ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
একটি ভ্রমণের সাতকাহন
Published : Tuesday, 5 October, 2021 at 12:00 AM
একটি ভ্রমণের সাতকাহনশান্তিরঞ্জন ভৌমিক ||

প্রথম অধ্যায়
২০০৮ সালে সর্বপ্রথম ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোলকাতায় গিয়েছিলাম। মনে হয় আর কোনোদিন যাওয়া হবে না। এজন্য কীনা জানি না- ১৬ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত ২১ দিন প্রচণ্ড ব্যস্ততায় দায়বদ্ধ ও প্রতিশ্রুত অনেক কাজ করতে সক্ষম হয়েছিলাম। অনেকদিন পর মনে হলো- এ ভ্রমণটা ছিল পূর্বনির্ধারিত ও চমকপ্রদ। মূলত আমার নির্ধারিত কাজ ছিল তিনটি।
১.    বেলুড় মঠ ও দক্ষিণেশ্বর মন্দির পরিদর্শন করা।
২.    বাবা-মায়ের পিণ্ডদানের জন্য বিহারের পুণ্যধাম গয়া যাওয়া।
৩.    বোলপুর রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনে ৪দিন থাকা ও দেখা।

১৫ অক্টোবর ২০০৮ সালে কুমিল্লা রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রমের অধ্যক্ষ পূজনীয় স্বামী বিশ্বেশ্বরানন্দ মহারাজের সঙ্গে সকালে ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনে যাই এবং স্টেট ব্যাংক অব ইণ্ডিয়া থেকে তিনশত ডলার এণ্ড্রুজ করি। সন্ধ্যায় আরামবাগ থেকে সোহাগ বাসে ভারতের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিই। ১৬ তারিখ সকালে বেনাপুল বর্ডারে পৌঁছি। বাস যেখানে থেমেছে, সেখান থেকে ভ্যানে সকালবেলার ঠাণ্ডা হাওয়ায় উন্মুক্ত পরিবেশে বর্ডারে গিয়ে পৌঁছি। বাসটিতে ছিল এসি, যা আমার সহ্য হয় না, চাদর মড়ি দিয়ে রাতটা আধো ঘুম আধো জাগরণে কাটিয়েছি। বর্ডারের বিধি মোতাবেক কাজ সেরে একটি জীপ ভাড়া করে প্রথম যাই মধ্যমগ্রাম অঞ্চলে। এখানে পূর্বনির্ধারিত একজন ভদ্রলোকের বাসায় দুপুরের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা। এব্যবস্থা করে রেখেছিলেন চট্টগ্রাম রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের অধ্যক্ষ পূজনীয় শ্রীমৎ স্বামী শক্তিনাথানন্দ মহারাজ। যার বাসায় গিয়েছি, তিনি চট্টগ্রামের আদি বাসিন্দা এবং রামকৃষ্ণ পরিমণ্ডলের শিষ্য। মধ্যমগ্রামে আমার পাড়ার শ্রী সমরেন্দ্র মজুমদার, যিনি কুমিল্লার কাপড়- ব্যবসায়ী ও কুমিল্লা রামকৃষ্ণ অনাথ নিবাসের সম্পাদক ছিলেন, তিনি পারিবারিক কারণে ভারতে চলে যান। তাঁর মোবাইল নাম্বার জানা ছিল, যোগাযোগ হওয়ায় স্বল্পসময়ের জন্য দেখা হয়ে যায়। সমরবাবুর সঙ্গে দেখা হওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। সন্ধ্যার আগে বেলুড় রামকৃষ্ণ মঠে পৌঁছি এবং সেখানে আমার থাকার ব্যবস্থা হয়। খুবই রাজসিক সুব্যবস্থাপনা। তার কারণ, আমি কুমিল্লা রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রমের প্রাক্তন সম্পাদক এবং বেলুড় মঠ অধিগ্রহণের পর সভাপতি। সুতরাং বেলুড় মঠে আমার কদর বা মর্যাদা ছিল অন্যরকম। একজন স্ট্রাষ্টি মহারাজের বিশেষ অতিথি হিসেবে আমাকে গণ্য করা হয়। তাই থাকা-খাওয়া ফ্রি এবং দেখভাল ছিল বিশেষ ধরনের। বেলুড় মঠে চারদিন ছিলাম। এই চারদিনের প্রথম দু’দিন বাংলাদেশের বিভিন্ন মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষদের সঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুর, শ্রীমা সারদাদেবীর জন্মস্থান জয়রামবাটী এবং যাতায়াতের পথে শ্রীতারকেশ্বর মন্দির দর্শনের সুযোগ পাই। তৃতীয় দিন দক্ষিণেশ্বর মন্দির দেখতে যাই কুমিল্লা রামকৃষ্ণ মিশন ও আশ্রমের অধ্যক্ষের সঙ্গে।
এখানে বলে রাখি, প্রতি বছর শ্রীদুর্গাপূজার পর বেলুড় মঠে প্রতিটি মিশন ও আশ্রমের অধ্যক্ষদের সম্মেলন হয়। এজন্যই বাংলাদেশের ১২টি মিশন-আশ্রমের অধ্যক্ষদের বেলুড় মঠে যাওয়া।
চতুর্থ দিন বেলুড় মঠের রামকৃষ্ণ মন্দিরে ঠাকুরের পূজা নিবিড়ভাবে দেখার উদ্দেশে একঠায় দীর্ঘক্ষণ বসেছিলাম। বিকেলে মন্দির চত্বরে একটি মাজার আছে, তা দেখতে যাই, একটি গাভীর খামার আছে, তাও দেখার সৌভাগ্য হয়। এছাড়া মায়ের মন্দির, স্বামীজীর মন্দির, সন্ন্যাসীদের শ্মশানভূমি ঘুরে ঘুরে দেখি। সুযোগ পেলে প্রেসিডেণ্ট মহারাজকে প্রণাম করতে যাই, তা অবশ্য নির্ধারিত সময়ে। তখন প্রেসিডেণ্ট মহারাজ ছিলেন পরমপূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী আত্মস্থানন্দজী মহারাজ। সেক্রেটারি মহারাজ ছিলেন পূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী স্মরণানন্দজী মহারাজ। স্ট্রাষ্টি ছিলেন পূজ্যপাদ শ্রীমৎ স্বামী প্রমেয়ানন্দজী মহারাজ। আমি তাঁরই অতিথি হয়ে থাকার সুযোগ লাভ করি।
পঞ্চম দিন ঢাকুরিয়া-সেলিমপুর থেকে আমার অগ্রজপ্রতিম শ্রী সন্তোষকুমার দত্ত (বর্তমানে প্রয়াত) আমাকে তাঁর বাসায় নিয়ে যান এবং ঐদিনই সন্ধ্যায় একজন সহকারীসহ বিহারে গয়ার উদ্দেশ্যে দ্রোণ নামক রেলগাড়িতে চলে যাই। গয়াধামের বিষয়টি পরে বিস্তারিত লিখছি। যথারীতি সন্তোষদার নির্দেশানুযায়ী ভারত সেবা আশ্রমে (সংঘে) চলে যাই এবং যথানিয়মে বাবা-মার পিণ্ডদান কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করি। পূর্বে জানা ছিল না-পিণ্ডদানের পর ভারত সেবা আশ্রমে যথারীতি প্রসাদ গ্রহণের পর একজন সন্ন্যাসী জানতে চাইলেন-কতদিন থাকব। বললাম-রাতে চম্বলট্রেনে কোলকাতা ফিরে যাব। ট্রেন রাত সাড়ে এগারটায়। তিনি পরামর্শ দিলেন-৩০কি:মি: দূরে বুদ্ধগয়া ধাম, বৌদ্ধসম্প্রদায়ের প্রধান তীর্থভূমি, যেখানে বোধিবৃক্ষের নীচে গৌতমবুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভ করেছিলেন তা যেন দেখে আসি। টেক্সি পাওয়া যায়, আসা-যাওয়ায় ৩০০ টাকা এবং সম্মতি জানানোর পর ব্যবস্থা করে দিলেন। বিকেলে বুদ্ধগয়াধাম গেলাম। যদি না যেতাম, তবে কী যে হারাতাম তা বর্ণনা দেয়া যাবে না। সেখানে পৃথিবীর বৌদ্ধশাসিত রাষ্ট্রসমূহের পৃথক পৃথক মন্দির-চীন, থাইল্যাণ্ড, শ্রীলঙ্কা, জাপান, সিঙ্গাপুর, এবং ভারতের মূল মন্দির। বোধিবৃক্ষটি হলো মূলবৃক্ষের প্রজন্ম। বিভিন্ন দেশের বৌদ্ধসন্ন্যাসীদের আনাগোনা, ফাইভস্টার হোটেলসহ থাকবার নানান ব্যবস্থা, অপূর্ব পরিবেশ, তীর্থস্থানের চেয়েও আমার কাছে একটি বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে অন্যতম। বুদ্ধগয়ায় যাওয়ার আমার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। যদি না যেতাম, এ অপূর্ণতা থাকত জীবনের জন্য ব্যর্থতার নামান্তর।
    গয়াধাম থেকে বাবা-মার পিণ্ডদান সুচারুভাবে শেষ করে পরম তৃপ্তি নিয়ে কোলকাতায় সন্তোষদার কাছে চলে এলাম। তখন শান্তিনিকেতনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি হলাম। যে আমাকে নিয়ে যাবে, কুমিল্লার ছেলে উত্তমকুমার রায়, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘কাজী ওদুদের’ উপর পিএইচডি করছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেই এ পরিকল্পনা। কিন্তু উত্তম বিশেষ কারণে শিলিগুড়ি গেছে, মোবাইলে যোগাযোগ করতে পারছি না। এজন্য ২/৩ দিন বিলম্ব হবে। এ সময়টা কী করি। সন্তোষদার ছেলে রঞ্জন (দত্ত), তার গাড়িটি ব্যবহারের জন্য দিয়ে দেয়। আমরা গাড়ি করে কালীঘাট কালীমন্দির, বিড়লা মন্দির, গোলপার্কে বিবেকানন্দ ক্যালচারের সেন্টার, গড়ের মাঠ, ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল, সন্তোষদার অন্যবাড়ি রাজপুর, এলাচি, নরেন্দ্রপুর, তাঁর মেয়ের বাড়ি ঘুরে ঘুরে দেখালো। আমার জেঠতাত ভাই অমলেন্দু ভৌমিকের ফোন নম্বরটি খুঁজে পাই। তিনি টালিগঞ্জ মেট্টো রেলস্টেশনের কাছে বাড়ি করেছেন। ছোটবেলায় একসাথে বেড়ে উঠেছি, অষ্টমশ্রেণিতে পড়াকালীন অমলদা ত্রিপুরায় পিসেমশায় স্বর্গীয় প্রমোদরঞ্জন চৌধুরীর কাছে চলে যান বা পাঠিয়ে দেয়া হয়। পিসেমশায় তখন বিলোনিয়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক। সেখান থেকে অমলদা ম্যাট্রিক পাশ করে এম বি বি কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করে পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম,এজি পাশ করে বিদেশি (আমেরিকা) কোম্পানিতে উচ্চ পদে চাকরি শেষে তখন অবসর জীবন কাটাচ্ছেন। তাঁকে ফোন করার পর অবাক হলেন এবং সন্তোষদার বাসা থেকে আমাকে তাঁর বাসায় নিয়ে যান। সেখানে দু’দিন কাটালাম। অনেকদিন পর দেখা, কতকথা, কত স্মৃতি, নাস্টালজিয়ার সাতকাহন করতেই দু’দিন নিমিষে শেষ হয়ে গেলো। এদিকে বারাসতে থাকেন মণিলাল সাহা, কুমিল্লার লোক, আমার ছাত্রীর স্বামী, কুমিল্লায় থাকতে বিশেষ কাজে আমার সহযোগিতায় তিনি এতটাই মুগ্ধ ও কৃতজ্ঞ ছিলেন, তিনি টালিগঞ্জ থেকে আমাকে নিয়ে গেলেন। টালিগঞ্জ থাকতেই অপর দু’জন জেঠতাত ভাই শেফালেন্দু ভৌমিক (তিনি আমার সহপাঠী ছিলেন) ও নির্মলেন্দু ভৌমিকের বাসায় দেখা করতে যাই। সেখানেই জানতে পারি যে আমার মেসতাতভাই দিলিপকুমার সরকার আগরতলা থেকে বাড়িঘর বিক্রি করে চাকরি শেষে বাঘইহাঁটিতে ফ্ল্যাট কিনে চলে এসেছেন।
    দিলিপদা আমার সহপাঠী, একসঙ্গে ১৯৬১ সালে একই স্কুল থেকে আমরা মেট্রিক পাশ করেছি। আমার বড় মেসোমশায় স্বর্গীয় ললিতবিহারী সরকার ছিলেন আমাদের স্কুলের প্রধান শিক্ষক। ১৯৬৫ সালে মেসোমশায় সপরিবার ত্রিপুরা আগরতলা চলে যান। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমি স্ত্রীসহ দীর্ঘ নয়মাস তাঁদের সঙ্গে ছিলাম। শরণার্থী শিবিরে যেতে মাসীমা দেননি। তখন দিলিপদা ছিলেন আমার দু:খকষ্টের ভাগীদার, তখনও তিনি বিয়ে করেননি। পরে যোগাযোগ তেমন ছিল না। তিনি যে কোলকাতা একেবারে চলে গেছেন, তাও জানতাম না। শেফালেন্দুদা মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে আমার সঙ্গে কথা বলতে দেন। তিনি বললেন, অবশ্যই যেন তাঁর সঙ্গে দেখা করে যাই। বাঘইহাঁটি বারাসতের কাছে। মণিলালবাবুর বাড়ি গিয়ে দিলিপদার কাছে চলে যাই। দু’দিন ছিলাম। এ দুদিন ছিল স্বপ্নপূরণের সোনালী যাত্রা। দিলিপদার বাসার কাছে ছিল আমার মাতৃদেবীর গুরুদেবের বাড়ি। আমি জানতাম না। দিলিপদা জানানোর পর আমার একটি কথা মনে পড়ে যায়। আমার মা মৃত্যুর আগে আমাকে বললেন যে, তাঁর খুব ইচ্ছে ছিল, তাঁর গুরুদেবকে একবার সেবা অর্থাৎ ভোজন করান। কিন্তু তা তো সম্ভব হবে না। তিনি আমাকে বললেন- যদি আমি কোনো কারণে সুযোগ পাই, তাহলে যেন মার ইচ্ছাটা পূরণ করি। একথাটি মা ও আমিই জানি, অন্য কেউ নয়। যথারীতি আমি ভুলে গিয়েছি। কোলকাতায় যাওয়ার পর বা আগে একথা মনেও আসেনি। দিলিপদা যখন গুরুদেবের কথা বললেন, আমার সেকথা মনে পড়ে যায় এবং গুরুদেবের বাড়ি গিয়ে দেখা করি। তিনি আমাদের পূর্বপরিচিত এবং অসাধারণ স্নেহশীল সাবলীল ব্যক্তিত্বপূর্ণ পুরুষ। আমি আমার মায়ের ইচ্ছার কথা জানালাম, তিনি একটু হাসলেন এবং গুরুসুলভ ভঙ্গিতে বললেন- ‘আমি সব জানি’। বললাম-‘এখন আমি কী করব’। তিনি বললেন, ‘তুমি তোমার মার ইচ্ছা পূরণ করো।’ আমি প্রণাম করে তাঁর হাতে কিছু টাকা দিয়ে বিনয়ের সাথে বললাম- তা দিয়ে যেন মায়ের ইচ্ছা পূরণ করেন। আমি এধারায় বিশ্বাসী নই। তারপরও এ ঘটনাটা আমার কাছে অলৌকিক বা ব্যতিক্রম মনে হয়েছে। তাৎক্ষণিক আমি অভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। তা কী করে হয়। আমি তো টালিগঞ্জ যাওয়ার কথা নয়, দিলিপদার সঙ্গে যোগাযোগের তো প্রশ্নই উঠে না, আর গুরুদেবের সান্নিধ্য লাভ তা তো কল্পনাতীত। এসব বিষয়গুলো আমাকে অনেকদিন ভাবিয়েছে।
    তন্মধ্যে উত্তমের সঙ্গে যোগাযোগ হয়ে যায়। সে কোলকাতা ফিরে এসেছে। সে খড়দাহ থাকে। বাঘইহাঁটি থেকে আমাকে সে নিয়ে যায় এবং তারপরের দিন আমরা শান্তিনিকেতন চলে যাই। এই পর্বের কথা অন্যদিন লিখব।
    শান্তিনিকেতনে চারদিন ছিলাম। সেখান থেকে ফিরে কলেজ স্ট্রিট যাই, বই কিনি, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সী কলেজ ও সংস্কৃত কলেজের ফটকই দেখি, ভিতরে যাওয়া হয়নি। কফিহাউসে উত্তমের গাইড ড. রবীন পালের সঙ্গে কফি খাই। মাত্র কয়েকঘন্টা, তারপরও মনে হলো অনেক স্মৃতি ও প্রাপ্তি নিয়ে এলাম। পরের দিন উত্তমকে নিয়ে কোণনগর এর আমার মিতা কুমিল্লাবাসী শান্তিরঞ্জন সরকারকে, আমার একজন বৌদিকে দেখতে বিরাটি এবং সন্ধ্যায় বারাসত মণিলালবাবুর বাড়িতে চলে আসি। রাত্রি যাপনের পর মাতৃভূমি বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। রাত ১০টায় ঢাকা এসে পৌঁছি। আমি এখনও হিসাব মিলাতে পারি না-মাত্র ২১ দিনের ভ্রমণ পরিক্রমায় পরিকল্পনা বহির্ভূত যেসব যোগাযোগ ঘটেছে, তা কীভাবে হলো? সবকিছুই যেন পূর্ব নির্ধারিত, আমি কেবলমাত্র দাবার গুটির মতো অন্যের হাতে পরিচালিত হয়েছিলাম। সে এক আশ্চর্য অভিজ্ঞতা।

(ক্রমশঃ)
লেখক: সাহিত্যিক, গবেষক ও সাবেক অধ্যাপক
 মোবাইল: ০১৭১১-৩৪১৭৩৫