কুমিল্লার চান্দিনায় রুবি আক্তার (২৭) নামে তিন সন্তানের জননীর রহস্য জনক মৃত্যু ঘটেছে। স্বামীর পরিবারের দাবী আত্মহত্যা এবং নিহতের মায়ের দাবী হত্যা।
সোমবার (২৩ মে) দুপুরে চান্দিনা উপজেলার বরকইট ইউনিয়নের খিরাসার মোহনপুর গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। নিহত রুবি আক্তার ওই গ্রামে মামুন মিয়ার স্ত্রী। রুবি’র মৃত্যুর পর স্বামী মামুন মিয়া আত্মগোপন করে। এ ঘটনায় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
জানা যায়, প্রায় ১১ বছর পূর্বে একই ইউনিয়নের যোগপুকুরিয়া গ্রামের মৃত বাচ্চু মিয়ার মেয়ে রুবি আক্তারকে বিবাহ দেয়। দাম্পত্য জীবনে এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। সোমবার মালয়েশিয়া থেকে দেশে ফিরছেন দেবর কাউসার। দেবরকে আনতে শ্বশুর আব্দুর রশিদ, ও শ্বাশুরী পিয়ারা বেগম এর সাথে রুবিও বিমান বন্দরে যেতে চান। কিন্তু স্বামী মামুন তাতে বাঁধা দেন। এ নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ হয়। দুপুুরে নিজ ঘরে জানালার গ্রীলের সাথে ওড়ানা প্যাঁচানো অবস্থায় দেখতে পান ননদ সুমী আক্তার।
সুমী আক্তার জানান, ছোট ভাই বিদেশ থেকে আসতেছে শুনে সকাল ১০টায় আমি বাপের বাড়িতে আসি। আমার আব্বা-আম্মার সাথে বড় ভাইয়ের মেয়ে রিয়া (১০) ও মাহিন (৮) ঢাকায় গেলেও ভাই ও ভাবী যায়নি। দুপুরে ভাবীকে খোঁজতে গিয়ে ১৮ মাস বয়সী ছেলেটিকে উঠানে দেখি। আর ঘরে গিয়ে জানালার গ্রীলের সাথে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় ভাবীকে দেখে আমি ডাক চিৎকার দেই। আমার ডাক চিৎকারে আশ-পাশের মানুষ ছুটে এসে তাকে ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে নিহতের মা আতরজান বিবি জানান, জানালার গ্রীলের সাথে কোন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষ ফাঁস নিতে পারে না। আমার মেয়েকে হত্যার পর হত্যাকন্ডের মোড় অন্যদিকে ঘুরাতে তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমার মেয়েকে নানা অযুহাতে প্রায়ই মারধর করতো তার স্বামী মামুন। এ ঘটনার পর মামুন পালিয়ে যায়। রুবি আমার একমাত্র মেয়ে। আমার মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আরিফুর রহমান জানান, মরদেহ উদ্ধার করেছি। বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছি এবং তদন্ত করছি। মরদেহ ময়না তদন্ত করার জন্য কুমেক হাসপাতালে পাঠানো হবে। মামলা দায়ের করার জন্য নিহতের পরিবার থানায় এসেছে।