
নানা
সমস্যায় জর্জরিত হয়ে রুগ্মশিল্পে পরিণত হয়েছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের
বিসিক শিল্পনগরীটি। শিল্প কর্মকর্তার পদটি শূণ্য রয়েছে দীর্ঘ ১০ বছর ধরে।
নেই কোন পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা। যার ফলে বর্ষাকালেই সৃষ্টি হয়
জলাবদ্ধতা। সীমানা প্রাচীর না থাকায় কারখানাগুলোতে চুরি-ডাকাতি এখন নিত্য
দিনের ঘটনা। সন্ধ্যা হলেই বসে মাদকাসক্তদের আসর। ৮৫টি প্লটের মধ্যে ৩৭টি
রুগ্মশিল্প হিসেবে বন্ধ রয়েছে। মালিক সমিতির অভিযোগ, কর্মকর্তাদের অবহেলার
কারণে অর্থনীতির সম্ভাবনাময় এ শিল্পনগরীটি নিজেই রুগ্ম শিল্পে পরিণত হয়েছে।
বিসিক
শিল্পনগরী সূত্রে জানা গেছে, দেশের অর্থনীতির লাইফনাইন খ্যাত
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মহাসড়কের মধ্যবর্তী স্থানে ১৯৮৬ সালে তৎকালিন
সাবেক প্রধানমন্ত্রী কাজী জাফর আহম্মেদ ১১.০৩ একর জায়গার উপর দেশের বেকার
মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বিসিক শিল্পনগরীটি স্থাপন করেন। ৮৫টি
প্লট নিয়ে এ শিল্পনগরীটি গড়ে উঠে। কিন্তু দিনের পর দিনে উন্নতি না হয়ে
শিল্পনগরীটি অবনতি হয়েছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় এ নগরীতে চুরি-ডাকাতি
নিত্য দিনের ঘটনা। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে শিল্পনগরীর কর্মকর্তা পদটি শূন্য
রয়েছে। ৭টি পদের মধ্যে কম্পিউটার অপারেটর, পিয়ন, ঝাড়ুদারসহ ৪টি পদ শূণ্য।
ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন কুমিল্লা শিল্পনগরীর প্রশাসন কর্মকর্তা
মোঃ শামছুল আলম। তিনি এখানে অফিস কবে করেছেন তা নিজেও জানেন না।
সরেজমিন
নগরীটি পরিদর্শন করে দেখা যায়, শিল্প প্লটের বিভিন্ন সড়কগুলো যানবাহনগুলো
খানাখন্দকে ভরা। পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে জলাবদ্ধতা হয়
বলে অভিযোগ করেছেন হিসাব কর্মকর্তা এরশাদ আলম। তিনি বলেন, কর্মকর্তা পদটি
শূণ্য থাকার কারণে সব কাজ আমাকে একাই করতে হয়। ৭টি পদের মধ্যে ৪টি পদই
শূণ্য। শিল্পনগরীর কর্মকর্তাসহ সকল পদে লোকায়ান থাকলে সম্ভাবনাময় এ
শিল্পনগরীটি দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভুমিকা রাখতে পারবে। সীমানা প্রাচীর
না থাকায় চুরি-ডাকাতি এখন নিত্য দিনের ঘটনা। সন্ধ্যা হলেই বসে মাদকাসক্তদের
আড্ডাখানা।
বিসিক মালিক সমিতির সহ-সভাপতি নুর হোসেন বলেন, সীমানা
প্রাচীর না থাকায় এ শিল্পনগরীতে প্রতিদিন চুরি-ডাকাতি হচ্ছে। বর্ষা হলেই
পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতায় হাঁটু পরিমাণ জমে থাকে। এতে
করে ব্যাপক জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কর্মকর্তার সঙ্কটের কারণে প্রশাসনিক
কার্যক্রমের অচালবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে এ শিল্পনগরীতে একটি ওষুধ
কারখানা, রাইস মিল, বেকারী, এ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের কারখানা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মধ্যবর্তী স্থানটিতে দেশের বড়
শিল্প উদ্যোক্তারা এগিয়ে এলে এ শিল্পনগরীটি দেশের অর্থনীতিতে বড় ভুমিকা
রাখবে।
মুঠোফোনে ভারপ্রাপ্ত শিল্পনগরী কর্মকর্তা মোঃ শামছুল আলম বলেন,
আমার বয়স হয়ে গেছে। চাকরির মেয়াদ আছে আর এক বছর। শরীরে সায় না দেয়ায়
চৌদ্দগ্রামে যাওয়া হয় না।