Published : Sunday, 25 September, 2022 at 12:00 AM, Update: 25.09.2022 2:08:16 AM
মো. হাবিবুর রহমান, মুরাদনগর ।।
কুমিল্লার
মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন রাজা চাপিতলা গ্রামে এক গর্ভবতী
গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ ও ধর্ষণের ঘটনার ৮দিন পর অবশেষে মামলা
নিয়েছে পুলিশ। গত শুক্রবার দৈনিক কুমিল্লার কাগজের শেষ পৃষ্টায় ‘বিবস্ত্র
করে ভিডিও ধারণের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর টনক লড়ে পুলিশ
প্রশাসনের। অবশেষে জেলা পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপে শুক্রবার রাতে এজাহার
নামীয় একজন ও অজ্ঞাত আরো ৭/৮ জনকে আসামী করে বাঙ্গরা বাজার থানায় ডাকাতি,
ধর্ষণ ও পর্ণগ্রাফি আইনে মামলা করা হয়েছে।
ঘটনার পরদিন গত ১৬
সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ করতে গেলেও প্রকৃত সত্য ঘটনাকে আড়াল করে
সাধারণ চুরির অভিযোগ নিয়ে সময় ক্ষেপনের মাধ্যমে ঘটনার প্রধান আসামীকে
পালিয়ে যেতে সহায়তার অভিযোগ উঠেছে এসআই ওমর ফারুকের বিরুদ্ধে। তবে এ
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ঘটনার সাথে জড়িত কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
খোঁজ
নিয়ে জানা যায়, মামলার প্রধান আসামী টনকী গ্রামের আনু মিয়ার ছেলে জাকির
হোসেনের সাথে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ওমর ফারুকের মুঠোফোনে যোগাযোগ রয়েছে বলে
একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে তাকে দেশত্যাগে
সুযোগ করে দেয়ারও অভিযোগ উঠেছে এই তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। এ ছাড়াও
অভিযোগের তদন্ত করার সময় প্রধান আসামীর শ্বশুরকে সাথে নিয়ে যায় ওই এসআই।
প্রধান আসামীর শ্বশুরকে সাথে নিয়ে তদন্তে যাওয়ায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভের
সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার রাতে মামলা হওয়ার পর শনিবার দুপুরে ওই নারী
কুমিল্লার শিশু ও নারী নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ২২ ধারা মতে জবানবন্দি
দিয়েছেন। এর আগে তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধর্ষণের আলামত
পরীক্ষা করা হয়। এসআই ওমর ফারুক প্রধান আসামীর শ্বশুরকে সাথে নিয়ে তদন্তে
যাওয়ায় বিষয়টি স্বীকার করলেও টাকা লেনদেন ও পালিয়ে যেতে সহায়তার বিষয়টি
অস্বীকার করেন।
বাঙ্গরা বাজার থানার ওসি ইকবাল হোসেন দৈনিক কুমিল্লার
কাগজকে বলেন, বাদীর পরিবার প্রকৃত বিষয়টি আমাদের কাছে প্রকাশ করেনি। ভিকটিম
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রইব্যুনালে ২২ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে ও
ধর্ষনের আলামত পরীক্ষা করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব অবহেলার বিষয়টি
স্বীকার করে তিনি বলেন, আসামীর শ্বশুরকে সাথে নিয়ে তদন্তে যাওয়ার কোন
এখতিয়ার নেই।
মুরাদনগর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পীযুষ চন্দ্র দাস
দৈনিক কুমিল্লার কাগজকে বলেন, এসপি স্যারের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেয়ে
শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে তদন্ত করি। প্রাথমিক ভাবে সত্য প্রমানীত
হওয়ায় রাতেই অভিযোগটি এফআইআরভূক্ত করা হয়েছে। ভিকটিম ন্যায় বিচার
প্রাপ্তিতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তার পরিবারকে নিরাপত্তার ব্যবস্থা
করা হয়েছে। পুলিশের অবহেলার বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ১৫
সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক দেড়টায় ৮/১০ জনের একটি দল মা ও ছোট
সন্তানকে মারধর করে হাত-পা বেধে মুখে স্ক্রচট্যাপ লাগিয়ে তার গর্ভবতী
কন্যাকে পাশের রুমে নিয়ে ধর্ষণ করে। ওই সময় বিবস্ত্র অবস্থায় ভিডিও ধারণ
করা হয়। তখন মেয়েটির গর্ভের সন্তান নষ্ট করার জন্য পেটে লাথি মেরে আহত করে।