দাখিল
পাশ করার পর কলেজে ভর্তি হতে চেয়েছিল নুসরাত জাহান মুন্নি (১৬)। কিন্তু
তার মা-বাবা জোর করে তাকে পুনরায় মাদরাসায় ভর্তি করায়। এতে মা-বাবার প্রতি
ক্ষুব্ধ হয় মুন্নি। রাগে-ক্ষোভে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা পথ বেছে নেয়
মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান মুন্নী। গত মঙ্গলবার সকালে এলাহাবাদ ইউনিয়নের
কুরাখাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মুন্নীর বাবার নাম আনোয়ার হোসেন। তাঁর ছয়
সন্তানের মধ্যে মুন্নী সবার বড়। পুলিশ মুন্নীর মরদেহ উদ্ধার করে কুমিল্লা
মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (কুমেক) প্রেরণ করেন। স্থানীয় লোকজন জানায়, মুন্নী
দাখিল পাশ করার পর তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে ধামতি কামিল মাদরাসার আলিম ১ম
বর্ষে ভর্তি করায় তার বাবা মা। এতে মুন্নী তার বাবা-মার সাথে প্রায়ই
ঝগড়া-বিবাদ করত। রাগে-ক্ষোভে সে আত্মহত্যা করেছে।
তাঁর সহপাঠিরাও একই
কথা বলেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন সহপাঠি জানায়, দাখিল পাশ করে
কলেজে ভর্তি হবে বলে মুন্নী তাদের বলেছিল। পাশ করার পর তাকে আবার মাদরাসায়
ভর্তি করায় । এতে রাগে- অভিমানে মুন্নী আত্মহত্যা করে।
মুন্নীর বাবা
আনোয়ার হোসেন বলেন, মুন্নী কলেজে ভর্তি হতে চেয়েছিল। আমরা তাকে মাদরাসায়
ভর্তি করাই। সে মাদরাসায়ও গিয়েছে। যেহেতু সে মাদরাসা থেকে দাখিল পাশ করেছে
তাই তাকে মাদরাসায় ভর্তি করা হয়েছে। তবে সে ঠিক কি কারণে আত্মহত্যা করেছে
আমরা জানিনা। তিনি আরও বলেন, মুন্নীর মোবাইল ফোন চালাতেন না, কারও সাথে
সম্পর্কও ছিলো কিনা তাও জানিনা। সে খুব রাগী ছিল।
নিহত মুন্নীর মা
বলেন, নিহত মুন্নীর মা রুমি আক্তার বলেন, মুন্নী ও ছোট বোন ইভা ঘটনার আগের
দিন দুুপুরে নানার বাড়ি থেকে বেড়ায় আসে । রাতে খাবার খেয়ে পাশের কক্ষে দুই
বোন এক সাথে ঘুমায়। সকালে উঠে নামাজ পড়ে, আমি রান্না ঘরে যাই। এসময় মুন্নী
পাশের কক্ষে গিয়ে দরজা বন্ধ করে আবার ঘুমাতে যায়। খাবার তৈরি করে তাকে
ডাকাডাকি করে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে জানালার ফাঁক দিয়ে দেখি ঘরের তীরের
সাথে ফাঁস দিয়ে ঝুলে আছে। পরে আমার চিৎকার শুনে তাঁর বাবা দরজা ভেঙে ঘরে
গিয়ে দেখে মুন্নী আর বেঁচে নেই।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার অফিসার
ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়ে মরদেহ উদ্ধার
করা হয়। আত্মহত্যার কারণ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি। থানায় একটি অপমৃত্যু
মামলা দায়ের করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের
মর্গে পাঠানো হয়েছে।