মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩
৭ চৈত্র ১৪২৯
‘অশিক্ষিত দুবাইওয়ালা’ বনাম শিক্ষিত দুর্নীতিবাজ
কামরুল হাসান বাদল
প্রকাশ: রোববার, ২৯ জানুয়ারি, ২০২৩, ২:২৫ এএম |

 ‘অশিক্ষিত দুবাইওয়ালা’ বনাম শিক্ষিত দুর্নীতিবাজ
এই উপমহাদেশ একসময় সমৃদ্ধ ছিল, যে কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মানুষ ভাগ্যান্বেষণে ভারতে আসত। আসত দস্যুরা, লুণ্ঠনের জন্য। অনেকে আসত ভারত দখলের জন্য। অর্থাৎ সম্পদই একপ্রকার কাল হয়ে উঠেছিল সম্পদে-ঐশ্বর্যে ভরপুর ভারত উপমহাদেশের জন্য। উপমহাদেশের সবচেয়ে সমৃদ্ধ ছিল অবিভক্ত বা বৃহত্তর বাংলা। সেই কারণে বাংলাও বারবার আক্রান্ত হয়েছে, দখল হয়েছে। দখল, শোষণ আর লুণ্ঠনে বাংলা তার ঐশ্বর্য হারিয়েছে। এসব কথা ইতিহাসে লেখা আছে।
বেশিদিন আগের কথা নয়, পাকিস্তান আমলেও আরব দেশ থেকে অনেকে এদেশে আসত ভিক্ষা করতে। এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করেছেন এমন মানুষ এখনও বেঁচে আছেন আমাদের সমাজে। আরবদের অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে মূলত গত শতাব্দীর সত্তরের দশক থেকে। ১৯৭৩ সালে আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর বিশ্বে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পায় এবং তাতে লাভবান হয় মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ দেশগুলো। এরপর থেকে এই দেশগুলোর আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে পরিবর্তনের ঢেউ লাগে। রাতারাতি পাল্টাতে থাকে দেশগুলো। শুরু হয় অবকাঠামোসহ নানা ক্ষেত্রে উন্নয়ন আর সেসব কাজে তাদের প্রয়োজন হয় প্রচুর শ্রমশক্তির। খুলে যায় মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার। ওই সময়ে বাংলাদেশ, ভারত, শ্রীলঙ্কার মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো হতে প্রচুর মানুষ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোয় গমন করে। শিক্ষাদীক্ষায় পিছিয়ে থাকা বাঙালি প্রবাসীরা শ্রমিক হিসেবেও অদক্ষ হওয়ায় শুরু থেকে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও অন্যান্য দেশের প্রবাসী কর্মজীবীদের তুলনায় কম সুবিধা পেত। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের মুসলিমরা আলাদা কোনো সুবিধা ভোগ করতে পারেনি কখনো। ওই দেশগুলোতে বাঙালি মাত্রই আরবদের ভাষায় মিসকিন। তবে মধ্যপ্রাচ্যের শ্রমবাজার বাংলাদেশের অর্থনীতিতে যে বড় প্রভাব রেখেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
মধ্যপ্রাচ্যের এই শ্রমিকদের কল্যাণেই দেশের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হয়েছে, রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে। এই শ্রমিকদের শ্রম-ঘাম-মেধায় মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশের চেহারা পাল্টেছে। দুবাই বর্তমানে বিশ্বের মেগাসিটির মধ্যে অন্যতম। ওই ঝলমলে দুবাইয়ের প্রতিটি উন্নয়নে আছে বাংলাদেশী শ্রমিকের অবদান।
এবার দুবাই সংবাদমাধ্যমে শিরোনাম হয়ে এসেছে তবে তার শ্রমবাজার কিংবা সেখানে কর্মরত শ্রমিক বা প্রবাসীদের নিয়ে নয়। এসেছে এদেশের কিছু সুবিধাপ্রাপ্ত অথচ দেশের সঙ্গে প্রতারণা করা মানুষের কারণে। আসুন সংবাদটি আরেকবার পাঠ করি।
বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গত রোববার দেশে তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির সম্পদ কেনার অভিযোগ অনুসন্ধান করতে নির্দেশ দিয়েছেন। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআরের) প্রতি এ নির্দেশে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
‘দুবাইয়ে ৪৫৯ বাংলাদেশির হাজার প্রপার্টি’ শিরোনামে ১০ জানুয়ারি একটি দৈনিকে প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস ১২ জানুয়ারি একটি আবেদন করেন। আদালতে আবেদনের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন।
রুলে বিদ্যমান আইনি বিধান ভঙ্গ করে যেসব ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মানি-লন্ডারিং করে সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে বেআইনিভাবে অ্যাপাটর্মেন্ট ও বাড়ি বা অন্য কোনো সম্পদ কিনেছেন, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা ও ব্যর্থতা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। বেআইনিভাবে বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অন্য কোনো সম্পত্তি ক্রয়কারী এবং মানি-লন্ডারিংয়ে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তা-ও জানতে চাওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, এর আগে বিদেশি ব্যাংক বিশেষ করে সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি নাগরিক ও কোম্পানির পাচার করে জমা রাখা অর্থ উদ্ধারে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুবীর নন্দী দাসসহ সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী একটি রিট করেন। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ একটি আদেশ দিয়েছিলেন। ১০ জানুয়ারি প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রকাশ্যে ও গোপনে বিপুল অর্থ পাচার হচ্ছে দুবাইয়ে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড ডিফেন্স স্টাডিজের (সি৪ এডিএস) সংগ্রহ করা তথ্য বিশ্লেষণের ভিত্তিতে ইইউ ট্যাক্স অবজারভেটরি জানিয়েছে, বাংলাদেশে তথ্য গোপন করে দুবাইয়ে সম্পত্তি কিনেছেন ৪৫৯ বাংলাদেশি।
২০২০ সাল পর্যন্ত তাদের মালিকানায় সেখানে মোট ৯৭২টি সম্পত্তি কেনার তথ্য পাওয়া গেছে। কাগজে-কলমে এর মূল্য সাড়ে ৩১ কোটি ডলার। তবে প্রকৃতপক্ষে এসব সম্পত্তি কিনতে ক্রেতাদের ব্যয়ের পরিমাণ আরও অনেক বেশি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের সত্যতা নিশ্চিত বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পত্রিকার সম্পাদককে ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
বিগত কয়েক দশক থেকে সুইস ব্যাংকে টাকা জমানোর বিষয়টি বিশ্বে প্রবল আলোড়ন তোলে। কয়েকবছর থেকে বাংলাদেশি অনেকের নাম প্রকাশ হয়ে পড়লে টাকা পাচারের স্থান হিসেবে আরব আমিরাত অনেকের নিকট নিরাপদ হয়ে ওঠে। অর্থ বিনিয়োগ সহজ ও জবাবদিহিবিহীন হওয়ার কারণে ভারত-বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রচুর ধনীর কাছে সংযুক্ত আরব আমিরাত তথা দুবাই স্বর্গরাজ্য হয়ে উঠেছে। শপিংমল ও আবাসন ব্যবসায় বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার লগ্নি করছেন তারা। তালিকায় মুম্বাইয়ের তারকা শাহরুখ খানসহ অনেক ব্যবসায়ী আছেন। কয়েকবছর ধরে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ কামাই করে দুবাইয়ে ঘাঁটি গাড়ছে অনেকে। এদের সঙ্গে আছে ঋণখেলাপী, অবৈধ উপায়ে রাতারাতি কোটিপতি বনে যাওয়া রাজনীতিক, মাদক কারবারি ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। এরা দেশের আগা-তলার সবটুকু নিংড়ে খেয়ে সম্পদ পাচার করে দুবাইতে স্বর্গ গড়ে তোলায় ব্যস্ত রয়েছে। দেশে যখন ডলার সংকট, ডলার সংকটের কারণে যখন দেশের আমদানি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে তখন তারা নিজ মাতৃভূমির সঙ্গে বেঈমানি করে দেশের ডলার পাচার করেছে বিদেশে। আর একই সময়ে এই দেশের আরেকদল সন্তান বিদেশের মাটিতে অমানুষিক পরিশ্রম করে, মানবেতর জীবন কাটিয়ে তিল তিল করে সঞ্চিত অর্থ তথা ডলার পাঠিয়েছে দেশে। যাদেরকে আমরা তথাকথিত ভদ্র-শিক্ষিতজনেরা ভ্রু কুঁচকে ‘দুবাইওয়ালা’ বলে পরিহাস করি। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে চাকরি করলেও আমরা সাধারণভাবে সবাইকে ‘দুবাইওয়ালা’ বলে থাকি।
যে দুবাইওয়ালাদের অর্থে ভারী হয়েছে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবার আসুন তারা কীভাবে টিকে আছে মরুভূমির দেশে সে সম্পর্কে জেনে নিই খানিকটা। আরব আমিরাতের মোট জনসংখ্যার (বসবাসকারী বিদেশিসহ) সাড়ে ৯ শতাংশ বাংলাদেশি। এদের অধিকাংশই শ্রমিক। কাজেই খেটে খাওয়া এসব মানুষের কষ্টের কোনো শেষ নেই। কারণ বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য দুবাইসহ মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে কোনো শ্রম আইন নেই। সেখানে মালিকের, যারা স্থানীয় আরব বা তাদের ব্যবসায়িক অংশীদার, ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে চাকরি করা বা বেতন পাওয়া। ফলে সেসব দেশে মানবেতর জীবনযাপন করছেন তারা।
অধিকাংশ শ্রমিককে প্রতিদিন অন্তত ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয়। কোম্পানিভেদে কাজের সময়সীমা ১৬ ঘণ্টা পর্যন্ত হয়। অনেকে কাজের চাপে ঠিকঠাক ঘুমাতেও পারেন না। ভোরে বেরিয়ে পড়তে হয় কাজের উদ্দেশে। ডেরায় ফিরতে ফিরতে রাত ৯-১০টা হয়। রাত ৪টায় উঠেই আবার কর্মস্থলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে হয়। কর্মস্থল থেকে বাসা এবং বাসা থেকে কর্মস্থল এই চক্রে বাঁধা তাদের জীবন। স্বাভাবিকভাবেই দাবদাহ এখানে একটু বেশি হওয়ায় নির্মাণশ্রমিক এবং রাস্তাঘাটে নিয়োজিত লোকজনের জন্য কিছুটা ছাড় আছে। তাপমাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে থাকাকালীন কাজের ফাঁকে বিরতি পান তারা। তবে সময়টা পুষিয়ে দিতে রাত জেগে কাজ করতে হয় অনেকের।
মরুভূমির দেশের প্রতিটি ইট-বালুর কণার সঙ্গে মিশে আছে দেশের এসব শ্রমিকের ঘাম এবং শ্রম। কিন্তু এরপরও প্রত্যাশিত পারিশ্রমিক পান না তারা। মাসিক ৫০০ দিরহাম যা বাংলাদেশি ১৫ হাজার টাকা চুক্তিতে কাজ করছেন এমন শ্রমিকের সংখ্যা কম নয়। পরিচ্ছন্নকর্মী এবং গৃহকর্মীদের ক্ষেত্রেই বেতন কাঠামোটা এই পর্যায়ে।
শপিংমলে কাজ করা শ্রমিকদের বেতন অবশ্য কিছুটা সন্তোষজনক। এক হাজার থেকে দুই হাজার দিরহাম পর্যন্ত পারিশ্রমিক পেয়ে থাকেন তারা। চুক্তিভিত্তিক এসব কাজের বাইরেও আরো অনেক কাজ আছে। তবে কাজ পাওয়ার জন্য যথেষ্ঠ বেগ পেতে হয়। মাসের ১৫ দিনও কাজহীন থাকতে হয় অনেককে।
আরব আমিরাতে পদোন্নতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বঞ্চিত বাংলাদেশিরা। ভালো কাজের সুযোগ থাকলেও নির্দিষ্ট কোম্পানির চাকরি ছাড়ার উপায় নেই। মূলত নির্দিষ্ট কোম্পানি এবং কিছু ব্যক্তির কাছে জিম্মি হয়ে আছেন অনেকে। এমনিতেই কাজের তুলনায় পারিশ্রমিকের পরিমাণ কম। তার ওপর ভিসা নবায়নের জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। যা ক্রমেই কঠিন করে তুলছে আরব আমিরাতের প্রবাসীদের জীবন।
এমন করে তিল তিল করে জমানো টাকা শ্রমিকরা দেশে পাঠান যাদের পেছনে সরকার কোনো টাকাই খরচ করেনি কখনো। আর যাদের শিক্ষার পেছনে সরকার প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে, সরকারি বৃত্তি দিয়ে উচ্চ শিক্ষালাভের জন্য বিদেশে পাঠিয়েছে সেসব মেধাবী, শিক্ষিতরা আর দেশে ফিরে আসে না। তারা সে দেশেই স্থায়ী হয়ে যায় এমনকি তারা দেশেও টাকা পাঠায় না। ‘অশিক্ষিত দুবাইওয়ালা’রা খেয়ে না খেয়ে দেশে টাকা পাঠায় আর শিক্ষিত দুর্নীতিবাজরা দেশের টাকা বাইরে পাঠায়।
আরেকটি ঘটনার উল্লেখ করে লেখাটির ইতি টানতে চাই। ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালে জালিয়াতি করে ব্যাংকে থাকা স্বর্ণ আত্মসাতের মামলার দুই আসামির জামিন শুনানির একপর্যায়ে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের বেঞ্চ মন্তব্য করে বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন- ‘আমার কৃষক, আমার শ্রমিক দুর্নীতি করে না। দুর্নীতি করে কিছু শিক্ষিত দুর্নীতিবাজ।’ ৫০ বছর আগে বঙ্গবন্ধুর দেওয়া ওই ভাষণ আজ অক্ষরে অক্ষরে মিলে যাচ্ছে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর এই উপলদ্ধি তার নেতৃত্বের দূরদর্শিতার প্রমাণ মেলে।”
ওই দুই আসামি ছিলেন- সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদ ওরফে মহি ও ব্যাংকের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (স্বর্ণ বন্ধকি ঋণ বিভাগ) মো. আশফাকুজ্জামান। আগাম জামিন না দিয়ে চার সপ্তাহের মধ্যে তাদের নিম্নআদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সমবায় ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ ৯ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি মামলা করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছিল, “আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ব্যাংকে জমা হওয়া স্বর্ণ অসাধুভাবে প্রতারণা, জাল-জালিয়াতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে অসৎ অভিপ্রায়ে ষড়যন্ত্র করে আত্মসাৎ করেন। মোট ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৮৮ হাজার ৬৮৬ টাকা মূল্যের স্বর্ণ আত্মসাৎ করা হয়।”
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সেই অসাধারণ বক্তব্য তুলে ধরার লক্ষে ওই মামলায় প্রদত্ত দুই বিচারপতির মন্তব্যের উদ্ধৃতি দিলাম। আজ বাংলাদেশে যেখানে দুর্নীতি সেখানেই জড়িত সমাজের শিক্ষিত তথা বিশিষ্টজনেরা, মেধাবীরা। কারণ প্রকৌশলী হতে হলে মেধাবী হতে হয়, চিকিৎসক হতে হলে মেধাবী হতে হয়, বিসিএস ক্যাডার হতে হলে মেধাবী হতে হয়। আর বাংলাদেশে অবাধ লুণ্ঠন ও দুর্নীতির সঙ্গে কারা জড়িত কিংবা কাদের পক্ষে দুর্নীতি করা সম্ভব তা পাঠকদের বিস্তারিত বোঝাতে হবে না।
লেখা শেষ করার আগে জনগণের পক্ষ হয়ে দাবি জানাবো, খুব সাধারণ মানুষ, বঙ্গবন্ধুর ভাষায় কৃষক-শ্রমিক দুর্নীতি তো করেইনি বরং যারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দেশে ডলার পাঠিয়েছে তাদের বঞ্চিত করে সে ডলার যারা বিদেশে পাচার করেছে তাদের নাম-ধাম প্রকাশিত হোক, তাদের বিচার হোক এবং পাচারকৃত অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা হোক।
যদিও জানি অর্থ ফিরিয়ে আমার দাবিটি অরণ্যেরোদনের মতো হচ্ছে।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক












সর্বশেষ সংবাদ
চৌদ্দগ্রামকে ভূমিহীন-গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী
রমজানে ছুটি মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ, প্রাথমিকে ক্লাস ১৫ দিন
কুবিতে অনুষ্ঠিত হলো ম্যাথ অলিম্পিয়াড
সোনার দাম কমলো
বিমানের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলেন সাকিব
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
সীমানা পরিবর্তনের আবেদন সবচেয়ে বেশি কুমিল্লায়
কমলো হজের খরচ
রমজানে ছুটি মাধ্যমিক স্কুল-কলেজ, প্রাথমিকে ক্লাস ১৫ দিন
বাংলাদেশে ১৪ ঘণ্টা, এবার সবচেয়ে দীর্ঘ সময় রোজা যে দেশে
একই পদ্ধতি অনুসরণে সব মসজিদে তারাবিহ পড়ার আহ্বান
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft