Published : Saturday, 3 April, 2021 at 12:00 AM, Update: 03.04.2021 1:45:49 AM
মাসুদ আলম।।
সংক্রমণের
দ্বিতীয় ধাক্কায় কুমিল্লায় দিন দিন করোনাভাইরাস ভয়ঙ্কর রূপ নিচ্ছে। সাধারণ
মানুষের মাঝে মাস্ক ব্যবহারে উদাসীনতা, সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি না
মানার প্রবণতা থাকায় আশঙ্কাজনকভাবে সংক্রমণের হার বাড়ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এই
জেলায় নতুন করে আরও ৯২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। সেইসাথে দীর্ঘ হচ্ছে
মৃত্যুর মিছিল। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ২ জন এবং বরুড়া, লালমাই ও
হোমনায় একজন করে মোট ৫ জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন কওে মারা গেছেন।
এদের মধ্যে ৩ জন নারী ও ২ জন পুরুষ। সবার বয়স ৫৫ থেকে ৬৫ বছর। মারা যাওয়া
ব্যক্তিরা সবাই কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডে
চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন অবস্থায়
তাদের মৃত্যু হয়।
কুমিল্লা সিভিল সার্জন অফিসের পরিসংখ্যান বিভাগের
কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহিন জানান, সংগ্রহকৃত নমুনরা মধ্যে ৩৪২টি প্রাপ্ত
রিপোর্টে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯২ জনের করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। শনাক্তকৃত
ব্যক্তিদের মধ্যে ৭৮ জনই কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকার বাসিন্দা। এছাড়া
লালমাই, লাকসাম ও বরুড়ায় দুইজন করে, মুরাদনগর, সদর দক্ষিণ, চান্দিনা,
দেবিদ্বার ও চৌদ্দগ্রামে একজন করে এবং নাঙ্গলকোটে ৩ জন নতুন করে করোনায়
আক্রান্ত হয়েছেন। জেলায় এ পর্যন্ত ১০ হাজার দুইজনের করোনা শনাক্ত করা
হয়েছে।
তিনি আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লায় নতুন করে আরও ৫ জন
করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এই পর্যন্ত জেলায় মোট ২৯৬ জনের মৃত্যু
হয়েছে। তাদের মধ্যে আছেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় একজন পুরুষ (৬৪) ও
একজন নারী (৫৫), বরুড়ায় একজন নারী (৬৫), লালমাইয়ে একজন পুরুষ (৫৫) এবং
হোমনায় একজন নারী (৬৮)।
কুমিল্লা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, গতকাল শুক্রবার কুমিল্লায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি সুস্থ হননি।
আরও জানা যায়, বিদেশগামী যাত্রীদের নমুনা পরীক্ষায় ৫০১টি প্রাপ্ত রিপোর্টের মধ্যে নতুন শনাক্ত হয়েছে ১১টি।
এদিকে
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তের হার বেড়ে যাওয়ায় সংক্রমণ রোধে জেলা
প্রশাসন কুমিল্লার নগরউদ্যান এবং শিশু পার্কসহ জেলার সরকারি-বেসরকারি সব
বিনোদনকেন্দ্র বন্ধের ঘোষণা করলেও সাধারণ মানুষ তা মানছে না। প্রশাসনের
নির্দেশনা উপেক্ষা করে গতকাল ধর্মসাগরপাড় এবং নগরউদ্যাগে জনসমাগম দেখা
গেছে। সেইসাথে সাধারণ মানুষের মাঝে মাস্ক ব্যবহারেও উদাসীনতা দেখা গেছে।
সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা নেই বললেই চলে। করোনা
সংক্রমণের হার ভয়ঙ্করভাবে বাড়তে থাকলেও মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়েনি।
অন্যদিকে
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় কুমিল্লায় রাত ৯টার মধ্যে
দোকানপাট বন্ধ ঘোষণা করলেও বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার রাতে দেখা গেছে,
ব্যবসায়ীরা যথাযথভাবে দোকান মালিক সমিতির এই নির্দেশনা মানছেন না। এতে করে
দোকান মালিক সমিতির এমন ভূমিকা জনসাধারণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হতে শুরু
করেছে।