
মৎস্য
অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের বিভাগীয় উপ-পরিচালক বলেন, বৈশি^ক নানা কারণে
আমাদের অর্থনীতি চাপে পড়েছে। এমন বাস্তবতায় গ্রামের মানুষকে তথা কৃষক জেলে
সকলকে আয়বর্ধক কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে। অনাবাদি পতিত জমিতে আবাদ করতে হবে।
বর্তমানে আমাদের দেশে এখন শরিষা চাষ করার জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
শরিষার খৈল মাছের অন্যতম খাবার হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। শরিষা চাষ অত্যন্ত
সহজ ও লাভজনক একটি ফসল। মাত্র তিন মাস বা তার চেয়ে কম সময়ে এই ফসল ঘরে আনা
সম্ভব। এই ফসল উৎপাদনে আমরা একদিকে উন্নত মানের তৈল অন্যদিকে উন্নত মানের
মাছের খাবার পেতে পারি। পতিত জলাশয়ে মাছ চাষের ব্যবস্থা করতে হবে। তাতে করে
আমাদের দেশে কোন অনাবাদি জমি থাকবে না। ফলে আমরা খাদ্য উৎপাদনে এগিয়ে যেতে
পারবো। দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ভাল হলে আমরাও ভাল থাকতে পারবো। গতকাল ২৯
জানুয়ারী (রবিবার) দুপুরে জেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের অডিটরিয়ামে
মৎস্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো: আবদুস সাত্তার ন্যাশনাল
এগ্রিকালচার প্রোগ্রাম এনএটিপি-২ প্রচেক্টের বাৎসরিক কর্মশালায় এসব কথা
বলেন।
এসময় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত
ছিলেন মৎস্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রামের বিভাগীয় সহকারী পরিচালক ওমর ফারুক,
রিসোর্স পার্সন হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চান্দিনা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য
কর্মকর্তা ফারুক ময়েদুজ্জামান, নাঙ্গলকোট উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা,
দেবিদ্বার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, ব্রাহ্মনপাড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা জয়
বণিক, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, দাউদকান্দি উপজেলা মৎস্য
কর্মকর্তা, লাকসাম উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত ফিল্ড
এ্যাসিস্টেন্ট, লীফ ও মৎস্যচাষীবৃন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা মৎস্য
কর্মকর্তা বলেন, আমাদের জেলায় যে কয়টি উপজেলা আছে সকল উপজেলায় মাছ উৎপাদ
বৃদ্ধি করার জন্য যা করা প্রয়োজন আমরা সব কিছু করতে প্রস্তুত। চাষীদের আমরা
পরামর্শ দিয়ে তাদেরকে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ করতে যা যা করা প্রয়োজন তাই করছি।
এসময় তিনি বিভিন্ন উপজেলায় গত বছর এবং এর আগে করোনাকালীন সময়ে কোন উপজেলা
কি কি কাজ সম্পাদন করেছে তার প্রেজেন্টেশান গুলো দেখেন। প্রেজেন্টেশান
শেষে যাদের কর্মকান্ড ভাল হয়েছে তাদেরকে ধন্যবাদ দেন এবং যাদের গুলো আরো
ভাল হওয়ার দরকার ছিল তাদেরকে আরো ভাল করার পরামর্শ দেন। মাছ উৎপাদন বাড়ানোর
জন্য কি কি করা দরকার সে বিষয়ে পরামর্শ দেন। চাষীদের নিকট থেকে মাছ চাষে
কি কি সমস্যা হচ্ছে এবং কি করলে সমস্যা সমাধান করা সম্ভব তা সম্পর্কে মতামত
নেন এবং তাদেরকে বিষয়টি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানোর আশ^াস দেন।
এসময়
চাষী পরেশ চন্দ্র সরকার জানান, বর্তমান বাজারে খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় মাছ
উৎপাদনে চাষী লাভবান হতে পারছেনা। সময়বেধে মাছের দাম কম বেশি হয়ে থাকে
কিন্তু খাদ্যের দাম বাড়ে কিন্তু কমে না। তাতে চাষী লোকসান গুনতে হয়। এতে
করে অনেক চাষী মাছ চাষে নিরুৎসাহী হচ্ছে। এ বিষয়ে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা
জানান, আমরা বিভিন্ন সময় মাছের খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের তদারকি করি।
সে ক্ষেত্রে উৎপাদনকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের দাবী হচ্ছে তারা বিদেশ থেকে
কাচামাল বেশি দামে আনেন এবং সেক্ষেত্রে ১৫% ভ্যাট দিতে হয়। যার কারণে
তাদের খাদ্যের দাম বেশি পরে। তাই তিনি দেশে মাছের খাদ্য উৎপাদনের জন্য জোর
দেন। তাহলে মাছের খাদ্য উৎপাদনে খরচ কমে আসবে এবং মাছ চাষে চাষীরা লাভবান
হতে পারবে। এজন্য তিনিও অনাবাদি জমি আবাদ করার প্রতি জোর আহ্বান জানান।
সরিষা চাষ সহ কৃষি উৎপাদনের দিকে সকলকে মনোযোগী হতে জোর দাবী জানান।
দেশে
মাছ উৎপাদনে দাউদকান্দি উপজেলা ২য় স্থানে। তাই দাউদকান্দি উপজেলা মৎস্য
কর্মকর্তাকে আরো বিস্তুত আকারে কাজ করতে জোরালো আহ্বান জানান। দাউদকান্দি
উপজেলা মাছ উৎপাদনের চারণভূমি তাই তাদের কর্ম তৎপরতা বৃদ্ধি করতে বলেন।
কর্মশালার
রিসোর্স পারসন চান্দিনা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ফারুক ময়েদুজ্জামান
বলেন, এই কর্মশালার বিভিন্ন উপজেলা থেকে যে প্রেজেন্টেশন প্রদর্শিত হয়েছে
অনেকের প্রেজেন্টেশন সুন্দর হয়েছে। বিগত দিনে যে কাজ গুলো সম্পাদিত হয়েছে
এতে করে জবাবদিহিতরা একটা জায়গা তৈরি হয়েছে। বিগত দিনে আমরা কি কি কাজ
করেছি তা আজকে এই প্রেজেন্টেশনের মাধ্যঃমে উঠে এসেছে। আগামী দিনে আরো
সুন্দর করে কিভাবে আমাদের কাজ গুলোকে প্রেজেন্ট করা যায় সেদিকে নজর দিতে
হবে।