাইকোর্টে আদেশে তিনি ফিরে পান। নিজেকে সিংহের সঙ্গে তুলনা করা হিরো আলম সিংহ মার্কা নিয়েই লড়তে চেয়েছিলেন। পরে অবশ্য সেটা পাননি। হিরো আলম বগুড়া-৪ ও ৬ আসনে লড়াইয়ে নামেন। দুপুরের মধ্যেই বগুড়া-৬ আসনের হাল ছেড়ে দিয়ে বলেন, বগুড়া-৪ আসন থেকে তিনিই এমপি হচ্ছেন। সবাই তার এই কথাবার্তাকে বাগাড়ম্বর বলেই ভাবছিলেন। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পর দেখা গেলো ক্ষমতাসীন মহাজোটের প্রার্থী জাসদ নেতা এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন পেয়েছেন ২০ হাজার ৪০৫ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিরো আলম পেয়েছেন ১৯ হাজার ৫৭১ ভোট। ব্যবধান মাত্র ৮৩৪ ভোট! হিরো আলম অবশ্য পরাজয় মেনে নেননি। তার দাবি, তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি সংবাদ সম্মেলনে ফলাফল চ্যালেঞ্জ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
৮৩৪ ভোটে হিরো আলমের পরাজয়টা অবশ্য জয়ের চেয়েও বেশি। সারাক্ষণ সাংবাদিক আর ইউটিউবাররা তাকে ঘিরে থাকছে। হেরেও সত্যিকারের হিরোই যেন। আর ষষ্ঠবার জিতেও মন ভালো নেই উকিল সাত্তারের। আসলে জীবনটাই এমন। কোনটা জয়, কোনটা পরাজয় বোঝা মুশকিল। কোনও কোনও পরাজয় হয় আনন্দের। কোনও কোনও জয় হয় গ্লানির।
লেখক: হেড অব নিউজ, এটিএন নিউজ


















সর্বশেষ সংবাদ
ফয়জুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৫০ বছর পূর্তিতে বর্ণাঢ্য আয়োজন কুমিল্লায়
কুমিল্লা শহরকে জঞ্জালে পরিণত করা হয়েছে
‘ভোগান্তি এড়াতে’ কুমিল্লা শহরে ঢুকবে না বিএনপির রোডমার্চ
কুমিল্লায় আরো দুই ডায়গনস্টিক সেন্টার বন্ধ
ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ দেশ উপহার দিতে আমাদের সকলকে কাজ করতে হবে
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
কুমিল্লায় দুই প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ ঘোষণা; সাড়ে চার লাখ টাকা জরিমানা
কুমিল্লায় পিস্তলসহ সন্ত্রাসী বুলেট গ্রেফতার
‘ভোগান্তি এড়াতে’ কুমিল্লা শহরে ঢুকবে না বিএনপির রোডমার্চ
কুমিল্লা শহরকে জঞ্জালে পরিণত করা হয়েছে
প্রফেসর মোঃ মতিউর রহমানের ইন্তেকাল
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft