বুধবার ৬ ডিসেম্বর ২০২৩
২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩০
ভারতের বদলার অপেক্ষায়
প্রকাশ: শনিবার, ১৮ নভেম্বর, ২০২৩, ১২:০২ এএম |

 ভারতের বদলার অপেক্ষায়মাঠের মূল ফটকের বাইরে শত শত মানুষের ভীড়। রাস্তার ধারে সারি দোকান সাজিয়ে বসেছে হকাররা। ভারতের জার্সি, পতাকা, ক্যাপ-হ্যাট বিক্রি হচ্ছে দেদার। মনে হচ্ছে যেন, ম্যাচেরই দিন। আদতে আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের ফাইনালের দুই দিন আগের টুকরো টুকরো ছবি এসব। ভারতের নামে নানা স্লোগান দিচ্ছিলেন অনেকে। মাঠে সচরাচর যেসব শোনা যায়, সেসব স্লোগান তো আছেই। একজন গলা ফাটিয়ে চিৎকার করলেন, “বাদলা লেঙ্গে হামৃ।”
একটু কৌতূহলি হতেই হলো, কিসের বদলা নিতে চান তিনি! কাছে গিয়ে জানা গেল, তার নাম হানিশ চকসি। কেন তার প্রতিশোধের রক্ত টগবগ করে ফুটছে, সেটিও শোনালেন স্থানীয় এই ব্যবসায়ী।
“২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে আমরা অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরেছিলাম। তখন আমি স্কুলের ছাত্র ছিলাম, আবেগ ছিল অন্যরকম। ফাইনালের হারার পর আমি কেঁদেছিলাম। এবার আমরা ফাইনালে ওঠার পরই খুব করে চাচ্ছিলাম যেন অস্ট্রেলিয়াকে পাই। এবার আমরা ওদেরকে উচিত শিক্ষা দেব।”
২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল সৌরভ গাঙ্গুলি, সাচিন টেন্ডুলকার, ভিরেন্দার শেবাগদের ভারত। যথারীতি প্রত্যাশা ছিল তাদের উত্তুঙ্গ। কিন্তু জোহানেসবার্গে রিকি পন্টিংয়ের দলের অসাধারণ ক্রিকেট আর চেনা পেশাদারিত্বে পিষ্ট হয়েছিল ভারতীয়দের স্বপ্ন।
ভারতের বদলার অপেক্ষায় আহমেদাবাদ
সেই বিশ্বকাপের পর পেরিয়ে গেছে ২০ বছর। ২০১১ সালে নিজেদের মাঠে বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। এছাড়াও জিতেছে টি-টোয়েন্ট বিশ্বকাপ, জিতেছে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। তারপরও ২০ বছর আগের হৃদয়ের ক্ষত এখনও দগদগে। শৈশবের আবেগ বলে কথা!
আবেগের আরও নানা রূপ দেখা গেল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের চারপাশে। জাইমিনি দোশি নামের একজন যেমন বললেন, “আমাদের শহরে বিশ্বকাপ ফাইনাল, আমাদেরকে জিততেই হবে। জিতে উৎসব করব আমরা।” তার পাশেই থাকা জিগনা গাজ্জার অবশ্য সীমানা একটু বাড়িয়ে দিলেন, “ না না, আমাদের শহর বলেই নয়। ফাইনাল তো যে কোনো জায়গায় হতে পারত। তবে আমাদের দেশের বিশ্বকাপ, আমরা জিতব। ট্রফি কেন নিয়ে যেতে দেব!”
মাঠের সামনে থেকে বাবা-মায়ের সঙ্গে জার্সি কিনছিল এক কিশোর। ভিরাট কোহলির বেশ কয়েকটি জার্সি দেখার পর একটি মাপমতো হলো তার। মুখে চওড়া হাসি নিয়ে সে বলল, “ভিরাট ভাইয়া আমাদের চ্যাম্পিয়ন করাবে..।”
আবেগের উথাল-পাথাল ঢেউ এমনই। ভিরাট কোহলি কিংবা রোহিত শার্মা, ভারতীয় ক্রিকেটের গত এক যুগের মহীরূহ যারা, তারাই বিশ্বকাপ জেতাবেন বা তাদের জন্যই জিততে হবে, এরকম চাওয়া ভারতজুড়ে কোটি কোটি মানুষেরই।
ভারতের বদলার অপেক্ষায় আহমেদাবাদ
নিজেদের শেষ বিশ্বকাপ স্মরণীয় করে রাখার সব আয়োজনই করে চলেছেন এই দুজন। অসাধারণ ধারাবাহিকতায় রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে চলেছেন কোহলি। ক্যারিয়ারের এই পর্যায়ে এসে নিজেকে ভেঙে নতুন ঘরানায় গড়ে ম্যাচের পর ম্যাচ দলকে বিধ্বংসী শুরু এনে দিচ্ছেন রোহিত। সবকিছুর পূর্ণতা পাবে, যদি শেষ কাজটুকু সফলভাবে করত পারেন দুজন।
সেমি-ফাইনালে নিউ জিল্যান্ডকে হারিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আহমেদাবাদে এসেই প্রত্যাশার ছবিটা দেখতে পেরেছেন রোহিত-কোহলিরা। বিমানবন্দরের বাইরে প্রচুর মানুষ ছিল দলকে স্বাগত জানাতে। ফাইনালের শহরে তাদেরকে বরণ করে নিতেও ছিল নানা আয়োজন।
এই উচ্ছ্বাসের এখন সর্বোচ্চ শৃঙ্গ ছোঁয়ার অপেক্ষা। এই আনন্দের পূর্ণতা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা।
ফাইনাল ম্যাচের আগে সমাপনী যে আয়োজন হবে, সেসবের মহড়া দেখা গেল শুক্রবার মাঠে। এয়ার প্যারেড শো-এর মহড়াও হরো চারপাশ কাঁপিয়ে আরও অনেক আয়োজন থাকবে। তবে স্থানীয়দের কাছে সবই শেষ পযন্ত ম্লান হয়ে যাবে স্বাগতিক দল না জিতলে।
ভারতের বদলার অপেক্ষায় আহমেদাবাদ
শুক্রবার দুপুরে অনুশীলনে আসার সময়ও মাঠের বাইরে লোকের ভীড় ভারতীয় ক্রিকেটারদের চোখে পড়ারই কথা।
এ দিন অনুশীলনে অবশ্য সব ক্রিকেটার আসেননি। ঐচ্ছিক অনুশীলন ছিল ভারতের। মাঠে কিছুটা ফিল্ডিং অনুশীলন করার পর তারা চলে যান ইনডোরে। সেখানে সংবাদমাধ্যমের প্রবেশাধিকার ছিল না।
আগের দিন স্নায়ুক্ষয়ী সেমি-ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে শুক্রবার কলকাতা থেকে আহমেদাবাদে এসেছে অস্ট্রেলিয়া দল। শনিবার দু দলই ঝালিয়ে নেবে নিজেদেরৃ এই বিশ্বকাপে শেষবারের মতো।
বিশ্বকাপের নক আউট ম্যাচে এই মাঠেই অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর সুখস্মৃতি আছে ভারতের। ২০১১ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে রিকি পন্টিংয়ের সেঞ্চুরি পরও পারেনি সেই সময়ের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। টেন্ডুলকার ও গৌতাম গাম্ভিরের ফিফটি এবং ইউভরাজ সিংয়ের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে ৫ উইকেটের জয়ে সেমিতে উঠেছিল মাহেন্দ্র সিং ধোনির দল।
সেই ম্যাচে খেলা কোহলি ও রাভিচন্দ্রন অশ্বিন আছেন এবারের দলেও। তবে এটি তো স্রেফ একটি নক-আউট ম্যাচই নয়, এটি আসরের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। ট্রফির ফয়সালার ম্যাচ। ২০ বছর আগের ফাইনালই তাই ঘুরেফিরে আসছে নানাজনের আলোচনায়। ভারতীয় এক পত্রিকা যেমন শুক্রবার শিরোণাম করেছে, “বিশ সাল বাদৃ আহমেদাবাদ।” মানে, ২০ বছর পরৃ আহমেদাবাদ।
প্রতিশোধের প্রত্যাশা মিটবে নাকি আহমেদাবাদেও ফিরে আসবে জোহানেসবার্গ? উত্তর মিলবে দ্রুতই।














সর্বশেষ সংবাদ
দীর্ঘ ৩৪ বছর প্রবাস জীবন শেষে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন আবু হানিফ
মহাখালীর রয়েল ফিলিং স্টেশনে আগুন
দেড় দশক পর গান গাইলেন তিশা
এক লাখ টাকা জিতে ক্যানসার আক্রান্ত শিল্পীকে দিলেন অভিনেতা
১১০ ইউএনও বদলির প্রস্তাব ইসিতে
আরো খবর ⇒
সর্বাধিক পঠিত
প্রার্থীতা ফিরে পেতে কুমিল্লার তিন জনের আপিল
দীর্ঘ ৩৪ বছর প্রবাস জীবন শেষে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন আবু হানিফ
কাল থেকে কুমিল্লায় বিকাশ-এর আয়োজনে তিন দিনের পেমেন্ট মেলা
৩৩৮ থানার ওসিকে বদলির তালিকা ইসিতে
এয়ার আহমেদ সেলিমের ব্যাংক ঋণ সাড়ে ৮ কোটি টাকা নগদ টাকা আছে ৯৬ লাখ
Follow Us
সম্পাদক ও প্রকাশক : মোহাম্মদ আবুল কাশেম হৃদয় (আবুল কাশেম হৃদয়)
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ১২২ অধ্যক্ষ আবদুর রউফ ভবন, কুমিল্লা টাউন হল গেইটের বিপরিতে, কান্দিরপাড়, কুমিল্লা ৩৫০০। বাংলাদেশ।
ফোন +৮৮ ০৮১ ৬৭১১৯, +৮৮০ ১৭১১ ১৫২ ৪৪৩, +৮৮ ০১৭১১ ৯৯৭৯৬৯, +৮৮ ০১৯৭৯ ১৫২৪৪৩, ই মেইল: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত, কুমিল্লার কাগজ ২০০৪ - ২০২২ | Developed By: i2soft