ই-পেপার ভিডিও ছবি বিজ্ঞাপন কুমিল্লার ইতিহাস ও ঐতিহ্য যোগাযোগ কুমিল্লার কাগজ পরিবার
প্রবীণদের আড্ডার জায়গা কই?
Published : Friday, 1 October, 2021 at 12:00 AM, Update: 01.10.2021 1:10:44 AM
প্রবীণদের আড্ডার জায়গা কই?তানভীর দিপু:
ভোরে শরীর চর্চা- ডায়বেটিস ও হৃদরোগসহ নানান ব্যাধি থেকে মুক্তির জন্য পৌর পার্ক - ধর্মসাগর পাড়ে হাঁটা। সন্ধ্যায় ঈদগাহ মাঠের চারপাশে নির্মল বাতাসের জন্য কয়েক চক্কর ঘুরা। এর বাইরে কুমিল্লার প্রবীণদের অবসরে যাবার জায়গা কই? বয়সের ভারে যারা নুজ্য তাদের অবস্থা আরো বেহাল। ঘর থেকে বের হয়ে নির্জন নির্মল পরিবেশে গিয়ে একদন্ড বসারও জায়গা রাখেনি কেউ। পার্ক, বোটনিক্যাল গার্ডেন, গোমতী নদীর পাড়, ঈদগাহ মাঠ- সবজায়গাতে তরুনদের আড্ডার ভিড়। বিনোদনী শব্দ আর যানবাহনের ভিড়াভিড়ি কোলাহল যেন বয়স্কদের কাছে এই শহরে আরো বেশি যন্ত্রনাদায়ক বিষয়। প্রবীণদেরও যে আড্ডা-প্রাণ খুলে কথা বলা-ঘুরে বেড়ানো কিংবা নির্জনতার প্রয়োজন আছে সে খবর রাখেনি এই শহরের কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে অবস্থাসম্পন্ন বা স্বচ্ছল পরিবারের প্রবীণরা তাদের স্বজনদের কাছ থেকে যে যত্ন পেয়ে থাকে নিম্নমধ্যবিত্ত বা দ্ররিদ্র পরিবারের প্রবীণদের জন্য তা পর্যাপ্ত হয়ে উঠেনা। যে কারণে চিকিৎসা থেকে শুরু করে নানান প্রয়োজনে তারা কোথায় যাবে তার কোন ঠিকানা পায় না তারা। অধিকাংশ এসব প্রবীণরাই অনেকটাই আত্মবন্দী হয়ে ঘরের মধ্যে জীবন যাপন করেন। অন্যদিকে মুক্তিযুদ্ধসহ দেশ ও জীবনের প্রয়োজনের নানান লড়াই সংগ্রামের কথা বলে যেতে কিঙবা রেখে যেতে চান অনেক প্রবীণ ব্যাক্তি। কিন্তু তাদের কথা শুনার যেমন কেউ নেই, তেমনি তাদের স্মৃতিচারণ ও সংরক্ষণেরও নেই কোন ব্যবস্থা।
সাড়ে ৩ শ প্রবীণ নিয়ে কুমিল্লার একমাত্র সংগঠন প্রবীণ হিতৈষী সংঘ। সরকারি-বেসরকারি ভাবে কুমিল্লার প্রবীণদের নিয়ে ক্ষুদ্র পরিসরে নানান কর্মকান্ড পরিচালনা করে সংঘটনটি। সংঘের সাধারণ সম্পাদক মুক্তিযোদ্ধা হায়াতুন্নবী বলেন, প্রবীণরা তাদের অবসর সময়ে কোথায় যাবে? কি করবে? কোথায় গিয়ে প্রবীণরা তাদের কথাগুলো নবীণদের জন্য রেখে যাবে? এমন কোন জায়গা নেই? অনেক বছর ধরেই আমরা চেষ্টা করছি সরকারিভাবে একটি প্রবীণ ভবন পাবার জন্য। জেলা প্রশাসক বরাবর বারবার আবেদন করেছি-কিন্তু প্রবীণদের জন্য জায়গাও হয়নি, ভবনটিও হয়নি।
বিশিষ্ট চিকিৎসক ও প্রবীণ হিতৈষী সংঘের আজীবন সদস্য তৃপ্তীশ চন্দ্র ঘোষ বলেন, যদি প্রবীণদের জন্য একটি আলাদা ভবন থাকতো তাহলে তাঁদের জন্য নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করা যেত। স্বাস্থ্যসেবা থেকে শুরু করে তাদের বিনোদনের ব্যবস্থাও করা যেত। পৌর উদ্যান করে শুরু করে সব জায়গায় তরুণদের যে ভিড় সেখানে প্রবীণদের জায়গা পাওয়াটা আসলেই মুশকিল।    
কুমিল্লা জেলা সমাজ কল্যান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক জেড এইচ মিজানুর রহমান জানান, প্রবীণদের নিয়ে আলাদাভাবে সরকারি কোন উদ্যোগ আপাতত নেই। তবে চাহিদাসম্পন্ন প্রবীণদের জন্য সরকারি শিশু পরিবার’গুলোতে ১০ শতাংশ সিট বরাদ্দ করা আছে। কারো প্রয়োজনে প্রবীণ নিবাসে যেতে হলে কুমিল্লার সংরাইশ শিশু পরিবার(বালিকাতে) নারী প্রবীণরা এবং দেবিদ্বার শিশু পরিবার (বালক) পুরুষ প্রবীণরা থাকতে পারবেন।