অনলাইনে সনদ যাচাই, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চায় ইসি
Published : Monday, 16 May, 2022 at 12:00 AM
মাধ্যমিকের সব সনদ যাচাইয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সহায়তা চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এক্ষেত্রে অফলাইন সনদ যাচাইয়ের নির্ধারিত ফি মওকুফেরও ব্যবস্থা নিতে বলেছে সংস্থাটি।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ১৯৯৬ সালের আগের শিক্ষা সনদ অনলাইনে যাচাই করা যায় না। ফলে অফলাইনে চিঠি পাঠিয়ে সনদ যাচাই করতে হয়। এতে সময়ক্ষেপণ যেমন বেশি হয়, তেমনি ব্যয়ও বেড়ে যায় সেবাগ্রহীতার। তাই সব সনদ অনলাইনে যাচাইয়ের ব্যবস্থা নিলে নিমিষেই কাজ শেষ করা যায়।
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিষয়টি নিয়ে মাঠ পর্যায় থেকে প্রতিনিয়ন প্রতিবেদন আসে, যে সেবা প্রদানে বিলম্বের একটি বড় কারণ শিক্ষা সনদ যাচাইয়ের দীর্ঘসূত্রিতা। তাই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে এ বিষয়ে সহায়তা চাওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি এ নিয়ে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে সহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
জানা গেছে, সেই সিদ্ধান্তের আলোকে ইসির এনআইডি অনুবিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে একটি চিঠি দিয়েছেন।
এতে উল্লেখ করা হয়েছে- নাগরিকরা জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন আবেদনের ক্ষেত্রে তার এসএসসি সনদ অনুযায়ী সংশোধন চান। এসএসসি সনদ অনলাইনে যাচাই করে সঠিকতা পাওয়া সাপেক্ষে সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়। তবে অনেক ক্ষেত্রে আবেদনকারী তার জাতীয় পরিচয়পত্রে নিজ নাম, পিতার নাম, মায়ের নাম ও জন্ম তারিখের আমূল পরিবর্তনের আবেদন করেন। এ ধরনের জটিল সংশোধনের ক্ষেত্রে আবেদনকারী প্রমাণ হিসেবে তার যে মাধ্যমিক সনদটি দাখিল করেন, তা অনেক ক্ষেত্রে অনলাইনে পাওয়া যায় না। কারণ, মাধ্যমিক শিক্ষা সনদ যাচাইয়ের ক্ষেত্রে ১৯৯৫ ও তার পূর্ববর্তী শিক্ষা সনদগুলো অনলাইনে যাচাই করা যায় না।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়-সংশোধন আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এসএসসি সনদের সঠিকতা যাচাই করা অত্যাবশ্যক। ১৯৯৬ সালের আগের মাধ্যমিক শিক্ষা সনদগুলো যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডে চিঠি দেওয়ার মাধ্যমে অথবা আবেদনকারীর সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের নির্ধারিত ফি ৮৩ টাকা (বোর্ড ফি ২৫ টাকা + কমিশন ৩০ টাকা + অনলাইন সার্ভিস চার্জ ২০ টাকা + ভ্যাট ৮ টাকা) প্রদান সাপেক্ষে সনদের সঠিকতা যাচাইয়ের মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়।
এই প্রক্রিয়ায় সংশোধনের আবেদন নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে জটিলতা ও দীর্ঘ সূত্রিতার সৃষ্টি হয়। তাই জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা সনদগুলো যাচাইয়ের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক ফি মওকুফের ব্যবস্থা নেওয়া অথবা সব শিক্ষা সনদ অনলাইনে যাচাইয়ের ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সব শিক্ষা বোর্ডকে সার্বিক নির্দেশনা দেওয়া প্রয়োজন।
শিক্ষা সচিবকে এই অবস্থায় সব শিক্ষা বোর্ডকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়ার জন্যও চিঠিতে অনুরোধ করা হয়।
২০০৭-০৮ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে ইসি। সেই তথ্য ভাণ্ডারের মাধ্যমেই পরবর্তীতে নাগরিকদের দেওয়া হচ্ছে জাতীয় পরিচয়পত্র-এনআইডি।
বর্তমানে ইসির তথ্যভাণ্ডারে ১১ কোটি ৩২ লাখ নাগরিকের তথ্য রয়েছে। তাদের মধ্যে প্রায় সবাই পেয়েছেন এনআইডি। যাদের মধ্যে বিরাট একটি অংশের এনআইডি সংশোধনের প্রয়োজন পড়ে। কেননা, চাকরি থেকে শুরু করে কোনো নাগরিক সেবাই এখন এনআইডি ছাড়া পাওয়া যায় না।