
‘কবিতা
হোক অধিকার আদায়ের শ্লোগাণ’ এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতীয় কবি কাজী
নজরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে জাতীয় কবিতা মঞ্চ কেন্দ্রীয়
কমিটির উদ্যোগে বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী ঢাকার সেগুন বাগিচা আন্তর্জাতিক
মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে ‘আন্তর্জাতিক নজরুল পয়েন্ট্রি ফেস্টিভ্যাল’ অনুষ্ঠিত
হয়।
লেখক ও কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য
রাখেন, মেজর জেনারেল সিদ্দিকুর রহমান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসিমুল গণি, এম
মিরাজ হোসেন, অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদ পাটোয়ারী, আসলাম সানী, কবি মুজাহিদ
পাটুয়ারী, নজরুল বাঙালি, এডভোকেট মোহাম্মদ উল্লা পলাশ, সিহাব রিফাত আলম,
শামসুল হক বাবু, সাইফুর রহমান বকুল, একরামুল হক দিপু, কবি আলিম, কবি সাইফ
সাদী, আনোয়ার হাছান খোকন ও সাংবাদিক আশিক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ,
ভারত, রাশিয়া ও নেপালের আন্তর্জাতিক নজরুল গবেষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা
অভিযোগ করে বলেন, জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় কবির জন্মবার্ষিকী উদযাপনে নানা
কর্মসূচি গ্রহণ করা হলেও নার্গিসের জন্মভূমি ও কুমিল্লার কবিতীর্থ দৌলতপুর
আজো চরমভাবে অবহেলিত রয়ে গেছে। এখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে কবির নামে হয়নি কোনো
প্রতিষ্ঠান। বক্তারা কবিতীর্থ দৌলতপুরে কবি নজরুল নামে "সাহিত্য
বিশ্ববিদ্যালয়" স্থাপন করার জোর সরকারের নিকট জোর দাবি জানান।
১৯২১ সালে
আলী আকবর খান আর কবি নজরুল কলকাতায় পাশাপাশি থাকতেন। আলী আকবর খান কবি
নজরুলকে তার গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দৌলতপুরে নিয়ে আসেন।
বেড়াতে এসে আলী আকবর খানের বোনের মেয়ে সৈয়দা আসার খানমের সঙ্গে প্রেমের
সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন কবি।
গভীর ভালোবাসায় আচ্ছন্ন হয়ে ইরানি এক সাদা
গুল্মপুষ্পের নামে কবি তার নাম দিলেন নার্গিস। কবি দৌলতপুরে বসেই ১৬০টি গান
এবং ১২০টি কবিতা রচনা করেন। দীর্ঘ দুই মাসের আবেগঘন প্রেমের পর নার্গিসের
সঙ্গে পরিণয়ের রাতেই এক অভিমানে কবি তাকে ত্যাগ করে চলে যান। তবে কবির
মানসলোকে নার্গিস ছিলেন দীর্ঘকাল। ১৯৩৭ সালে কলকাতার চিৎপুর থেকে কবি
নার্গিসকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন, ‘তোমার ওপর আমি কোনো জিঘাংসা পোষণ করি
না এ আমি সকল অন্তর দিয়ে বলছি। আমার অন্তর্যামী জানেন তোমার জন্য আমার
হৃদয়ে কি গভীর ক্ষত, কি অসীম বেদনা!
তুমি এই আগুনের পরশ মানিক না দিলে
আমি ‘অগ্নিবীণা’ বাজাতে পারতাম না। আমি ধুমকেতুর বিস্ময় নিয়ে উদিত হতে
পারতাম না। তোমার যে কল্যাণ রূপ আমি আমার কিশোর বয়সে প্রথম দেখেছিলাম, যে
রূপকে আমার জীবনের সর্বপ্রথম ভালোবাসার অঞ্জলি দিয়েছিলাম, সে রূপ আজো
স্বর্গের পারিজাত-মন্দিরের মতো চির অম্লান হয়েই আছে আমার বক্ষে।’