Published : Monday, 26 September, 2022 at 12:00 AM, Update: 26.09.2022 1:23:55 AM

মো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ||
কুমিল্লার
মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন বাজা চাপিতলা গ্রামে এক গর্ভবতী
গৃহবধূকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনা তদন্তে গাফিলতির অভিযোগে ৩
পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। রোববার রাতে বিষয়টি দৈনিক কুমিল্লার
কাগজকে নিশ্চিত করেন, বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি ইকবাল হোসেন। জেলা পুলিশ
সুপারের নির্দেশে ক্লোজড হওয়া পুলিশ সদস্যরা হলেন, আলোচিত ওই মামলার
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বাঙ্গরা বাজার থানার এসআই ওমর ফারুক, এএসআই আতাউর
রহমান এবং কনস্টবল মামুন মিয়া।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৫
সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক দেড়টায় ৮/১০ জনের একটি দল মা ও ছোট
সন্তানকে মারধর করে হাত-পা বেধে মুখে স্ক্রচট্যাপ লাগিয়ে তার গর্ভবতী
কন্যাকে পাশের রুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই সময় বিবস্ত্র অবস্থায় ভিডিও ধারণ
করা হয়। তখন মেয়েটির গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য পেটে লাথি মেরে আহত করে।
ঘটনার পরদিন গত ১৬ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলেও প্রকৃত
সত্য ঘটনাকে আড়াল করে সাধারণ চুরির অভিযোগ নিয়ে সময় ক্ষেপনের মাধ্যমে ঘটনার
প্রধান আসামীকে পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ উঠে এসআই ওমর ফারুকের
বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলার প্রধান আসামী টনকী গ্রামের আনু
মিয়ার ছেলে জাকির হোসেনের সাথে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুকের মুঠোফোনে
যোগাযোগ রয়েছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে
তাকে দেশত্যাগে সুযোগ করে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে এই তদন্ত কর্মকর্তার
বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও অভিযোগের তদন্ত করার সময় প্রধান আসামীর শ্বশুরকে সাথে
নিয়ে যায় ওই এসআই। প্রধান আসামীর শ্বশুরকে সাথে নিয়ে তদন্তে যাওয়ায় এলাকায়
তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বিষয়টি দৈনিক কুমিল্লার কাগজসহ বিভিন্ন
জাতীয় ও স্থানীয় দৈনিকে প্রকাশিত হওয়ার পর অবশেষে জেলা পুলিশ সুপারের
হস্তক্ষেপে শুক্রবার রাতে এজাহার নামীয় একজন ও অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী
করে বাঙ্গরা বাজার থানায় ধর্ষণ ও পর্ণগ্রাফি আইনে মামলা রেকর্ড করা হয়। একই
সাথে মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পীযুষ চন্দ্র দাসের তদন্তে
ক্লোজড হওয়া পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে গাফিলতির প্রমান পায়। ফলে রোববার জেলা
পুলিশ সুপারের নির্দেশে ওই পুলিশ সদস্যদেরকে বাঙ্গরা বাজার থানা থেকে
ক্লোজড করা হয়।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি ইকবাল হোসেন দৈনিক কুমিল্লার
কাগজকে বলেন, এক গর্ভবতী গৃহবধূকে ধর্ষণ ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণের ঘটনা
তদন্তে গাফিলতির প্রমান পাওয়ায় জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে মামলার
তদন্তকারী কর্মকর্তা ও এসআই ওমর ফারুক, এএসআই আতাউর রহমান এবং কনস্টবল
মামুন মিয়াকে লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে।