
সৌরভ মাহমুদ হারুন, বুড়িচং ||
কুমিল্লার
গোমতী নদীর প্রতিরক্ষা উপর বুড়িচং উপজেলার পীরযাত্রাপুর ইউনিয়ন এর
গোবিন্দপুরে শত বর্ষি বাজারের অর্ধশতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও অবৈধ
স্থাপনার অভিযোগে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন ও
পানি উন্নয়ন বোর্ড।
(১১ মে ২০২২) বুধবার দিনব্যাপী পরিচালিত অভিযানে এসব অবৈধ দোকান পাট স্থাপনা গুড়িয়ে দেয়া হয়।
উচ্ছেদ
অভিযানের সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট উম্মে
মুসলিমা,পানি উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী ওয়ালিউজ্জামান , উপ
বিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজালাল সেলিম, ইমরান হোসেন, সহকারী পরিচালক আরিফুর
রহমান, সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাত হোসেন, এবং শাখা কর্মকর্তা আল
মামুনুর রশীদ ভূইয়াসহ জেলা ও উপজেলা পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সরেজমিনে
গিয়ে দেখা যায়, কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার পীরযাএাপুর ইউনিয়নের
গোবিন্দপুর বাজারের উওর গোবিন্দপুর মৌজার এলাকায় গোমতী প্রতিরক্ষা বাঁধের
উপর গড়ে উঠা অবৈধ দোকানপাট ভেকু এবং বুলডোজার দিয়ে গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। অপর
দিকে বাজারের বিভিন্ন দোকান পাট এর ব্যবসায়ীদের মাথায় পড়েছে হাত। সব বেশী
সমস্যায় পড়েছে ছোট খাট ব্যবসায়ীরা। যারা এ দোকানের উপর নির্ভর করে চলতো
তাদের সংসার। এদিকে গোবিন্দ পুর গ্রামের ডা. আলেক হোসেন, ডা. এছরারুল হক
ডা. আবুল হাসেম বলেন আমরা এ বাজারে প্রায় ৪০ বছর ধরে এ পেশার সঙ্গে জড়িত।
স্থানীয় লোকজনের সেবায় আমরা ৫-৬ জন পল্লী চিকিৎসক সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন
করে আসছি। স্থানীয় বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুল অদুদ জানান আমি প্রায়
৪০ বছরের উপরে এ বাজারে বিভিন্ন মোদি, স্টেশনারী সহ নানাহ নিত্যপন্যের
মালামাল এলাকার দোকানদার বা ব্যবসায়ীদের নিকট পাইকারি দরে বিক্রি করে
আসছি।এতে করে কুমিল্লা, কংশনগর, বুড়িচং কিংবা ক্যান্টনমেন্ট গিয়ে অধিক সময়
ব্যয় করে যেতে হত না। এতে করে এলাকার বিরাট ক্ষতি হয়ে গেল।
আব্দুল্লাহ
আল মামুন, আবুল হোসেন, আবুল কালাম সহ গ্রামের আরও বিভিন্ন লোকজন জানান
বাজার টি শতবছরেরও বেশি আগে থেকে এ বাজার টি এলাকার ৮-১০ গ্রামের লোকজন
বাজার হাট ( সওদাই) করতেন। সাপ্তাহে ২ দিন বাজারটি বসে বৃহস্পতিবার ও
রোববার। সাপ্তাহিক বাজার ছাড়া প্রতিদিন সকালে কাঁচা বাজার বসে। এছাড়া সারা
দিন এ বাজারে নিত্যপণ্য সমূহ ক্রয় বিক্রি করা হয়। এতে এলাকার বাসীর সুবিধা
হত।
এদিকে সোমবার বিকালে উচ্ছেদের নোটিশ এবং মাইকিং এর খবর শুনে গোমতী
প্রতিরক্ষা বাঁধের উপর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে দখলকারীরা বুধবার সকাল
থেকে নিজ উদ্যোগে অবৈধ স্থাপনার মালামাল সরিয়ে নিতে থাকেন।
অপরদিকে পাল
পাড়া এলাকায় মোঃ জাকির হোসেন সহ আরও বহু লোকে অভিযোগ করে জানান যে গত বছর
জেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে
পালপাড়া এলাকার গোমতীর দুই পাড়ের প্রতিরক্ষা বাঁধের উপর দোকান পাট গুড়িয়ে
দেয়া হয়। কিছু দিন যেতে না যেতে দুই পাড়ে আবার ও স্থাপনা গড়ে তুলে ব্যবসা
বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে স্থানীয় লোকজন। কেউ কেউ সরকারি জায়গা দখল করে দোকান
পাট নির্মাণ করে মানুষের নিকট ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করছে। এবিষয়ে পানি উন্নয়ন
বোর্ড এর নিকট লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কিন্তু কোন ব্যবস্থা নেয়া
হচ্ছে না।
৬৪ জেলার নদ-নদী খাল বিল ও ছড়াসহ অন্যান্য সরকারী জলাশয় এবং
তীরবর্তী অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনার প্রেক্ষিতে গোবিন্দপুর
বাজার গোমতী নদীর তীরে ৫৮ টি অবৈধ স্থাপনার উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা
হয়।