ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
কুমিল্লায় পূজামণ্ডপ ঘিরে বিশৃঙ্খলা
মেয়র সাক্কুর পিএস বাবু ও যুবদল নেতা রোমান গ্রেপ্তার
Published : Monday, 8 November, 2021 at 12:00 AM, Update: 08.11.2021 12:45:34 AM
মেয়র সাক্কুর পিএস বাবু ও যুবদল নেতা রোমান গ্রেপ্তারতানভীর দিপু:
কুমিল্লার নানুয়া দিঘীর পাড়ের অস্থায়ী পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননার ঘটনায় সহিংসতা ও ভাংচুরের দু’টি মামলায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর পিএস মঈনুদ্দিন আহমেদ বাবুসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার বাকি দুইজন হলেন যুবদল নেতা রোমান হাসান ও রবিউল ইসলাম। গ্রেপ্তারের পর গতকাল রবিবার তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। রবিবার বেলা আড়াইটায় কুমিল্লার চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ইরফানুল হক চৌধুরীর আদালতে উপস্থাপন করা হলে পরে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম জানান, কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে কোরআন রেখে বিশৃঙ্খলা-সহিংসতা ও মন্দির ভাংচুরের ঘটনার মামলায় কুমিল্লা সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর পিএস মইনুদ্দিন আহমেদ বাবুকে গত শনিবার রাতে খাগড়াছড়ির সাজেক এর একটি রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। রিমান্ড শুনানী পরবর্তীতে অনুষ্ঠিত হবে।
পুলিশ জানায়, ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত ও ভাংচুর সহিংসতার দুটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। এর মধ্যে নগরীর ঠাকুর পাড়ায় কালীগাছতলা মন্দিরে হামলা ও ভাংচুরের একটি মামলার বাদী পুলিশের উপ-পরিদর্শক আলমগীর এবং  অন্যটির বাদী নানুয়াদিঘীর পাড় অস্থায়ী পূজা মণ্ডপের ব্যবস্থাপক তরুন কান্তি মোদক।মেয়র সাক্কুর পিএস বাবু ও যুবদল নেতা রোমান গ্রেপ্তারএছড়া কুমিল্লা মহানগর যুবদল নেতা রোমান হাসান ও রবিউল ইসলাম নামে আরো দুই জনকেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ দুইজনকে গত শনিবার রাতে কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। তাদেরকেও দুপুর আড়াইটায় আদালতে তোলা হয়।
 গত ১৩ অক্টোবর কুমিল্লার নানুয়া দিঘীর পাড়ে অস্থায়ী পূজা মণ্ডপে কোরআন অবমাননা পরবর্তীতে  বিশৃঙ্খলার ঘটনার সময় বিভিন্ন ফুটেজ দেখে মেয়র সাক্কুর পিএস বাবুর ভূমিকা নিয়ে সন্দেহ জাগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। এছাড়া মণ্ডপ সংশ্লিষ্টরা, ভাংচুরের ঘটনায় বাবু বিরুদ্ধে বিভিন্ন মাধ্যমে অভিযোগও জানান। ঘটনার পর মামলা দায়ের পরবর্তী তদন্ত কার্যক্রম শুরু হলে তাকে তার বজ্রপুরের বাড়িতে গিয়ে আর পাওয়া যায়নি। পুরো বাড়টি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। প্রতিবেশী, আত্মীয় স্বজন এবং তার রাজনৈতিক সঙ্গীদের কাছেও বাবুর খোঁজ পাওয়া যায় নি। অবশেষ গত শনিবার তাকে খাগড়াছড়ির পর্যটন এলাকা সাজেক এর একটি রিসোর্ট থেকে গ্রেপ্তার করে কুমিল্লায় নিয়ে আসে পুলিশ। রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।
কুমিল্লা সিটি মেয়র মনিরুল হক সাক্কুর পিএস মঈনুদ্দীন আহমেদ বাবু কুমিল্লা জেলা বিএনপির প্রাক্তণ ও প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আহমেদের ছেলে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডির পুলিশ সুপার খান মোহাম্মদ রেজোয়ান জানান, ধর্ম অবমাননার মামলায় গ্রেপ্তার ইকবাল হোসেনসহ চারজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য যাচাই যাচাই বাছাই চলছে। তাদের তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই শেষ হলে আদালত নতুন করে যে তিনদিনের রিমান্ড দিয়েছে তাতে তাদের নতুন করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
খান মোঃ রেজোয়ান আরো জানান, ম্যানুয়ালি ও টেকনোনোক্যালি যাচাই বাছাই চলছে, শেষ হলে বলা যাবে। তবে সিআইডি হেড কোয়ার্টার থেকে সব তথ্য জানাবো।
এদিকে কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ারুল আজিম জানান, পিএস বাবুসহ তিনজনকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আমাদেরকে দুপুরে দিয়েছে।
তিনি জানান, যথাযথ পক্রিয়া অনুসরণ করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। শুনানির পর এ সংক্রান্ত আদেশ পাওয়া যাবে।
কুমিল্লা জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা পূজামণ্ডপে কোরআন অবমাননা এবং সহিংসতার ঘটনায় এ পর্যন্ত ১২ টি মামলায় মোট ৯৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে কোরআন রাখা ইকবাল, ঘটনার প্রথম ফেসবুক লাইভকারী ফয়েজ, প্রথম ৯৯৯-এ কল করা ইকরাম, দারোগাবাড়ি মাজারের দুই সহকারী খাদেম ফয়সল ও হুমায়ূন রয়েছে।