ছেলেদের থাকলেও মেয়েদের সাফে প্রাইজমানিই নেই!
Published : Tuesday, 27 September, 2022 at 12:00 AM
মেয়েদের
সাউথ এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন (সাফ) চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে দেশের ফুটবল এখন
তুমুল হুলেস্নাড়। ছাদখোলা বাসে বিজয়িনীরা দেশের ফেরার পর প্রতিদিনিই তাদের
নিয়ে হচ্ছে কিছু না কিছু আয়োজন। বিজয়ের গৌরবে সাবিনা-কৃষ্ণারা দেশে
সংবর্ধনা আর পুরস্কারে ভেসে গেলেও আয়োজক সাফের তরফ থেকে কোনো প্রাইজমানিই
নেই! তাই আয়োজকদের তরফ থেকে সাবিনাদের ভাগ্যে জুটেছে শুধু একটি ট্রফি,
সেটিও খুব দর্শনদারী নয়।
আগে বলে নেয়া ভালো, মেয়েদের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রাইজমানির রেওয়াজই নেই।
যদিও
ছেলেদের আসরে চ্যাম্পিয়ন ও রানার আপ দলের জন্য পুরস্কার বরাদ্দ আছে
যথাক্রমে ৫০ ও ২৫ হাজার ডলার। তাই সমাজে বৈষম্য দূর করার পদক্ষেপ হিসেবে
নারী ফুটবলের যাত্রার যে শ্লোগান তোলা হয়ে থাকে কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে,
তার আড়ালেও রয়েছে বৈষম্য। এ নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলার ঝুঁকি আছে জেনে সদ্য
সাফ জয়ী বাংলাদেশ দলের একজন খেলোয়াড় আক্ষেপ করেছেন, ‘দেশে ফেরার পর নানা
আয়োজন দেখে বুঝতে পারছি, আমরা কত বড় টুর্নামেন্ট জিতেছি। সাফের পক্ষ থেকে
শিরোপার একটা ট্রফি ছাড়া কিছুই ছিল না আমাদের জন্য। সাবিনা আপা সেরা
খেলোয়াড় ও সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে দুটো ছোট ট্রফি পেয়েছেন। ’
কাকতালীয়ভাবে
সাফ-এর বর্তমান সভাপতি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিন।
আর দীর্ঘকালীন সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল, যিনি এটাকে বৈষম্য হিসাবে
দেখতে চান না, ‘ছেলেদের সাফ ফুটবল টুর্নামেন্ট হয় স্পন্সরের মাধ্যমে।
এখানে অনেক কিছু করার সুযোগ থাকে। কিন্তু মেয়েদের এই টুর্নামেন্ট চলে ফিফা
ফরোয়ার্ড প্রোগ্রামের টাকায়। ফিফার অর্থ খরচের নিয়ম-নীতি খুব কড়া, এখান
থেকে প্রাইজমানি দেওয়ার সুযোগ নেই। ’ অথচ দুটোই একই ধরনের টুর্নামেন্ট।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ছেলে ও মেয়েদের সিনিয়র দল আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বের আসন
নেওয়ার জন্য লড়ে সাফ ফুটবলে। এরপরও সাফ সম্পাদক আনোয়ারুল হক হেলাল বলছেন,
‘মেয়েদের টুর্নামেন্ট আসলে ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের অংশ। আমাদের এই
টুর্নামেন্টে কোনো দলকে অর্থ খরচ করতে হয় না। সাফ তাদের ভাল জায়গায়
থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করে। এরপরও ভবিষ্যতে কোনো স্পন্সর পেলে প্রাইজমানি
দেওয়ার চিন্তা করবো। ’
মেয়েদের ফুটবলে বৈশ্বিক আসারগুলোর দিকে
তাকালে প্রাইজমানিহীন টুর্নামেন্ট পাওয়া যাবে না। বিশ্বকাপ ফুটবল তো বটেই,
গত ফেব্রুয়ারিতে সমাপ্ত মেয়েদের এএফসি কাপে চ্যাম্পিয়ন চীন পেয়েছে ১০ লাখ
ডলার প্রাইজমানি। রানার-আপ কোরিয়া জিতেছে ৫ লাখ ডলার। এছাড়া সেমিফাইনালে
বিজিত দুই দলের জন্যও অর্থ পুরস্কার ছিল এক লাখ ৫০ হাজার ডলার করে।