
করোনাভাইরাসে
আক্রান্তের হার অনেকটাই কমে গিয়েছিল। পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের দৈনিক
হার ৩ শতাংশের কাছাকাছি চলে এসেছিল। সেই হার আবার বাড়তে শুরু করেছে। গতকাল
মঙ্গলবারের কালের কণ্ঠে প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, পরীক্ষা বিবেচনায়
আক্রান্তের দৈনিক হার আবার ৯ শতাংশের ওপরে উঠেছে।
এক দিনে আক্রান্ত
হয়েছে ৪২১ জন। একই সময়ে বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। সোমবার
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিবৃতিতে বলা হয়, পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় দেশে ডেঙ্গু
আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৩৪৫ জন এবং মারা গেছে চারজন। সেদিন
সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল মিলিয়ে ভর্তি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা
ছিল এক হাজার ১১২ জন। এর মধ্যে ঢাকায়ই ছিল ৮৫৩ জন।
করোনা মহামারির
প্রকোপ কিছুটা কমে আসায় মানুষ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা প্রায় বাদই দিয়েছে।
হাট-বাজার, অফিস-আদালত, জনসমাগমের স্থান কিংবা গণপরিবহনে দেখা যায় প্রায়
কেউই মাস্ক পরছে না। পারস্পরিক দূরত্ব রক্ষা কিংবা বারবার হাত ধোয়ার মতো
স্বাস্থ্যবিধিগুলো আর মানা হয় না। অথচ অনেক দেশেই করোনা মহামারির
প্রাদুর্ভাব এখনো ব্যাপক। অনেক দেশে নতুন করে বাড়ছে সংক্রমণ। সে ক্ষেত্রে
বাংলাদেশেও করোনার নতুন ঢেউ আঘাত হানতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেক
বিশেষজ্ঞ। তাঁদের মতে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে এখনই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা
নেওয়া প্রয়োজন। অফিস-আদালতে ‘নো মাস্ক নো সার্ভিস’ নীতি কড়াকড়িভাবে পালন
করা উচিত। একইভাবে ডেঙ্গু বিস্তারের ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা পালন করছে মানুষের
অসচেতনতা। ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী এডিস মশা সাধারণত পরিষ্কার পানিতে
বংশবিস্তার করে। অনেকেই ঘরের ভেতর বিভিন্ন পাত্রে, ফুলের টবে পানি জমিয়ে
রাখে। আবার অনেকে পরিত্যক্ত ভাণ্ড, ডাবের খোসা, পরিত্যক্ত টায়ার ইত্যাদি
যেখানে-সেখানে ফেলে রাখে। এগুলোতে বৃষ্টির পানি জমা হয় এবং তাতে এডিস মশার
বংশবিস্তার ঘটে। ডেঙ্গু থেকে বাঁচতে হলে এডিস মশার বংশবৃদ্ধি রোধ করতেই
হবে। অন্যদিকে এই মশা যাতে না কামড়াতে পারে সে জন্য মশারি ব্যবহার করা,
ইসসেক্ট রিপেলেন্ট মাখা কিংবা ইনসেক্টিসাইড স্প্রে করা জরুরি। রাজধানী ও বড়
শহরগুলোতে সিটি করপোরেশনের মশক নিধন অভিযান আরো জোরদার করতে হবে।
করোনা
ও ডেঙ্গুর প্রকোপ থেকে নিজেদের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ রাখতে
ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যসচেতনতা আরো বাড়াতে হবে। একইভাবে বাড়াতে হবে সরকারি
প্রচেষ্টা।