Published : Thursday, 9 December, 2021 at 12:00 AM, Update: 09.12.2021 1:12:03 AM

রণবীর ঘোষ কিংকর। ‘আশ্বিন গেল কার্তিক মাসে পাকিল ক্ষেতে ধান, সারামাঠ ভরি গাহিছে কে যেন হলদি কোটার গান’ পল্লী কবি জসিম উদ্দিনের কবিতার ন্যায় কার্তিক মাস থেকে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বিস্তৃর্ণ ফসলী মাঠে পাকতে শুরু করে আমন ধান।
অগ্রাহয়নের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় ধান কেটে নতুন ধান ঘরে তোলার উৎসব। কিন্তু হেমন্তের শেষে হঠাৎ বৃষ্টির হানায় জমিতেই মিশে যাচ্ছে কৃষকদের সৃজিত আমন ধান।
কেউবা ধান কেটে নিয়ে গেছেন বাড়িতে, পারেনি ঘরে তুলতে। আবার কেউবা জমিতে ধান কেটে ছড়াতেও সুযোগ পায়নি। ঘুর্ণিঝড় ‘জাওয়াদ’ প্রভাবে গত ৫ ডিসেম্বর (রবিবার) থেকে শুরু হওয়া টানা তিন দিনের বৃষ্টিতে ডুবে গেছে ফসলী মাঠ। পানিতে থৈ থৈ করছে পাকা ধান ও শীতকালীন সবজি ক্ষেত। অসময়ের এমন বৃষ্টিতে দিশেহারা হয়ে আছে চান্দিনা উপজেলার কৃষক।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, কৃষি নির্ভর চান্দিনায় উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে রোপা আমন ধান আবাদ করা হয়েছে। অগ্রাহনের প্রায় মাঝামাঝি থেকে প্রায় ৫০ শতাংশ জমির ধান কাটা হয়। এখনও প্রায় সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমির ধান মাঠে রয়েছে। এতে প্রায় ২৫ হাজার মেট্রিকটন আমন ধান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। হেমন্তের শেষ দিকে হঠাৎ বর্ষণে মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়বে এ উপজেলার কৃষক।
উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক আবুল বাসার জানান, রবিবার সকালে আমি ২৪ শতাংশ জমির ধান কাটা শুরু করি। এই মৌসুমে সাধারণত আমরা জমিতেই ধান ছাড়িয়ে বাড়িতে আনি। যে কারণে কাটা ধান জমিতে রেখেই কাজ করছিলাম। হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হওয়ায় প্রথম ভেবেছি অকালের বৃষ্টি হয়তো শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও বৃষ্টি না কমায় জমিতে পানি জমে যায়। আজও (মঙ্গলবার) ওই ধান বাড়িতে আনতে পারিনি। জমির ওই কাটা ধান জমিতেই মিশে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুল হক রোমেল জানান, যেসব জমির ধান কেটে জমিতেই রেখে দিয়েছি সেগুলোর কিছু ক্ষতি হবে। আর যেগুলো এখনও কাটেনি সেইসব জমির ধান তেমন ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যেহেতু ঘুর্ণিঝড় চলে গেছে আশাকরি বৃষ্টিও থেমে যাবে। সেইক্ষেত্রে আমন ধানের ক্ষতির সম্ভাবনাও খুব বেশি হবে না। তবে আরও ২/১ দিন বৃষ্টি থাকলে ক্ষতির পরিমানও বাড়বে।